ঢাকা, ০৪ অক্টোবর- জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান। অভিনয় করছেন ছোট ও বড় পর্দায়। দুই মাধ্যমেই দারুণ সফল। তিনি নির্মাতা। অভিনয় করেছেন মঞ্চেও। আজ তাঁর জন্মদিন। ৫০ বছর পূর্ণ হলো তাঁর। আজ সকালে কথা বললেন এ প্রতিবেদকের সঙ্গে। প্রতিবেদক: আপনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। জাহিদ হাসান: ধন্যবাদ। প্রতিবেদক: ৫০ বছর হলো। কেমন মনে হচ্ছে? জাহিদ হাসান: আগে ভাবতাম ৫০ বছর মানে অনেক সময়, অনেক বয়স। এখন দেখছি কিছুই না! আজ সকাল থেকে মনে হচ্ছে, অনেক কিছু করতে হবে। অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। আমাকে এই জগতে পাঠানো হয়েছে একটা মিশন দিয়ে। পজিটিভ মিশন। এই মিশন সফলভাবে শেষ করতে চাই। মানুষের জন্য, দেশের জন্য এমন কিছু করতে চাই, যা থেকে সবার কল্যাণ হবে, সবার উপকার হবে। প্রতিবেদক: কাল রাত ১২টায় কী করেছেন? জাহিদ হাসান: বাসায় আমার ছেলেমেয়ে তো আছেই, ভাইয়ের ছেলেমেয়ে, বোনের ছেলেমেয়ে সবাই এসেছে। সবাই মিলে সন্ধ্যা থেকে নানা কিছু করেছে। আমাকে জানতে দেয়নি। আমি যখনই ওদের রুমে ঢোকার চেষ্টা করেছি, ওরা দেয়নি। আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য তাদের ছিল নানা আয়োজন। ভালোই লেগেছে। প্রতিবেদক: আপনার স্ত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ তো দেশের বাইরে? জাহিদ হাসান: সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি সাংস্কৃতিক দল গিয়েছিল। মৌ এই দলের অন্যতম সদস্য। ওদের আজ দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু আমার জন্মদিন, তাই গতকাল মঙ্গলবার রাতেই মৌ দেশে ফিরেছে। বিমানবন্দরে নেমে আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। প্রতিবেদক: ৫০তম জন্মবার্ষিকী একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আজ এই দিনটি কীভাবে উদযাপন করছেন? জাহিদ হাসান: প্রথমে ভেবেছিলাম বড় আকারে একটা অনুষ্ঠান করব। ঢাকা ক্লাবে বুকিং দিতে চেয়েছি। পরে ভেবে দেখলাম, এসব করব না। আমি নিজেও এতিম, মা-বাবা নেই। তাই আজকের দিনটা এতিমদের সঙ্গে কাটাব। আজ ঢাকার বিভিন্ন এতিমখানার ১ হাজার ছেলেমেয়েকে দুপুরের খাবার খাওয়াব। ধানমন্ডির এক এতিমখানায় আমি আজ ওদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খাব। প্রতিবেদক: আজ নিশ্চয়ই মাকে খুব মনে পড়ছে? জাহিদ হাসান: হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন। পাশাপাশি আমার দাইমাকে খুব মনে পড়ছে। তখন তো আজকের মতো উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা ছিল না। সেই মফস্বলে ডেলিভারির জন্য এই দাইমাদের ওপর নির্ভর করতে হতো। আমি খুবই ভাগ্যবান, সেই দাইমার দক্ষতার কারণে আমার কোনো ক্ষতি হয়নি। আমি সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে জন্মেছি। এখনো ভালোভাবে আছি। আমি যেমন আমার মায়ের জন্য দোয়া করি, তেমনি দাইমার জন্যও দোয়া করি। প্রতিবেদক: সেই দাইমা বেঁচে আছেন? জাহিদ হাসান: এখন বেঁচে নেই। ১৭ বছর আগে আমি আবদুল্লাহ আল মামুনের বিহঙ্গ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলাম। তখন সাভারে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) আমরা শুটিং করেছিলাম। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ভ্যালেরি টেইলরের সঙ্গে কথা হয়। তখন জানতে পারি, মায়ের ডেলিভারির সময় অসংখ্য শিশুর ক্ষতি হয়। তখন একটু ভুলের জন্য অনেক শিশু প্রতিবন্ধী কিংবা বিকলাঙ্গ হয়। ওই সময় আমার দাইমার কথা মনে পড়ে। ভাবি আর বোনকে দায়িত্ব দিই তাঁকে খুঁজে বের করার জন্য। তখন আমার মা-ও বেঁচে ছিলেন। একসময় ভাবি আর বোন তাঁকে খুঁজে পান। তাঁরা দাইমাকে আমার পাঠানো কিছু উপহার দেন। শুনেছি, দাইমা খুব খুশি হয়েছিলেন। প্রতিবেদক: আগামী দিনগুলোর জন্য একটি প্রতিশ্রুতির কথা বলুন। জাহিদ হাসান: আর রাগ করব না। মাঝে মাঝে একটু বেশি রাগ করে ফেলি। রাগ করার কিছুক্ষণ পরই তা ভুলে যাই। কিন্তু যার ওপর রাগ করি, তিনি তা মনে রাখেন। ভোলেন না। এখন থেকে আরও বেশি পজিটিভ হব। প্রতিবেদক: আপনার তো বর্ণাঢ্য জীবন। অনেক অভিজ্ঞতা। এসব নিয়ে কিছু ভেবেছেন? জাহিদ হাসান: আত্মজীবনী লিখব। ভাবছি এখন থেকেই লেখা শুরু করব। যতই বলি, ৫০ বছর সময়টা কিন্তু কম নয়। আর তাকে দুই মলাটে বন্দী করা মোটেও সহজ ব্যাপার না। আমার জন্য দোয়া করবেন। আর/১৭:১৪/০৪ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2fRhLn8
October 05, 2017 at 12:19AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন