সুরমা টাইমস ডেস্ক:: সারা দেশ জুড়ে যা গরম পরেছে তাতে ঘাম হবেই। আর ঘাম হলেই বিপদ! কারণ একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে, অন্যের ঘামের থেকেও মারাত্মক সব রোগ হতে পারে। তাই বাসা থেকে বের হলে আরও বেশি সতর্ক হয়ে বের হবেন।
এই গরমে খেলার মাঠে, বাসে, গাড়িতে অথবা অফিসে খেয়াল রাখবেন কারও ঘাম যেন আপনার শরীরে না লাগে, আর যদি ভুল করে লেগেও যায়। তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলবেন। আরেকটি বিষয়, পাবলিক ট্রান্সপোর্টে কারও হাতে ধরা হ্যান্ডেল সঙ্গে সঙ্গে ধরবেন না। এমনটা করলেও কিন্তু সমান ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এবার আসুন জেনে নেয়া যাক, অন্যের ঘাম লাগলে কি কি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে-
১. ঘাম থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে:
বেশ কিছু সংক্রমণ ঘামের মাধ্যমে এক জনের শরীর থেকে আরেক জনের শরীরে আক্রমণ বাঁধতে পারে। আর এক্ষেত্রে যার শরীরে গিয়ে জীবাণু ঘর বানায়, তিনি এ সম্পর্কে জেনেও উঠতেও পারেন না, যতক্ষণ না সেই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কারণ আপনার ঠিক পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার শরীরে যে কোনও জীবাণু বাসা বেঁধে থাকতে পারে, তা তো খালি চোখে দেখে বোঝা সম্ভব নয়। তাই সাবধান থাকুন।
২. এম আর এস এ:
মেথিসিলিন রেজিসটেন্ট স্টেফিলোক্কাস অ্যারিয়াস বা এম আর এস এ নামক এই সংক্রমণটি মারাত্মক ভয়ঙ্কর। একবার কেউ যদি এই রোগে আক্রান্ত হয়, সহজে সেরে ওঠা একেবারেই সম্ভব হয় না। আর সবথেকে ভয়ের বিষয় হল ঘামের মাধ্যমে এই ইনফেকশনটি খুব অল্প সময়েই এক জনের শরীর থেকে আরেক জনের দেহে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং একবার যদি শরীরে এই জীবাণুটি প্রবেশ করে যায়, তাহলে একে একে ইউরিনারি ট্রাক্ট, ফুসফুস এমনকী রক্তেও বিষ ছড়িয়ে যেতে পারে। আর কোনও সময় রক্তে যদি এই সংক্রমণ মিশে যায়, তাহলে জীবন হানির আশঙ্কা থাকে।
৩. হেপাটাইটিস বি ভাইরাস:
এত দিন মনে করা হত ঘাম এবং লালার মাধ্যমেই এই ভাইরাসের প্রসার ঘটে। কিন্তু সম্প্রতি ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে ঘামের থেকেও হেপাটাইটিস বি ভাইরাস এক জনের শরীর থেকে আরেক জনের শরীরে গিয়ে বাসা বাঁধতে পারে। আর একবার যদি এই ভইরাস শরীরে এসে ঘর বানায়, তাহলে ধুম জর, ক্লান্তি, ক্ষিদে কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা, বমি হওয়া, পেটে যন্ত্রণা, কালো প্রস্রাব হওয়া এবং পেট খারাপ হওয়ার মতো লক্ষণগুলি প্রকাশ পেতে শুরু করে।
৪. ভাইরাল ইনফেকশন:
সরাসরি ঘামের সঙ্গে এই ধরনের সংক্রমণের যোগ না থাকলেও ভাইরাল ফিবারে আক্রান্ত রোগী যখন কাশ দেন বা হাঁচি দেন, তখন প্রচুর পরিমাণে ভাইরাস তার ত্বকের উপরে ছড়িয়ে পরে, যা পরবর্তী সময় ঘামের সঙ্গে মিশে গিয়ে খুব সহজেই অন্য কাউকে অসুস্থ করে তুলতে পারে।
৫. ইমপেটিগো:
এটি এক ধরনের ত্বকের সংক্রমণ, যা মারাত্বক দ্রুত গতিতে এক জনের শরীর থেকে আরেক জনের শরীরে গিয়ে প্রবেশ করে। আর এক্ষেত্রে ঘাম এই জীবাণুর বাহকের কাজটা করে থাকে। প্রসঙ্গত, স্টেফিলোকক্কাস অ্যারিয়াস নামে একটি জীবাণুর কারণে এই চর্মরোগটি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীর শরীরে লাল লাল ছোপ দেখা দেয়। সেই সঙ্গে ফোঁড়ার মতো ফুসকুড়িও হতে পারে।
৬. হার্পিস:
এই চর্মরোগটির সঙ্গে তো সবাই পরিচিত। সবথেকে ভয়ের বিষয় হল হার্পিস ঘামের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পরতে পারে। তাই এমন রোগীদের একটু সচেতন থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, তার কারণে যাতে অন্য কেউ এমন রোগে আক্রান্ত না হয়ে পারেন। এক্ষেত্রে হার্পিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যতটা পারবেন ভিড় জায়গায় যাবেন না। সেই সঙ্গে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এড়িয়ে চলারও চেষ্টা করবেন।
৭. হেপাটাইটিস এ, সি এবং এইডস:
অনেকে মনে করেন ঘাম এবং হাঁচির সঙ্গে এই তিন ধরনের ভাইরাসের ছড়িয়ে পরার সরাসরি যোগ রয়েছে। যদিও এই যুক্তির সপক্ষে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।– সুত্রঃ টাইম্স অফ ইন্ডিয়া।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2v674jS
August 04, 2017 at 10:59PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.