সুরমা টাইমস ডেস্ক: মাতৃ ও শক্তির প্রতিক দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মাধ্যমে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে সিলেটসহ সারাদশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
মঙ্গলবার (১৯শে সেপ্টেম্বর) ভোরে মণ্ডপে-মণ্ডপে চণ্ডীপাঠ, মঙ্গলঘট স্থাপন, ঢাক-কাঁসা ও শঙ্খ বাজিয়ে দেবীকে আহ্বান জানালেন ভক্তরা।
সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী- মহালয়ার প্রাক সন্ধ্যায় অর্থাৎ শুক্লপক্ষের চতুর্দশীতে কাত্যায়নী মুনির কন্যা রূপে মহিষাসুর বধের জন্য দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে।
মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হয় দেবী পক্ষের। এর আগের পক্ষ হল পিতৃপক্ষ। এই পক্ষে ভক্তরা তাদের পূর্বপূরুষের আত্মার প্রীতির জন্য অন্ন-জল নিবেদন করে থাকেন। শাস্ত্রে একে বলা হয় তর্পণ।
“মহালয়ার এ দিনে দেবীকে মর্ত্যে আহ্বান করে আমরা তার শরণাগত হই, শক্তির আরাধনায় আমরা সব বিপদ কাটিয়ে উঠে সত্য ও সুন্দরের পূজা করি।”
তিথি অনুযায়ী- ২৬শে সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীতে দুর্গার বোধনের মাধ্যমে শুরু হবে মূল পূজা। ৩০ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বির্সজনের মধ্যে দিয়ে দুর্গোৎসব শেষ হবে।
এবার সারা দেশে ৩০ হাজার ৭৭টি মণ্ডপে পূজা হবে, যা গতবারের চেয়ে ৭৭৭টি বেশি। গত বছর ২৯ হাজার ৩০০টি মণ্ডপে পূজা হয়েছিল।
দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুরের ধারাবাহিকতায় কদিন আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন- পূজায় তারা জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করছেন।
পরে দুর্গোৎসবের আইনশৃঙ্খলা প্রস্তুতি নিয়ে এক সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবারের দুর্গাপূজায় রাত ৮টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের সময় বেঁধে দেন। একইসঙ্গে মণ্ডপ ঘিরে বা সড়কে মেলা বসানো নিষিদ্ধ করেন।
এ সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান- দেশজুড়ে পূজা মণ্ডপগুলোতে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে এক লাখ ৬৮ হাজার আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এবার বিজয়া দশমীর দিন ও আশুরা মিলে যাওয়ায় হিন্দু নেতা ও শিয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের একসঙ্গে বিসর্জন যাত্রা ও তাজিয়া মিছিলের সময় ও পথ ঠিক করতে বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ বিষয়ে জাতীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল জানান- “পূজায় নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসনে একাধিক বৈঠক করেছি। তারা সবাই আমাদের আশ্বাস দিচ্ছেন যে, পূজায় কঠোর নিরাপত্তা তারা দেবেন।
“এছাড়া প্রতি বছরই তো কত শঙ্কা থাকে। আমরা সব শঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে প্রতি বছর ধুমধাম করে পূজা উদযাপন করব।”
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতেও প্রার্থনা করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বরীরা। ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায় বলেন, “রোহিঙ্গাদের জন্যও প্রার্থনা করব আমরা। আমরা আর্তি জানাব, তারা যেন নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে, তারা যেন তাদের নাগরিকত্ব ফিরে পায়।”
আগামী শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা দুর্গাপূজার সার্বিক পরিস্থিতি, শারদোৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান তিনি।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2xkg9bA
September 19, 2017 at 11:42PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন