সুরমা টাইমস ডেস্ক:: বিশ্বখ্যাত দুই গবেষকের লেখা চুরির অভিযোগের মুখে শুরুতে কাদা ছোড়াছুড়ি করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষক সামিয়া রহমান ও মাহফুজুল হক মারজান। তবে বিপদের আশঙ্কায় এবার নিজেদের মধ্যে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলতে চাইছেন আলোচিত এই দুই শিক্ষক।
জানা গেছে, গবেষণা চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ তদন্ত কমিটির সামনে যুগপৎ মোকাবেলা করতে চান তারা। অভিযুক্ত দুজনই গবেষণা চুরি না বলে একে সাইটেশন বা সূত্র উল্লেখে ত্রুটি বলে দায় মুক্তির কৌশল নিয়েছেন।
এদিকে গবেষণা চুরির অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট গঠিত তদন্ত কমিটি কবে থেকে কাজ শুরু করবে তা এখনো ঠিক হয়নি।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান বৃহস্পতিবার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মারজান আমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে। আমাকে টেক্সটও (মোবাইল ফোনে এসএমএস) করেছে। ও (মারজান) বলেছে- ম্যাডাম আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। চলুন আমরা কথা বলি।’
এ বিষয়ে আপনার অবস্থান কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কেন কথা বলব? কাজ তো ও করেছে, আমি করিনি।’
তবে সামিয়া রহমান এও দাবি করেন, ‘ও বলতে চাচ্ছে যে এটা সাইটেশনের সমস্যা, প্লাজিয়ারিজম নয়। আমিও তাই মনে করি। আসলেতো অন্যদের লেখা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যায়।’
নিজেদের মধ্যে আপসচেষ্টা সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্রিমিনোলজি (অপরাধ বিজ্ঞান) বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুল হক মারজান সরাসরি কিছু স্বীকার না করে বলেন, ‘উনি (সামিয়া রহমান) আমার শিক্ষক। উনাকে আমি টেক্সট পাঠিয়েছি। উনার কাছে যেকোনো বিষয়ে ভুল হলে তা আমি স্বীকার করতে পারি।’
অন্যদিকে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক তাদের ঝামেলা চুকিয়ে ফেলার উদ্যোগ এগিয়ে নিলেও পিছিয়ে আছে অভিযোগের তদন্ত প্রক্রিয়া। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষ হওয়ার কথা তিন সপ্তাহের মধ্যে। কিন্তু বলতে গেলে কমিটি এখনো কোনো কাজই শুরু করেনি।
তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নাসরিন আহমেদ পরিবর্তন ডটকমকে জানান, তিনি কেবল কমিটি গঠনের চিঠি পেয়েছেন। কমিটির অন্য চার সদস্যের নামও তিনি ওই মুহূর্তে মনে করতে পারেননি।
তিনি জানান, এখনো ওই কমিটি গঠনের চিঠি ছাড়া আর কোনো কাগজপত্র তিনি পাননি। কাগজপত্র পাওয়ার পর কাজ শুরু হবে। তদন্ত শেষ করতে কতদিন লাগবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
নাসরিন আহমেদ দাবি করেন, সামিয়া রহমান ‘মিডিয়া ব্যক্তিত্ব’ হওয়াতে বিষয়টি ফোকাস হয়েছে। কমিটি রিভিউয়ার বা এডিটরিয়াল কমিটির বিষয়ে কোনো কাজ করবে না বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত দুই শিক্ষক ‘A New dimension of Colonialism and Pop Culture: A case study of the Cultural Imperialism’ শিরোনামে এক প্রবন্ধ লেখেন যা গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’-এর ডিসেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
ওই প্রবন্ধের বিরুদ্ধে ‘চৌর্যবৃত্তি’র অভিযোগ আনে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। তাদের অভিযোগ, প্রবন্ধের সিংহভাগ নেওয়া হয়েছে প্রখ্যাত দার্শনিক মিশেল ফুকোর প্রবন্ধ ‘The Subject and Power’ থেকে যা ১৯৮২ সালে শিকাগো জার্নালে প্রকাশিত হয়। এর প্রকাশক ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস। এছাড়া অভিযোগ উঠে এডওয়ার্ড সাঈদের গবেষণা থেকে চুরিরও।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2hSEboJ
October 06, 2017 at 10:22PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন