বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ উপজেলার নতুনবাজার এলাকাস্থ বিরুধপূর্ণ সেই দোকান কোঠার ভূমির মালিক হতে ‘স্বাক্ষর ও টিপসই’ প্রতারণা ও জালিয়াতি করার অভিযোগে সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩য় আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিশ্বনাথ সদর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান-১ ও মিরেরচর গ্রামের মৃত জবেদ আলীর পুত্র রফিক মিয়া মেম্বার বাদী হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন। যার নম্বর- বিশ্বনাথ সি.আর মামলা নং ৩১৪/২০১৭ ইংরেজী। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে মিরেরচর (সাবরাগাঁও) গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর পুত্র শামীম মিয়া, কামাল মিয়া, ফারুক মিয়া’কে। আদালত বিষয়টি তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআই সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করেন।
অভিযোগপত্র বাদী উল্লেখ করেছেন, ৬/১০/১৯৭২ইং তারিখে উপজেলার গোয়ালগাঁও গ্রামের আছমত আলী ২০ হাজার টাকা মূল্যে ২ শতক (উপজেলার মশুলা মৌজার, জেএল নং ৮৪ স্থিত, সাবেক খতিয়ান নং ৮৩৫, সাবেক দাগ নং ৬৩০৫, হাল দাগ নং ৯৪২১) ভূমি ও তদউপরস্থ দোকান গৃহটির (কোঠা) স্বত্ব দখল বাদীর মাতা আনোয়ারা বেগম ও নাবালিকা বোন মিনারা বেগম এর পক্ষে বাদীর পিতা আমেরিকা প্রবাসী জবেদ আলীর কাছে হস্তান্তর করেন। উক্ত তারিখ হইতে বাদীর মাতা ও বোন উক্ত দোকান (কোঠা) ও ভূমির স্বত্ববান ও খাস দখলদার থাকিয়া ভোগ-দখল করে আসছেন। বাদীর পিতা আমেরিকা প্রবাসী, মাতা পর্দনশীল গৃহবধু থাকায় তপশীল বর্ণিত ভূমির উপরস্থ দোকান কোঠাটি ভাড়া দেওয়ার প্রয়োজন হয়। ফলে অভিযুক্তদের পিতা আছদ্দর আলী মাসিক ভাড়া দেওয়ার শর্তে দোকান ভাড়া নেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাদীর মাতাকে দোকানের মাসিক ভাড়া পরিশোধ করে যান। এরপর আছদ্দর আলী মারা যাওয়ার পরও তাহার ছেলেরা (অভিযুক্তরা) বাদীর মাতার কাছে মাসিক ভাড়া মাসে মাসে প্রদান করে যেতে থাকেন। বাদীর মাতা দোকান গৃহটি পাকা ভবন নির্মাণ করে দ্বিতল ভবনে পরিণত করেন। এর এক পর্যায়ে মাসিক ভাড়া প্রদান অনিয়মিত হয়ে পড়ে। অনিয়মিত হওয়া ভাড়া পরিশোধ করার জন্য অভিযুক্তদের তাগদা দিলে, দিবে-দিচ্ছে বলে সময় ক্ষেপণ শুরু করে। এদিকে অভিযুক্তরা প্রচার করতে থাকে বাদীর পিতা-মাতা ভূমি’সহ দোকান ১নং অভিযুক্ত শামীম মিয়ার নিকট বিক্রয় করেছেন। যাহা মিথ্যা, বানাউট ও ভিত্তিহীন।
বাদী বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য মুরব্বীদের জানান। পর্যায়ক্রমে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামছুদ্দোহা পিপিএম ৭/০৯/২০১৭ইং তারিখে নিজ কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুরব্বী আলহাজ্ব পংকি খান’সহ এলাকার মুরব্বীদের সাথে নিয়ে ‘বাদী-বিবাদী’র বিষয়টি আপোষ-মিমাংশায় শেষ করার জন্য বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে ১নং অভিযুক্ত শামীম মিয়া ১৭/০৭/১৯৭৪ইং তারিখ যুক্ত বাদীর পিতা জবেদ আলী স্বাক্ষরিত ও মাতা আনোয়ারা বেগমের টিপসহিযুক্ত দুই পৃষ্ঠার একটি আন-রেজিষ্ট্রারী বিক্রয় দলিল কপি ওসি’সহ মুরব্বীদের নিকট জমা দেন। এসময় বাদী তার মাতা আনোয়ারা বেগম ও নাবালিকা বোন মিনারা বেগম এর নামীয় আছমত আলী সাক্ষরিত আসল একরার নামা দাখিল করেন। বিশ্বনাথ থানার ওসি’র সম্মুখে মুরব্বীগণ অভিযুক্ত শামীম মিয়াকে তার দলিলের আসল কপি দাখিলের কথা বলেন সে (শামীম) আসল কপি দাখিল করিতে পারিবে না বলে জানায়। এসময় মুরব্বীগণ বাদীর দাখিল করা একরার নামা সঠিক বলে মন্তব্য করেন। বাদী (রফিক) শামীম মিয়ার আন-রেজিষ্ট্রারী দলিল পড়ে বুঝতে পারেন অভিযুক্তরা বাদীর স্বত্ব দখলীয় মূল্যবান ভূমি’সহ দোকান কোঠা অন্যায় ও অসাধু উপায়ে গ্রাস করার জন্য জাল-জালিয়াতি ক্রমে আন-রেজিষ্ট্রারী দলিলটি সৃষ্ট করে তাতে ১৭/০৭/১৯৭৪ লিখে রেখেছেন। আর সেই আন-রেজিষ্ট্রারী দলিলের ফটোকপিতে থাকা কথিত জবেদ আলীর স্বাক্ষর প্রকৃত পক্ষে বাদীর পিতার নহে এবং কথিত আনোয়ারা বেগমের টিপসই প্রকৃত পক্ষে বাদীর মাতা আনোয়ারা বেগমের টিপসহি নহে। যা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে প্রদান করেছে অভিযুক্তরা। বিষয়টিতে বিশ্বনাথ থানার ওসি’র সম্পৃক্ততা থাকায় অভিযোগটি অন্য সংস্থার কাছে প্রেরণের জন্য অভিযোগপত্রে আহবান করেন বাদী।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2gZ9myM
October 31, 2017 at 09:44PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.