মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রায় দুই বছর পর পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা হতে যাচ্ছে। আগষ্ট মাসের পর পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা হতে পারে। এমটাই জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মীরা। নতুন নেতৃত্বে থাকতে পারে চমক। পূর্নাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা পদ পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ দুটিভাগে বিভক্ত রয়েছে। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক,সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলয়ের একটি গ্রুপ ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলয়ের আরেকটি গ্রুপ রয়েছে।
সদ্য ঘোষিত বিশ্বনাথ ছাত্রলীগের কমিটিতে যুক্তরাজ্য আ.লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বলয়ের কয়েকজন নেতা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পান। ফলে উপজেলায় আনোয়ারুজ্জামান বলয়ের নেতাকর্মীরা বর্তমানে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। এবার উপজেলা আ.লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী অনুসারী নেতারা কমিটিতে স্থান পেতে তৎপর রয়েছেন। এতে তার অনুসারী নেতাকর্মীরা কমিটিতে আসতে প্রতিনিয়ত আয়োরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে লন্ডনে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। তবে খুব শিগগিরই আনোয়ারুজ্জামান দেশে ফিরছেন বলে তার অনুসারী কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানাগেছে, ২০১৫ সালের ৮ জুন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনের কণ্ঠভোটে পংকি খানকে সভাপতি ও পুনারায় বাবুল আখতারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। তবে সম্প্রতি ওমরা হজ্ব পালনকালে সৌদিআরবে বাবুল আখতার মৃত্যুবরণ করেন। বাবুল আখতারের মারা যাওয়ার পর দলের সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীর সহযোগিতায় দলকে সামাল দিয়ে যাচ্ছেন পংকি খান। তারা দু’জনই শফিক চৌধুরী গ্রুপের নেতা। কিন্তু এই কণ্ঠভোটের প্রতিবাদ করেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গ্রুপের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, গোপন ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করতে হবে।
আর ওই দ্বন্ধের দুই বছর ধরে এভাবেই ঝুলে রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি। এছাড়া একই দ্বন্ধে আটকে আছে উপজেলা যুবলীগের কমিটিও। ওই দ্বন্ধের কারণে স্থানীয়ভাবে নেতৃত্ব সংকটে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। গত ৩১ জুলাই জেলা ছাত্রলীগ বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের একটি কমিটি ঘোষণা করা হলেও বির্তক চলছে। ওই কমিটির বিরুদ্ধে আরেকটি বিদ্রোহী কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। তাই নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাশাপাশি গ্রুপিংয়ের বাইরে থাকা অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
চলিত বছরের সেপ্টেবর মাসের প্রথম দিকে উপজেলা আ.লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা হতে পারে। ইতিমধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনার জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। ওই কমিটির ৬৭ সদস্যের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক পদে শফিকুর চৌধুরীর অনুসারীরা স্থান পাচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। পুরাতন-নতুনদের নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হচ্ছে বলে দলের একাধিক নেতা জানান। তবে উপজেলা আ.লীগের কমিটিতে স্থান পেতে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বলয়ের নেতারা তৎপর রয়েছেন।
উপজেলা আ.লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি অনুমোধন হতে যাচ্ছে এমন খবরে নেতাকর্মীর মধ্যে প্রাণচঞ্চলতা ফিরে এসেছেন। কমিটিতে স্থান পেতে দলীয় নেতাকর্মীরা দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে নতুন কিছু মুখ আসতে পারে বলে দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন। বিশ্বনাথে আ.লীগের কমিটিতে আনোয়ারুজ্জামান বলয়ের কোনো নেতা স্থান না পাওয়ার জন্য শফিকুর রহমান চৌধুরীর বলয়ের নেতাকর্মীরা তৎপর রয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামান বলয়ের নেতারা দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করেন আ.লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি তাদের মূল্যায়ন করা হবে। তবে শেষ পর্যন্ত কারা কমিটিতে স্থান পান কেবল দেখার বিষয়।
এব্যাপারে আনোয়ারুজ্জামান অনুসারী উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ বলেন, দলের নিবেদিত প্রাণ যারা তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। দলে বির্তক কোনো নেতা যেন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান না পাওয়া সেজন্য তিনি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব পংকি খান বলেন, অন্যান্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বিশ্বনাথ আ.লীগ অনেক শক্তিশালী। উপজেলা আ.লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন হলেও দল আরও চাঙ্গা হবে। দলের হাইকমান্ড ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতাদের দিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন বলে আমাদের ধারনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা আ.লীগের সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং জেলা আ.লীগের হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হলে নতুন কমিটি অগ্রনী ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন। আগষ্টের পর সিলেট জেলার কয়েকটি উপজেলার আ.লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষনা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2vpBy2b
August 11, 2017 at 06:15PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন