নিজস্ব প্রতিবেদক ● ফেসবুকে কবিতা লেখা নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও কলেজের এক শিক্ষকের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। আর অধ্যক্ষের কবিতাকে সাম্প্রদায়িক উষ্কানি হিসেবে মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শুরু হয়েছে কড়া সমালোচনা। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সংস্কৃতি বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক জীতেন্দ্রনাথ তরফদার ( ছদ্মনাম-জীতেন্দ্রনাথ জ্যোতি) তার ফেসবুকে আক্কাস নামে একটি কাল্পনিক চরিত্রকে বিদ্রুপ করে ‘চামচিকা’ শিরোনামে একটি কবিতা লেখেন। কবিতাটি চোখে পড়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তাহেরের। তিনি এনিয়ে কলেজের রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর দিলীপ কুমার ভট্টাচার্যকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
এর দু’একদিন পর কলেজ অধ্যক্ষ ইংরেজি বর্ণমালায় একটি বাংলা কবিতা লেখেন। কবিতায় তিনি লেখেন,‘পরনে ধুতি, নাম তার জ্যোতি/তার মুখে মুতি।’ এর কিছু সময় পর তিনি কবিতাটি ফেসবুক ওয়াল থেকে সরিয়ে ফেলেন। কবিতাটি লেখার পর তিনি তা টাইমলাইন থেকে সরিয়ে ফেললেও কবিতার স্ক্রিনশট নিয়ে রাখেন অনেকে। আর এ স্ক্রিনশট দিয়ে ফেসবুকে কড়া সমালোচনা শুরু করেছেন অনেকে।
একজন কলেজ অধ্যক্ষ কীভাবে সরাসরি একটি সম্প্রদায়ের পোশাক নিয়ে ব্যঙ্গ করে কবিতা লেখেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এছাড়া অশ্লীল ভাষা লেখেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পুরান বাজার মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষের সমালোচনা করে বুধবার সন্ধ্যায় একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। তিনি বলেন, কলেজ অধ্যক্ষের কার সাথে বাদানুবাদ বা কারো সাথে দ্বন্দ্ব আছে কিনা তা আমার জানা নেই। উনি কীভাবে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের পোশাককে ব্যঙ্গ করে কবিতা লেখেন তা আমার বোধগম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে একজন অধ্যক্ষ ও একজন শিক্ষক হিসেবে আমি খুবই লজ্জিত।
তিনি বলেন, ব্যঙ্গ করে অনেক কবিইতো কবিতা লিখেছেন। কিন্তু তাই বলে এভাবে কবিতা লেখা আপত্তিজনক।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জীতেন্দ্রনাথ তরফদার বলেন, কবিতা লেখা আমার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। সমকালীন বাস্তবতায় কবিতায় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে অনেক কাল্পনিক চরিত্র উত্থাপন করা হয়। তাই বলে কলেজ অধ্যক্ষ আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারেন না!
তদন্ত কমিটির সদস্য কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী হাসান বলেন, তদন্ত রিপোর্ট ইতোমধ্যে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। কারো মনের খবর বলা কঠিন, তবে কবিতায় নেতিবাচক কোনো কিছু আছে বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়নি।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তাহের বলেন, কারো কবিতার পরিপ্রেক্ষিতে কিংবা কারো বিরুদ্ধাচারণ করে আমি কবিতা লিখিনি। পুরোনো স্মৃতি থেকে আমি কবিতা লিখেছি। এখানে শব্দটা জুতি হবে। জুতি আমার প্রেমিকা ছিল। আর মুতি বলতে এখানে মালাকে বোঝানো হয়েছে। আর ধুতিতো যে কেউ পরতে পারেন। এখন তা নিয়ে কেউ যদি মনে কষ্ট পেয়ে থাকেন, তা নিয়ে আমার কিছুই করার নেই।
The post ভিক্টোরিয়ার অধ্যক্ষ শিক্ষকের স্ট্যাটাস নিয়ে তুলকালাম appeared first on Comillar Barta.
from Comillar Barta http://ift.tt/2xyVYsh
October 12, 2017 at 06:52AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন