মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাবেন

সুরমা টাইমস ডেস্ক:: একাত্তরের সময় সশস্ত্র বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর যেসকল সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যুদ্ধ শেষে আবার বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন তাদের মুক্তিযোদ্ধার ভাতা দেবে সরকার। আগামী বছরের জানিয়ারি থেকে এই ভাতা দেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (তৎকালীন ইপিআর) সদস্য, যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের ভাতা প্রদান করা হবে।’

মঙ্গলবার ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০১৭’ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা/উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তারা সে সময় বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন বলে সে সময়ে তাদের ভাতা প্রদান করা হয়নি। তারা সবাই প্রায় এখন অবসরে এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও সমস্যায় রয়েছেন…। আমরা এদের সবাইকে আগামী জানুয়ারি থেকে ভাতা প্রদান করব- ইনশাআল্লাহ।’

প্রতিবছর এ প্রসঙ্গে উঠা দাবির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দিবসে তিনি এখানে এলেই প্রতিবছর এ দাবি উঠত। কাজেই আমরা এটি (ভাতা) প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে তার সরকার সম্ভাব্য সবকিছু করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন এবং আত্মাহুতি দিয়েছেন তাদের আমরা মর্যাদা দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে সম্মানী চেক ও মোবাইল ট্যাবসহ বিভিন্ন উপহার সাত বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের এবং মুক্তিযুদ্ধে সম্মাননা পদকপ্রাপ্তদের মাঝে তা বিতরণ করেন।

‘শান্তিকালীন’ পদক ২০১৬ বিজয়ী ১২ জন এবং ‘অসামান্য সেবা’ পদক বিজয়ী ১৪ জন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০১৭ উপলক্ষে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করা শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। অার বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরে শিখা অনির্বাণ প্রাঙ্গণে রাখা পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের এদিনে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয়। এরপর এ বাহিনী পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে। আর এ অভিযানের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ত্বরান্বিত হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঐতিহাসিক দিবসটি প্রতিবছর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2BcDps0

November 21, 2017 at 11:17PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top