না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশ্বনাথের জনপ্রিয় ইমাম আব্দুস সালাম

IMG_20170630_011555মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ :: না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশ্বনাথ উপজেলার সুড়ির খাল জামে মসজিদের ইমাম জনপ্রিয় মাওলানা আব্দুস (৪৫)।

মঙ্গলবার (১২সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি….. রাজিউন)। তিনি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দক্ষিণ চক্রবানী গ্রামের মৃত মুহাম্মদ সাজ্জাদ আলীর পুত্র। মাওলানা আবদুস সালাম দীর্ঘদিন যাবৎ ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগে ভোগছিলেন।

মাওলানা আব্দুস সালাম তরুণ বয়সে আজ থেকে দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পূর্বে বিশ্বনাথে আসেন লেখাপড়া করার উদ্দেশ্যে। একসময় লেখাপড়া শেষ করে প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথকেই তিনি তার কর্মক্ষেত্রের জন্য বেচে নেন । শুরুতেই স্থানীয় ওমর ফারুক (রাঃ) একাডেমীতে কিছুদিন শিক্ষকতা করে ইমাম হিসেবে যোগদেন স্থানীয় সুড়িরখাল জামে মসজিদে। একনাগাড়ে দীর্ঘ প্রায় ১৯ বছর ধরে তিনি উক্ত মসজিদে ইমামতি করে আসছিলেন। এর পাশাপাশি বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের পার্শ্ববর্তী বড় কারিকোনার মসজিদে গত ২২ বছর পবিত্র রমজান মাসে মাসব্যাপী কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রে শুরুতে সহকারী ক্বারী ও পরবর্তীতে প্রধান ক্বারী হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বিশ্বনাথে ‘সালাম হুজুর’ হিসেবে ব্যাপক পরিচিত এই ইমাম সাহেবের অমায়িক ব্যবহারে সবাই ছিল তারই গুনমুগ্ধ । গত রমজান মাসে সুড়িরখাল মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে হঠাৎ করে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুড়িরখাল গ্রামবাসী তখন তাকে জরুরী ভিত্তিতে সিলেট শহরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করেন । উচ্চ ডায়াবেটিকস ও কিডনীতে জঠিল সমস্যার কারণে দ্রুত তার পায়ে দুটি অপারেশন করা হয়। সুড়িরখাল গ্রামবাসীর সাথে আপনজনের মত দীর্ঘদিন ধরে থাকায় গ্রামবাসীও জানতেন তার আর্থিক সীমাবদ্ধতার কথা। আর তাই সুড়িরখাল গ্রামবাসী ইমাম সাহেবের দিকে না থাকিয়ে মহৎ হৃদয়ের পরিচয় দিয়ে তারা নিজেরা প্রায় লক্ষাধিক টাকা দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। একপর্যায়ে তিনি অসহায় হয়ে পড়লে ‘বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব’র পক্ষ থেকে প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম জুবায়ের মানবিক আবেদন জানিয়ে সোসাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। যা ‘বিশ্বনাথে বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে মাওলানা আব্দুস সালামের চিকিৎসায় এগিয়ে আসেন তার শুভাকাংখী বিভিন্ন ব্যক্তি ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সব মিলিয়ে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ৫ লাখ টাকা আর্থিক অনুদানের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়। এরপর মাওলানা আব্দুস সালাম সিলেটের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহন করেন এবং কয়েকদিন পূর্বে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে যান। পরবর্তীতে আবারো তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ইন্তেকাল করেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ছেলে ও মেয়ে’সহ আত্মীয় স্বজন অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2jnFAnF

September 13, 2017 at 06:18PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top