কলকাতা, ২১ অক্টোবর- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল থেকে পদত্যাগ করা দলটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মুকুল রায় সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহেই বিজেপিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন। এক সময়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায় এবার থেকে রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাবেন। তিনি সভাপতি হতে পারেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা অব্যাহত। তবে বিজেপি এলে তিনি যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মোক্ষম অস্ত্র হয়ে উঠবেন তা বলাই যায়। তবে মুকুল রায়কে কেন দলে নিচ্ছে বিজেপি, যার বিরুদ্ধে সারদা-নারদা কেলেঙ্কারির ছাপ রয়েছে? তার কারণ পুরোপুরি রাজনৈতিক। ভারতীয় অনলাইন পোর্টাল ইন্ডিয়া ডট কম এর ১০টি কারণ বের করেছেন। রাজনৈতিক প্রভাব : সারা পশ্চিমবঙ্গে মুকুল রায়ের রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। তৃণমূলে থাকাকালীন অন্য দল থেকে লোক ভাঙিয়ে দলে টানায় তাঁর জুড়ি ছিল না। ক্ষমতায় আসার আগে ও পরে রাজ্যে দলবদল করে তৃণমূলে আসতে হলে অন্য দলের নেতারা মুকুল রায়ের সঙ্গেই কথা বলতেন। রাজ্যে, জাতীয় স্তরে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা : দুই দশকের বেশি সময় রাজ্য রাজনীতির গণ্ডি ছাড়িয়ে জাতীয় স্তরে মমতা ব্যানার্জির সবসময়ের সঙ্গী ছিলেন মুকুল রায়। এতদিনের অভিজ্ঞতা রাজনীতে মুখের কথা নয়। সেটাকেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সাংগঠনিক ক্ষমতা ও নেটওয়ার্ক : সারা পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সাম্রাজ্য গড়ার ক্ষেত্রে একনম্বর কারিগর ছিলেন মুকুল রায়। একথা তৃণমূলের সকলেই জানেন ও মানেন। সেই সাংগঠনিক ক্ষমতা ও নেটওয়ার্ককে নিজেদের কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। দুর্বল বাংলা বিজেপি নেতৃত্ব: এতদিনেও বাংলায় মনে ধরার মতো কাউকে নেতৃত্বে পায়নি বিজেপি। রাহুল সিনহা বা দিলীপ ঘোষদের দিয়ে খুব বেশিদূর এগোনো যাবে না তা বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছে। ২০২১ সালের নির্বাচনকে যদি টার্গেট করতে হয় তাহলে মুকুলকে নেতৃত্বে এনেই কাজে লেগে পড়তে হবে। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ: অমিত শাহ থেকে অরুণ জেটলি- বিজেপির শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দারুণ সখ্যতা মুকুল রায়ের। সারদা-নারদা মামলায় মুকুল রায়ের ছিটকে বেরিয়ে আসার পিছনে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রয়েছে। এমনটাই অভিযোগ তৃণমূলের একাংশের। সেটা বড় অ্যাডভান্টেজ মুকুল রায়ের। তৃণমূল ভাঙিয়ে আনার ক্ষমতা : দল ভাঙিয়ে আনতে মুকুল রায়ের জুড়ি নেই। তিনি তৃণমূল ছেড়ে দেওয়ার পরই অনেক তৃণমূল নেতা বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন বলে খবর। মুকুল দলে এলেই তাঁদের টেনে নিতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেরকম হলে বিজেপিরই লাভ। তৃণমূলের কায়দা জানা : যে কায়দায় তৃণমূল রাজ্য জয় করেছিল, সেই পরিকল্পনার অংশ ছিলেন মুকুল রায়। সেই স্ট্র্যাটেজি মুকুলকে দলে নিলে বিজেপিরও বানাতে সক্ষম হবে। সেটা আগামী দিনে রাজ্যে বড় সফলতা এনে দিতে পারে বিজেপিকে। কারণ সারা রাজ্যের প্রতিটি জেলা, ব্লক, টাউনশিপ মুকুল হাতের তালুর মতো চেনেন। তৃণমূলের হাড়ির খবর জানা: তৃণমূলের ছোট-বড় সব নেতার নাড়িনক্ষত্র জানেন মুকুল রায়। কে কোথায় দুর্নীতিতে জড়িত, কার নামে কোথায় কী রয়েছে, দলের সর্বোচ্চ পদে থাকায় তা সবই মুকুলের নখদর্পণে। ফলে মুকুলের থেকে তৃণমূলের সকলেই সমঝে চলবেন সন্দেহ নেই। মমতার দুর্বলতা : একসময়ে মমতার ডানহাত ছিলেন মুকুল রায়। সারদা কেলেঙ্কারি থেকে নানা ইস্যুতে দলনেত্রীর পাশে ছিলেন তিনি। মমতাকে ক্লিনচিট দিলেও মমতার নাড়ি নক্ষত্র সবই জানেন তিনি। এমনকী যে ছবি কেনা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল সেসময়ও মুকুলই দলের সর্বোসর্বা হয়েছিলেন। তাই প্রাক্তন দলনেত্রীর ক্ষমতা-দুর্বলতা সবই মুকুলের নখদর্পণে রয়েছে। ভোট ভাগ হওয়া আটকানো : মুকুল রায় তৃণমূল থেকে বেরিয়ে কংগ্রেসে বা বামেদের দলে ভিড়বেন না। বিজেপি দলে না নিলে নতুন দল তৈরি করে ফেলতেন তিনি। সেক্ষেত্রে ভোট ভাগাভাগি হলে সমস্যায় পড়ত বিজেপিই। কারণ তৃণমূলের ভোট ভাগ না হলে বিরোধীদের ভোটভাগ হতো। সেটা মুকুলকে দলে নেওয়ায় বিজেপি আটকাতে পেরেছে। সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন আর/১০:১৪/২১ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2xd3ZyB
October 22, 2017 at 04:46AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন