ঢাকা, ০৩ আগস্ট- প্রয়াত হয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল নক্ষত্র অভিনেতা সালমান শাহ। না-ফেরার দেশে চলে যাওয়া এই বন্ধুকে নিয়ে স্মৃতি হাতড়িয়েছেন মৌসুমী। ৬ আগস্ট বন্ধু দিবস উপলক্ষে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো বন্ধুর প্রতি মৌসুমীর স্মৃতি। আমি আর সালমান দুজনই খুলনার একই স্কুলে নার্সারিতে পড়েছি। ওর বাবার চাকরির বদলির কারণে হঠাৎ করেই সালমান শাহর পরিবারের সবাই ঢাকায় চলে যায়। তারপর আর যোগাযোগ হয়নি আমার সঙ্গে। মধ্যে কেটে গেছে প্রায় এক যুগ। নতুন করে পরিচয় হয় প্রথম ছবি কেয়ামত থেকে কেয়ামত-এ অভিনয় করতে গিয়ে। তখনই আসলে আমাদের বন্ধুত্ব শুরু হয়। তারপর আমরা একসঙ্গে জুটি বেঁধে মাত্র চারটি ছবিতে অভিনয় করেছি। ছবির সংখ্যা কম, কিন্তু আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কে কিন্তু কোনো কমতি ছিল না। সালমান সম্পর্কে প্রথম অনুভূতি হলো, সালমানের মনটা অনেক বড় ছিল। শুধু বন্ধুদের জন্যই নয়, আশপাশের মানুষদের প্রতিও ওর কেয়ারিং ছিল। বন্ধুদের কারও গোমড়া মুখ দেখতে পারত না ও। কারও এমন অবস্থা হলে মুখে হাসি ফুটিয়েই ছাড়ত। এ কারণেই আমাদের বন্ধুত্বটা কখনোই নষ্ট হয়নি। কিন্তু অন্যের মুখে হাসি ফোটালেও নিজে প্রচণ্ড অভিমানী ছিল সালমান শাহ। আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব যেমন ছিল, ঝগড়া-অভিমানটাও বেশি হতো। এটাই সম্ভবত বন্ধুত্ব গাঢ় হওয়ার কারণ। মাঝেমধ্যে অভিমান করে কথা বন্ধ করলে ও ভেতরে-ভেতরে কষ্ট পেত, তা বুঝতাম। এই সময়টাতে হুট করে রাতে আমার বাসার পাশ দিয়ে গাড়ির হর্ন বাজিয়ে চলে যেত। হর্ন শুনেই বুঝতাম, সালমান এসেছে। চারটা ছবির একটার শুটিংয়ের ঘটনা বলি। অন্তরে অন্তরে ছবির শুটিং করতে গিয়ে ও অভিমান করে কথা বন্ধ করে দিল। শুটিং শেষ করে সেন্ট মার্টিন থেকে আমরা ফিরছি। টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনের মধ্যে গভীর সমুদ্রে ঝড়ের কবলে পড়লাম। মনে হলো, কিছুক্ষণ পরই আমাদের ট্রলারটা ডুবে যাবে। সবাই মারা যাব। সালমান আমার সামনে এসে আমার হাতে হাত রেখে সব অভিমান ভুলে গিয়ে মাফ চেয়ে নিল। বলল, চলো কথা বলি, কিছুক্ষণ পরে তো মারাই যাব। সালমানকে ভাবলে আজও মনে পড়ে সেই গভীর সমুদ্রে বন্ধুর প্রতি গভীর ভালোবাসার কথা! এটা কখনোই ভুলব না।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2u6Huhy
August 03, 2017 at 07:18PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top