নিজস্ব প্রতিনিধি:: সিলেটে হবিগঞ্জের মাধবপুরে ধর্ষর্ণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা আদিবাসী তরুণীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার সুরমা চা বাগানের রেঙ্গু টিলা বস্তিতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি রেঙ্গু টিলা এলাকার মৃত সমরা মুণ্ডার মেয়ে।
এ ঘটনায় সুরমা চা বাগানের শ্রমিকদের মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন সাধারণ শ্রমিকরা।
এদিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
নিহতের মা অলকা মুণ্ডা জানান, সুরমা চা বাগানের এমরান হোসেন নামে জনৈক ব্যক্তি প্রায় ১০ বছর আগে তার কিশোরী কন্যা রিতা মুণ্ডাকে গৃহকর্মীর কাজ দেয়ার কথা বলে উপজেলার কাশিমপুর গ্রামে তার বোনের বাড়িতে নিয়ে যায়। প্রথম দুই মাস মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারলেও এরপর নিয়মিত মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারতাম না। এমরানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলত, তাদের মেয়ে ভাল আছে।
তিনি আরো জানান, গত বুধবার সকালে রিতা মুণ্ডাকে অসুস্থ অবস্থায় অপরিচিত দুই মহিলা একটি অটোরিকশা দিয়ে রেঙ্গু টিলায় নিয়ে আসে।
এ সময় চা বাগানের লোকজন রিতার এমন অবস্থা কিভাবে হয়েছে জানতে চাইলে তারা ভাল কিছু বলতে পারেনি। পরে অপরিচিত দুই মহিলাকে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় আটক করা হয়।
খবর পেয়ে এমরান রেঙ্গু টিলায় গিয়ে রিতার চিকিৎসা করাবে এ কথা বলে দুই মহিলা নিজেদের আত্মীয় বলে চা শ্রমিকদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
অসুস্থ রিতা তার মাকে জানান, তাকে কাশিমপুরে ধর্ষণ করা হয়। এক পর্যায়ে রিতা কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে জোরপূর্বক তাকে গর্ভপাত করানো হয়। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোন হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়নি। রিতার চিকিৎসার জন্য মা অলকা মুণ্ডা সুরমা চা বাগান ১০ নম্বর ডিভিশনের চা বাগান পরিচালিত হাসপাতালে গেলে কম্পাউন্ডার সন্তোষ মুণ্ডা ও ধাত্রী মরিয়ম বেগম তার বাড়িতে যায়। কিন্তু রিতা চা বাগানের নিয়মিত শ্রমিক না হওয়ায় তারা তার কোন চিকিৎসা করেননি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এমরান হোসেন জানান, সুরমা চা বাগানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গাফফার খান এ বিষয়ে ভাল বলতে পারবেন।
গাফফার খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রিতার বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই।
এ ব্যাপারে সুরতহাল প্রস্তুতকারী তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) খন্দকার সাইদ আহাম্মেদ বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিতার মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
মাধবপুর থানার ওসি মোকতাদির হোসেন জানান, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2gNMrpJ
October 27, 2017 at 08:07PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন