কলকাতা, ২৪ আগষ্ট- কলকাতার ঐতিহ্যবাহী লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে নারী বক্তারা বলেছেন, শত বাধা অতিক্রম করে এখন দক্ষিণ এশীয় মুসলিম নারীরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই পথ বিপৎসংকুল হওয়া সত্ত্বেও পিছপা হচ্ছেন না নারীরা। উঠছেন অগ্রগতির সোপানে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজ মিলনায়তনে এক সেমিনারে এ কথা বলেছেন নারী সমাজের বিশিষ্টজনেরা। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যাপক শিউলি সরকার। এ সেমিনারে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং ঢাকার সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন মালেকা বেগম। সেমিনারের বিষয় ছিল, পর্দা ভেঙে দক্ষিণ এশীয় মুসলিম নারীর অগ্রযাত্রা। সেমিনারের আয়োজন করে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের উইমেন্স স্টাডিজ সেন্টার এবং ডায়মন্ড হারবার উইমেন্স ইউনিভার্সিটির ইতিহাস বিভাগ। চার পর্বে আয়োজিত এই সেমিনারের বিভিন্ন পর্বে আলোচনায় অংশ নেন বাসবী চক্রবর্তী, ইন্দ্রানী চৌধুরী দত্ত, অনিন্দিতা ঘোষাল, অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাফুরা রাজ্জাক, শাহীন সুলতানা, পর্ণা ঘোষ, অধ্যাপক উত্তরা চক্রবর্তী, অধ্যাপক সংযুক্তা দাস, মৈত্রেয়ী বর্ধন রায় এবং বাংলাদেশের দুই অতিথি সেলিনা হোসেন ও মালেকা বেগম। প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন।প্রদীপ জ্বালিয়ে সেমিনারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সেলিনা হোসেন। এরপর মালেকা বেগমসহ উপস্থিত অতিথিরা একযোগে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। এদিন নহি সামান্যা নারী নামের একটি সম্পাদিত গ্রন্থের মোড়কও উন্মোচন করা হয়। এই বাংলা বইটি সম্পাদনা করেছেন মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায় ও অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেমিনারে সেলিনা হোসেন বলেন, মৌলবাদী চেতনার উত্থানের পরও অসাম্প্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আজও জেগে আছে। সরকার কঠোরভাবে এ দেশে জঙ্গি দমন করছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। তিনি বলেন, এ দেশে মৌলবাদী দল কখনো ক্ষমতায় যেতে পারেনি। সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে তাদের কখনো নির্বাচিত করেনি। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো বাঙালি জাতিসত্তার আলোকে উদ্যাপন করে আসছে। তাদের যেমন ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবাহী একুশে ফেব্রুয়ারি আছে, আছে পয়লা বৈশাখ নববর্ষ, ঋতুভিত্তিক শরৎ, বসন্ত উৎসব। আবার পবিত্র ঈদ, পূজা, বৈশাখী পূর্ণিমা, ক্রিসমাসের মতো ধর্মীয় উৎসব। আর এসব উৎসবে মানুষ ধর্মকে ঊর্ধ্বে রেখে যোগ দেন। এটাই এখন বাংলাদেশের সংস্কৃতি। মালেকা বেগম বলেন, নারীকে পর্দার মধ্যে আবদ্ধ রাখার জন্য মুসলিম ঐতিহ্যের দোহাই দিয়ে মুসলিম লীগ সরকার অপচেষ্টা শুরু করে। এই প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশের নারীরা পর্দার অন্তরাল থেকে বের হয়ে সাংস্কৃতিক চর্চা শুরু করেন। বেরিয়ে আসেন পর্দার অন্তরাল থেকে। বাধা পেরিয়ে অগ্রগতির সোপানে পা রাখেন। আজ সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধাকে তুচ্ছ করে নারীশিক্ষার আলোকবর্তিকা তুলে ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা পর্দার অন্তরাল থেকে বেরিয়ে। কলেজ অধ্যাপক শিউলি সরকার বলেন, বহুদিন নারীরা পর্দার আড়ালে ছিলেন। এখন তাঁরা সামনের দিকে এগোচ্ছেন। এ পথ বন্ধুর, তবুও নারীদের অগ্রগতির যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। নারীদের এই চলার পথে অনেক বাধা আছে। তবুও সেই বাধা অতিক্রম করে চলছেন নারীরা। আর/১০:১৪/২৪ আগষ্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2w85HBv
August 25, 2017 at 05:49AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন