সুরমা টাইমস ডেস্ক:: সিলেটের কানাইঘাট রাজাগঞ্জ ইউপির লালারচক পশ্চিম গ্রামের দুবাই প্রবাসী ফখরুল আমিনের স্ত্রী এক সন্তানের জননী ফাহিমা বেগম (২৭) কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার ফাহিমা বেগম রাত সাড়ে ৭টার দিকে কীটনাশক পান করলে তাকে আশংকা জনক অবস্থায় সিওমেক হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থা ফাহিমা বেগম বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে মারা যান। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
নিহতের লাশের ময়না তদন্তের পর এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানায় ফাহিমা বেগমের ভাই জসীম উদ্দিন বাদী হয়ে বুধবার একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। কীটনাশক পান করে ফাহিমা বেগমের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
নিহতের আত্মীয় স্বজনরা জানিয়েছে, ২০০৯ সালে লালারচক গ্রামের দুবাই প্রবাসী ফখরুল আমিনের সাথে ফাহিমা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের দুই মাস পর স্বামী ফখরুল আমিন দুবাইতে চলে যান। এরপর আর সে বাড়ীতে আসেনি। ফাহিমা বেগম ও তার স্বজনরা জানতে পারেন সকলের অগোচরে স্বামী ফখরুল ইসলাম দুবাইতে এক বাংলাদেশী মেয়েকে বিয়ে করে সেখানে ঘর সংসার করছেন।
বিয়ের পর থেকে ফাহিমা বেগমের কোন খোঁজ খবর স্বামী নেননি। ৮ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে ফাহিমা বেগমের। এমতাবস্থায় স্বামীর সংসারে থাকার পর তার উপর দেবর আল-আমিনের কু-নজর পড়ে। দেবর আল-আমিন বিভিন্ন সময়ে ফাহিমা বেগমকে কু-প্রস্তাব দিত বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন।
যৌতুকের জন্য ফাহিমা বেগমের শ^াশুড়ী সালমা খাতুন ও ননড়ী সুমি বেগম কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় ২০১০ সালে ফাহিমা বেগম বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় একটি অভিযোগও দিয়েছিলেন। দেবর আল-আমিনের কু-প্রস্তাবে অতিষ্ট হয়ে অনুমান ৩ মাস পূর্বে ফাহিমা বেগম তার কন্যা সন্তান রুজি বেগমকে নিয়ে নিজ পিত্রালয় ফতেহগঞ্জ গ্রামে চলে আসেন।
একপর্যায়ে ফাহিমা বেগমের কাছ থেকে দেবর আল-আমিন ও শ^াশুড়ী সালমা খাতুন তার মেয়ে রুজি বেগমকে জোরপূর্বক ভাবে নিয়ে গেলে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন ফাহিমা বেগম। গত রবিবার ফাহিমা বেগম তার মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলার জন্য বার বার মোবাইল ফোন করার পর শ^শুড় বাড়ীর লোকজন মেয়ের সাথে কোন ধরনের কথা বলতে না দেওয়ায় ক্ষোভ ও অপমানে গত সোমবার সবার অগোচরে পিত্রালয়ে কীটনাশক পান করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মারা যান ফাহিমা বেগম।
ফাহিমা বেগমের ভাই জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, তার বোনকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে তার স্বামী প্রবাসী ফখরুল আমিন, দেবর আল-আমিন, তাজুল-আমিন, শাশুড়ী সালমা খাতুন ও ননড়ি সুমি বেগম। তার বোনের বিয়ে হওয়ার পর থেকে বোন জামাই ফখরুল আমিন কোন খোঁজ খবর না নিয়ে দুবাইতে বিয়ে করে সেখানে সংসার করতেছে।
অপরদিকে, স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার দেবর আল-আমিন আমার বোন ফাহিমা বেগমকে নানা ভাবে কু-প্রস্তাব দিত, তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করত। তার বোনকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, এ ঘটনায় তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) মো: নুনু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফাহিমা বেগম তার পিত্রালয়ে গত সোমবার কীটনাশক পান করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মারা গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। মামলার তদন্তকালে তার আত্মহত্যার প্ররোচনার দিকে স্বামীর বাড়ীর লোকজন জড়িত থাকলে তদন্ত পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2wI734K
September 21, 2017 at 11:08AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন