উত্তরবঙ্গ সংবাদ পোর্টালঃ মধুর গুণাগুণ কম বেশি আমরা সকলেই জানি। তবুও আরেকটু ভালোমতো জানতে ক্ষতি কোথায়? প্রাচীনকাল থেকে মানুষ প্রাকৃতিক খাবার, মিষ্টি, চিকিৎসা ও সৌন্দর্য-চর্চা সহ নানাভাবে ব্যবহার করে আসছে মধু। শরীরের ভেতর ও বাইরে এটি সমান কাজ করে।
আসুন জেনে নিই মধুর কিছু জানা অজানা তথ্য-
১) ওজন কমায় মধু– প্রতিদিন সকালে মধু খেলে শরীরের বাড়তি ওজন কমে। বিশেষ করে যদি সকালে খালি পেটে হালকা গরম জলে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই ওজন কমবে। এছাড়া প্রতিদিন নিয়মিত মধু খেলে পাকস্থলী পরিষ্কার থাকে।
২) মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়– ঘুমানোর আগে এক চামচ মধু খেয়ে ঘুমোন। এটি মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এতে বুদ্ধি বাড়ে।
৩) হৃৎপিণ্ডের সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস করে– মধুর সঙ্গে দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি রক্তনালীর বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। রক্তনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।
৪) ব্যাথা নিরাময় করে– নিয়মিত মধু খেলে গাঁটের ব্যাথায় দ্রুত আরাম মেলে। যে অবাঞ্ছিত রসের কারণে বাতের জন্ম, সেই রস অপসারাণে মধুর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ফলে বাতের ব্যাথা সেরে যায়।
৫) হজমে সাহায্য করে– মধু পেটের অম্লীয়ভাব কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। হজমের সমস্যা অনেকাংশে দূর করার জন্য প্রতিবার ভারী খাবারের আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। ভালো ফলের জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু খেতে পারেন।
৬) শক্তি বাড়ায়– মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি। এই প্রাকৃতিক চিনি শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাদের মিষ্টির প্রতি ঝোক রয়েছে, তারা চিনির পরিবর্তে মধু খেতে পারেন।
৬) রক্ত পরিষ্কার করে– এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ গরম জলের সঙ্গে এক বা দু চামচ মধু এবং এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন। এটা রক্ত ও রক্তনালী পরিষ্কার করে।
৭) হাঁপানি রোধ করে– আধ গ্রাম গোলমরিচের গুঁড়োর সঙ্গে সমপরিমাণ মধু এবং আদা মিশিয়ে দিনে অন্তত তিন বার খেলে হাঁপানির সমস্যা অনেকটা দূর হয়।
৮) গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তি– হজম সমস্যার সমাধানেও কাজ করে মধু। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন তিন বেলা দু চামচ করে মধু খেতে পারেন। এটা বেশ উপকারী। এতে করে গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তি মেলে সহজেই।
৯) আয়ু বৃদ্ধি করে– গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত যারা মধু ও সুষম খাবারে অভ্যস্ত, তারা তুলনামূলক বেশি কর্মক্ষম।
১০) ত্বক নমনীয় করে– মধু হিউম্যাকটেন্ট যৌগে সমৃদ্ধ। এই যৌগটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার কাজ করে এবং ত্বকের উপরিভাগের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে। হিউম্যাকটেন্ট যৌগটি ত্বককে নমনীয় করতেও সাহায্য করে। ফলে দীর্ঘদিন ত্বক থাকে বার্ধক্যের থেকে অনেক দূরে।
১১) কাশি নিরাময়ে– দীর্ঘমেয়াদী হোক আর স্বল্পমেয়াদী, খুসখুসে কাশির সমস্যায় যারা ভুগছেন, তারা প্রতিদিন এক চামচ আদার রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। অনেকটা আরাম পাবেন।
১২) ক্ষত, পোড়া ও কাটা জায়গার চিকিৎসায়– মধু শরীরের ক্ষত, পোড়া ও কাটা জায়গার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। মধুতে মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা ক্ষত, পোড়া ও কাটা জায়গায় ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। কোথাও পুড়ে বা কেটে গেলে ক্ষত স্থানে মধুর একটি পাতলা প্রলেপ দিয়ে দিন। ব্যথাও কমবে ও দ্রুত নিরাময়ও হবে।
১৩) প্রকৃতিক সানস্ক্রিন মধু– মধুতে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিরুদ্ধে কাজ করে শরীরের চামড়াকে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে। অনেকটা প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের কাজ করে মধু। রোদে পোড়া ত্বককে স্বাভাবিক করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এক চামচ মধুর সঙ্গে জল মিশিয়ে প্রতিদিন মুখে ফেস প্যাক লাগান। রোদে পোড়া কালো দাগ দূর হয়ে চেহারা হবে ঝলমলে।
বি দ্রঃ হাঁপানি, আলসার, ডায়াবেটিস, ওজন কমানো অথবা অন্য কোনো গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া ভালো।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal http://ift.tt/2xFlWFp
October 14, 2017 at 08:39PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন