ইউনূসের দূর্নীতি তদন্ত বন্ধে হিলারির চাপের তথ্য মার্কিন সিনেটে জমা

সুরমা টাইমস ডেস্ক: গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দূর্নীতি তদন্ত বন্ধ করতে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারের ওপর যে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন সে সংক্রান্ত তথ্য মার্কিন সিনেটে জমা দিয়েছে সরকার।

মার্কিন কংগ্রেসের অনুরোধে বাংলাদেশ সরকারের পাঠানো এ সংক্রান্ত দুটি নথি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে বলে জানিয়েছে দেশটির পত্রিকা ডেইলি কলার। পত্রিকাটির কাছে এ নথি পৌঁছেছে বলে জানায় তারা। এতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি তার ধনকুবের বন্ধু ও তার ফাউন্ডেশনের দাতা নোবেল জয়ী ইউনূসকে বাঁচাতে শেখ হাসিনা সরকারকে প্রবল চাপ সৃষ্টি করেন।

ইউনূসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের তদন্তে হিলারির হস্তক্ষেপের রহস্য উদ্ঘাটনে সিনেট কমিটি কাজ করছে। নথিতে দেখা গেছে, ইউনূসকে রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মার্কিন দূতাবাস এবং বিশ্বব্যাংককে ব্যবহার করেন হিলারি। ইউনূসের বিরুদ্ধে তার নিজের গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অর্থ অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে।

এ অভিযোগে তাকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকেও পদচ্যুত করা হয়। এ ব্যাপারে চলতি বছরের ১১ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চিত করেন, ২০১১ সালের মার্চে হিলারি ক্লিনটন তার অফিসে ফোন করে ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহাল করার দাবি জানান।

ডেইলি কলারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনূসের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ডলার। ইউনূস তার কোম্পানিগুলো থেকে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে ৩ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছেন। এর বিনিময়ে তিনি হিলারির মাধ্যমে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো শক্তিশালী জায়গা থেকে বাংলাদেশ সরকারকে হুমকি দিয়েছেন। ২০১০ সালে ইউনূসের বিরুদ্ধে অর্থ নয়ছয় করার কয়েকটি অভিযোগ ওঠে।

এর মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ডলার নিজের পরিচয় ব্যবহার করে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে সরকারের দুর্নীতি তদন্ত বন্ধ করতে শেখ হাসিনাকে বারবার হুমকি দিয়েছেন হিলারি। তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এটি বন্ধ না হলে পদ্মা সেতু তৈরির জন্য বিশ্বব্যাংকের অনুমোদিত ১২০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেবেন তিনি।’ বিশ্বব্যাংকের বৃহত্তম দাতা দেশ হল যুক্তরাষ্ট্র।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছরের ১ জুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে একটি চিঠি দিয়ে হিলারি ও ইউনূসের মধ্যে যোগসাজশের বিস্তারিত উল্লেখ করেন সিনেটের বিচার বিভাগ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান চাক গ্রাসলি।

আইওয়া রাজ্যের রিপাবলিকান দলের এ সিনেটর চিঠিতে বলেন, হিলারি শুধু ব্যক্তিগতভাবে নয়, পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে লাগিয়ে এ চাপ দেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অডিট করার হুমকি দেন। ওই দফতরের কর্মকর্তারা জয়কে বারবার চাপ দিতে থাকেন।

তারা বলেন, ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধে জয় তার মাকে রাজি না করালে যুক্তরাষ্ট্রে তার (জয়ের) বিরুদ্ধেও অডিট করা হবে।

চিঠিতে গ্রাসলি বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আরকানসাসের গভর্নর থাকাকালেই হিলারির সঙ্গে ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারপর থেকে কয়েক দশক ধরে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের প্রচারক ছিলেন ইউনূস।

তাকে ফাউন্ডেশনের অনেক অনুষ্ঠানে প্রচারে অংশ নিতে দেখা গেছে। হিলারির স্বামী বিল ক্লিনটন ব্যক্তিগতভাবে নোবেল কমিটির কাছে ইউনূসের পক্ষে লবিং করেন এবং ২০০৬ সালে ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2w9OOWJ

August 03, 2017 at 08:33PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top