কুমিল্লার বার্তা ডেস্ক ● বিশ্বের ৪২টি দেশের কারাগারে বন্দীদশায় দিন কাটাতে হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশিকে। নানা জটিলতায় তাদের দেশে ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। আবার কি পরিমাণ প্রবাসী বিদেশের বিভিন্ন জেলে আটক তারও সঠিক ধারণা নেই কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে। প্রতিবছর বিভিন্ন কারণে এসব বাংলাদেশি বিদেশে পুলিশের হাতে আটক হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে তাদের পরিবারের উপর।
একদিকে যেমন আটক ব্যক্তিদের ফিরে পাবার অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে যে ঋণ করে বিদেশে যাচ্ছে তা পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে তাদের পরিবার।
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশি জাকিরের মুক্তি মেলেনি গত চার মাসেও। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস কারাগারে রয়েছেন তিনি। দু’দফা জাকিরের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছে সে দেশের আদালত। এ বছরের ২১ জুন রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে গিয়ে গ্রেফতার হন জাকির। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাস করলেও তার বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে যু্ক্তরাষ্ট্র গিয়ে তিনি আর দেশে ফেরেননি। গত চার মাসেও তার মু্ক্তি না হওয়ায় ভেঙে পড়েছেন তার স্বজনরা। জাকির তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি যার কারণে টাকার অভাবে পথে বসতে চলেতে তার পরিবার।
এদিকে মেক্সিকোতে আটক সিলেটের বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম। ঋণ করে মেক্সিকোর মাধ্যমে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে গিয়ে ধরা পরেন তিনি। বর্তমানে তার অবস্থা সর্ম্পকে তেমন কিছুই জানে না তার পরিবার।
মেক্সিকো থেকে দেশে ফেরত আনার জন্য প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নানা চেষ্টা করছে, কিন্তু তার সঠিক কোনো সমাধান খুঁজে পাচ্ছে না আরিফুলের বাবা-মা, স্বজনরা। একদিকে নিজের ছেলেকে হারিয়েছে অন্যদিকে ঋণের টাকা সঠিক সময়ে পরিশোধ না করতে পেরে বিপদের মধ্যে আরিফুলের পরিবার। আরিফুলের বাবা বলেন, নিজের সব জমি বিক্রি করে ও স্থানীয় একটি এনজিওর মাধ্যমে ঋণ নিয়ে ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।কিন্তু বর্তমানে ছেলের কোনে খোঁজই পাচ্ছে না প্রায় ৩ মাস ধরে। এমন অবস্থায় ঋণের বোঝা সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে সৌদি আরবের এক চাকরীজীবি মান্নান বলেন, আমাদের দেশেও অনেক বাংলাদেশি সৌদির বিভিন্ন জেলে আটক। কিন্তু এই ব্যক্তিগুলো মুক্তি না পাওয়ার প্রধান কারণ হলো সৌদি আরবে আমাদের কোনো আইনজীবি নেই। যার কারণে সুদান বা সৌদি অন্যান্য নাগরীকদের ধরে বাংলাদেশিদের মুক্তি চেষ্টা করছে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দূতাবাসগুলো এ সমস্যা সমাধান করতে পারে কিন্তু তারাও তেমন চেষ্টা করে না সমাধানের। তাই দূতাবাস কর্মকর্তাদের এ বিষয়গুলোতে আরো তৎপর হওয়া দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের কারাগারেই যে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি বন্দী আছেন বলে ধারণা করা হয় তারও সঠিক তথ্য নেই সরকারের কাছে। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণেই এ ধরনের পরিসংখ্যান রাখা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক সময় বন্দীদের সম্পর্কে জানাও যায় না। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে আটকে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছে অনুপ্রবেশকারী ও মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থানকারী ছাড়াও চুরি, মাদক পাচারসহ রোমহর্ষক খুনের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িতরাও। তাই সংশ্লিষ্টদের এ সমস্যা সমাধানের সঠিক উপায় বের করা জরুরি বলেও মনে করেন মান্নান।
তা না হলে বন্দি বাংলাদেশিদের যেমন দেশে ফেরত আশার সকল পথ বন্ধ হয়ে যাবে একই সাথে বাংলাদেশে তাদের পরিবারের উপর নেমে আসবে কঠিন সমস্যা। যা শুধু একটি প্রবাসীকে ক্ষতি করবে না ক্ষতি করবে তাদের পরিবারকেও। এভাবে চলতে থাকলে প্রবাসে যাওয়ার ইচ্ছাও হারিয়ে ফেলবে বাংলাদেশিরা বলেও মনে করেন এ সৌদি প্রবাসী।
The post মুক্তি মিলছে না বন্দি প্রবাসীদের, অনিশ্চয়তায় পরিবার appeared first on Comillar Barta | দেশ সেরা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা.
from Comillar Barta | দেশ সেরা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা http://ift.tt/2y3NZOX
October 25, 2017 at 12:01AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন