সুরমা টাইমস ডেস্ক:: মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সব সচিব ও সচিব পদমর্যাদার চাকরিজীবীরা তাঁদের বাসার জন্য সরকারের দেওয়া বাবুর্চি ও নিরাপত্তা প্রহরী নেবেন না। বদলে মাসিক ভাতা নেবেন তাঁরা। ভাতার পরিমাণ ১৬ হাজার করে প্রতি মাসে মোট ৩২ হাজার টাকা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত রোববার এ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, সিনিয়র সচিব, সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিবদের জন্য মূলত এ পরিপত্র জারি করা হয়। তবে অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা কর্মকর্তা (পিআরএল), বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব, সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিবেরাও একই সুবিধা পাবেন।
জনপ্রশাসন সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, এখন থেকে সচিবেরা বাবুর্চি পদের বিপরীতে ১৬ হাজার টাকা কুক অ্যালাউন্স (বাবুর্চি ভাতা) এবং নিরাপত্তা প্রহরী পদের বিপরীতে ১৬ হাজার টাকা সিকিউরিটি অ্যালাউন্স (নিরাপত্তা ভাতা) পাবেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গত রাতে তিনি বলেন, ‘ভালোই তো। সচিবদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ছেই শুধু। আগে এত কিছু সুবিধা ছিল না এবং আমার মনে হয় বিশ্বের অন্য কোনো দেশের সচিবেরা এই জাতীয় সুবিধা পান না।’
পরিপত্রটি গত ১লা অক্টোবর থেকে কার্যকর এবং এটি জারির সঙ্গে সঙ্গে সচিবদের বাসভবনের জন্য বর্তমানে যে ৭৩টি বাবুর্চি পদ ও ৭৩টি নিরাপত্তা প্রহরী পদ রয়েছে, তা বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে বলা হয়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গত রাতে তিনি বলেন, ‘ভালোই তো। সচিবদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ছেই শুধু। আগে এত কিছু সুবিধা ছিল না এবং আমার মনে হয় বিশ্বের অন্য কোনো দেশের সচিবেরা এই জাতীয় সুবিধা পান না।’
পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, সরকারের যে দপ্তরেই কর্মরত থাকুন না কেন, সবার জন্যই এটি প্রযোজ্য। তবে সচিবেরা বর্তমানে যে মাসে ৩ হাজার টাকা করে ডোমেস্টিক এইড ভাতা পেয়ে থাকেন, এই দুই ভাতা নেওয়ার কারণে তা আর পাবেন না তাঁরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব মোজাম্মেল হক খান গত রাতে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বর্তমান পদ্ধতিটি অনেক জটিল। এমনকি দুই পদের লোকদের বেতন হারেও বৈষম্য দেখা গেছে। পুরো বিষয়টি সহজ ও একীভূত করতে নতুন পরিপত্র জারি করা হয়।’
অনেক সচিবের বাসায় বাবুর্চি নিয়োগ হয় না এবং নিরাপত্তা প্রহরীরও দরকার হয় না বলে এত দিন সরকারের ব্যয়ও হতো না। এখন সরকারের ব্যয়টা বাধ্যতামূলক হয়ে গেল বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
কেউ যদি বাবুর্চি বা নিরাপত্তা প্রহরী না রাখেন তাহলে কী হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, এই এখতিয়ার সম্পূর্ণ সচিবদের। রাখলেও ৩২ হাজার এবং না রাখলেও ৩২ হাজার টাকা তাঁদের বেতনের সঙ্গে ব্যাংকে চলে যাবে।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদারও এই সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নতুন সিদ্ধান্তে সরকারের ব্যয় কমবে। আর উপমহাদেশের দেশগুলোতে প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরা একটু-আধটু সুবিধা তো নেবেনই।’
সাবেক উপদেষ্টা হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘বাবুর্চি বা প্রহরী নিয়োগ না দিলেও সচিবেরা টাকা ঠিকই পাবেন—এটাকে ঠিক নৈতিক বলে মানা যায় না। দুর্নীতি প্রতিরোধে কোন সচিব কতটা দক্ষতা দেখাতে পারলেন, ঢালাও সুবিধা দেওয়ার আগে সেটা সরকারের মাথায় থাকলে ভালো হতো।’
সূত্র : প্রথম আলো
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2yV1wct
October 10, 2017 at 04:13PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন