নিজস্ব প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পাগলা কুকুর ও শেয়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০টি গরু মারা গেছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসা অবহেলায় আক্রান্ত আছে প্রায় ৫০টি গরু। এ ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকার সর্বত্র। স্থানীয়রা আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা অবহেলায় দায়ী করছেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগকে।
কিন্তু জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে জেলা সমন্বয় সভায়ও আলোচনা করেছি। এরপর এলাকায় গিয়ে উঠান বৈঠক করেছি। বর্তমানে আমাদের দুজন স্টাফ ওই এলাকায় আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত আছেন।
জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোকশেদ আলীসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ২০-২৫দিন আগে থেকে এলাকায় কুকুর ও শেয়ালের উপদ্রব মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে প্রায় ৩০টি গরু মারা গেছে এবং আক্রান্ত হয়ে বেঁচে আছে ৫০টি গরু। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিষয়টি জানানোর পরও কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় দায়ী করছেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগকে।
স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়নের মঙ্গলকাটা, আমপাড়া, জাহাঙ্গীরনগর, পুরান গোদীগাঁও, নতুন গোদীগাঁও, চৌমুহনী, মীরেরচর, মোকামপাড়া, ঘাসীগাঁও, কামারগাঁও এসব এলাকায় প্রতি রাতে গোয়াল ঘরে শেয়াল ও পাগলা কুকুর ঢুকে কামড়ানোর ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে একাধিক গরু। কামড়ে আক্রান্ত গাভী গরুর দুধ খেয়ে মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আক্রান্ত গরুর চিকিৎসায় বাজার থেকে কিনে ভ্যাকসিন দিচ্ছেন গরুর মালিকেরা।
এদিকে, এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের গরুকে শেয়াল-কুকুরের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে দলবদ্ধ হয়ে প্রত্যেক দিন রাতের আঁধারে শেয়াল ও কুকুর নিধনে বেরিয়ে পড়েন। এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রতি রাতেই দু’একটি কুকুর বা শেয়াল নিধন করছেন তাঁরা।
উত্তর সুরমা উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রব বলেন, ‘আমি প্রতিদিন খবর পাচ্ছি বিভিন্ন স্থানে শেয়াল-কুকুরের আক্রমণে গরু আক্রান্ত হচ্ছে। গরু মারা গেছে এমন খবরও পেয়েছি কয়েকটি। এভাবে চলতে থাকলে এলাকায় গৃহস্থরা নানা সমস্যায় পড়বেন। এখন এলাকার বিভিন্ন স্থানে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
ইয়াকুবিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও. শাহেদ আলী বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের শেয়াল-কুকুরের হামলার শিকার হচ্ছে গরু। পরে সকালে এসব আক্রান্ত গরু চিকিৎসা করাতে ভ্যাকসিনও দিচ্ছেন গরুর মালিকেরা।’
জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোকশেদ আলী বলেন, ‘এলাকায় যখন শেয়াল ও কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ১১টি গরু মারা গেছে, তখন আমি সুনামগঞ্জ শহরে গিয়ে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাই। তখন আমাকে আশ্বস্থ করা হয়েছিল ইউনিয়ন পরিষদে প্রতিদিন কয়েজন ডাক্তার উপস্থিত থাকবেন এবং আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা দেবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ডাক্তার ইউনিয়ন অফিসে বা এলাকায় আসেননি। আজ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় ৩০টি গরু। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি উদ্যোগ না নিলে আরো গরু আক্রান্ত হবে এবং মারা যাবে।’
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডা. মো. বেলাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি দেখার দায়িত্ব সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের। তবুও আমি বিষয়টি নিয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা সমন্বয় সভায় আলোচনা করেছি। এরপর এলাকায় গিয়ে উঠান বৈঠক করেছি। প্রায় পনের দিন আগে শেয়াল-কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ১৩টি গরু মারা গেছে। বর্তমানে আমাদের দুইজন স্টাফ এলাকায় আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা সেবায় কাজ করছে।’
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2y3lZen
October 24, 2017 at 08:15PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন