বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্প যাদের পায়ে ভর করে দাঁড়িয়েছে, নায়করাজ রাজ্জাক তাঁদেরই একজন। বাংলা চলচ্চিত্রের আলোচিত ও সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের এই শক্তিমান অভিনেতা গতকাল সোমবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার পর শোকাকুল হয়ে ওঠে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন। ওর সঙ্গে অনেক দিনের স্মৃতি সৈয়দ হাসান ইমাম ওর সঙ্গে আমার স্মৃতি অনেক দিনের। যখন সে প্রথম ঢাকায় এল, তখন ইকবাল ফিল্মসে ও সহকারী পরিচালক হিসেবে জয়েন করল। জব্বার সাহেবের (আবদুল জব্বার খান) ভাইপো খোকার সঙ্গে রাজ্জাকের ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল। আমি সে সময় ইকবাল ফিল্মসের উর্দু ছবি পরওয়ানায় অভিনয় করছিলাম। আমি নায়ক, নাসিমা খান নায়িকা। কামাল আহমেদ ছিলেন পরিচালক। তখন থেকেই আমাদের সম্পর্কের শুরু। এককথায় কি আর সে সব বলা যাবে? তাঁর অহমিকা ছিল না সোহেল রানা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আজ যে অবস্থানে এসেছে, তাতে তাঁর অনেক বড় ভূমিকা আছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু হিসাব করলে আরও কিছুদিন হয়তো তিনি আমাদের মাঝে থাকতে পারতেন। ব্যক্তি হিসেবে তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। বর্তমানে যাঁরা জনপ্রিয় তাঁদের মধ্যে যে অহমিকা দেখা যায়, তা রাজ্জাক সাহেবের মধ্যে ছিল না। আমার থেকে ৮ থেকে ১০ বছর আগে সিনেমায় এসেছেন। অভিনয় নিয়ে আমাদের প্রতিযোগিতা চলত। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল দুর্দান্ত। জনগণের নায়ক ছিলেন মৌসুমী তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা। মুক্তিযুদ্ধের আগে বাংলা ছবিকে এগিয়ে নিতে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তাতে সামনের সারিতে থেকে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের নায়কদের নায়ক ছিলেন, জনগণের নায়ক ছিলেন। আমরা যাঁরা অভিনয় করে এ পর্যায়ে এসেছি, তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে এসেছি। আগামী প্রজন্মে যারা সিনেমাতে আসবেন, তাঁর অভাব অনুভব করবেন। তিনি আমাদের মধ্যেই বিচরণ করছেন শাবনূর তিনি আমাকে প্রচণ্ড আদর করতেন। তুই করে বলতেন। তাঁর যেকোনো আয়োজনে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। ৭৫তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানের সময় ভেবেছিলেন, আমি দেশে নেই। আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে তাঁকে চমকে দিয়েছিলাম। রাজ্জাক সাহেব মারা যাননি। তিনি আমাদের মধ্যেই বিচরণ করছেন। দেখা হলে আমাকে পরামর্শ দিতেন। তাঁর পরামর্শ আমি সারা জীবন মেনে চলব। বাংলা চলচ্চিত্রের অস্থিরতা আরও ঘনীভূত হলো ফেরদৌস তিনি চলচ্চিত্রের রাজা ছিলেননায়করাজ রাজ্জাক। কিছুদিন আগে ইউনাইটেড হাসপাতালে এসেছিলাম। এসে দেখি, তিনি এখানে। তাঁর সঙ্গে কথা হলো। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে দেখা হলো। আজ খবর শুনে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। আগের মতোই গুজব ভেবেছি। বর্তমান সময়ে চলছে চলচ্চিত্র ঘিরে অস্থিরতা চলছে। তাঁর এই মৃত্যু তা যেন আরও ঘনীভূত করল। এ মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না অপু বিশ্বাস কোটি টাকার কাবিন দিয়ে আমি অপু বিশ্বাস হয়েছি। সে ছবিতে অভিনয়ের ব্যাপারে রাজ্জাক আংকেলের অবদান ছিল। আমার মা তাঁর অন্ধ ভক্ত। মা যখন জানতে পারেন, আংকেল এই ছবিতে অভিনয় করছেন, তখন বাবার অমতে গিয়েই আমাকে অভিনয় করতে অনুমতি দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়ত, সন্তান আব্রামের কথা যখন প্রকাশ করি, তখন আমার সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। রাজ্জাক আংকেল ফোন করে বলেছিলেন, চিন্তা করবি না। আমি এখনো বেঁচে আছি। আমার বাবা মারা গেছেন। শ্বশুর আছেন। রাজ্জাক আংকেলও বাবার মতোই ছিলেন। আমি এ মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। একজন অভিভাবককে হারালাম মিশা সওদাগর আমাদের চলচ্চিত্রে রাজ্জাক নিজেই একটা চলচ্চিত্র। তাঁর নামের মধ্যে যে ভার, সেটা বহন করা কঠিন একটা কাজ। তাঁকে নিয়ে মন্তব্য করার সাহস আমার কখনো হয়নি। তিনি নিজেই একজন ইনস্টিটিউট। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন অভিভাবককে হারালাম। এ ক্ষতি কখনো পূরণ হবে কি না জানি না। এমএ/ ০৬:৪২/ ২২ আগস্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2xmLebE
August 22, 2017 at 12:42PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন