ঢাকা, ১৮ নভেম্বর- আগেরদিনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ক্রিস গেইল বলে দিয়েছেন, ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে সঙ্গে নিয়ে বিধ্বংসী ব্যাটিং করতে চান। কারণ, দর্শকরা মাঠে আসেন তাদের এই বিধ্বংসীরূপ দেখার জন্যই। দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তারা। বিপিএলে আজই সন্ধ্যার ম্যাচে মাঠে নামছেন গেইল-ম্যাককালাম। আইপিএলের প্রথম আসরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে দারুণ জুটি গড়ে তুলেছিলেন গেইল-ম্যাককালাম। দীর্ঘদিন পর বিপিএলে রংপুর রাইডার্স আবার তাদের এক করে দিচ্ছে। আজই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে মাঠে নামছেন তারা দুজন। শুরুতে না জমলেও ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে ব্যাট-বলের লড়াই। চার ও ছক্কার ফুলঝুড়িও ছুটছে। এরমধ্যে বিপিএলে কদিন ধরেই চলছে ক্যারিবীয় ঝড়। এই তো ১৪ নভেম্বর শেরে বাংলার ওপর দিয়ে বয়ে গেলো ব্রেথওয়েট আর কাইরণ পোলার্ড ঝড়। আর আজ দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামার আগে আবার পোলার্ড ঝড়। এখন সবার চোখ সন্ধ্যার ম্যাচের দিকে। ওই ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের হয়ে মাঠে নামবেন ক্যারিবীয় ক্রিকেট তথা বিশ্বের দুই ভয়ঙ্কর উইলোবাজ ক্রিস গেইল এবং ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। গেইল-ম্যাককালামের যে কেউ থাকা মানেই চার-ছক্কার অবাধ প্রদর্শনির পূর্ব সংকেত। সেখানে মাশরাফির রংপুরে দুজন একসাথে। আজ সন্ধ্যায় কি গেইল-ম্যাককালাম ঝড় বইবে শেরে বাংলায়? শুধু রংপুর সমর্থকরা নন, ক্রিকেট গেইল-ম্যাককালামের উত্তাল উইলোবাজি আর চার-ছক্কার অনুপম প্রদর্শনী দেখেতে শেরে বাংলায় দর্শকের ঢল নেমেছে। সন্ধ্যায় রংপুর রাইডার্স আর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ম্যাচের ঘন্টা দুয়েক আগে শেরে বাংলার প্রায় ৮০ ভাগ ভরে গেছে। সবাই গ্ইেল আর ম্যাকালামের ব্যাটিং তান্ডব দেখতেই ছুটে এসেছেন গ্যালারিতে। গেইল বিপিএলের নিয়মিত ও পরিচিত মুখ। প্রতিবারই অংশ নিয়েছেন। তবে বিপিএলে তার সেরা বছর ২০১২ সাল; প্রথমবার বিপিএল খেলতে এসে দুই সেঞ্চুরিতে পাঁচ ম্যাচে ১৮৭.০১ স্ট্রাইক রেটে ২৮৮ রান করেছিলেন গেইল। গড়ও ছিল দুর্দান্ত; ৯৬.০০। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় আসরে ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের হয়ে একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছেন। সে ম্যাচে ২২৩.৫২ স্ট্রাইক রেটে ৫১ বলে ১২ ছক্কা আর পাঁচ বাউন্ডারিতে ১১৪ রানের বিধ্বংসি ইনিংস খেলে গেছেন এ দীর্ঘদেহী ক্যারিবিয়ান। প্রথম দুই বছর তার ব্যাটে রানের ফলগুধারা বইলেও তৃতীয় ও চতুর্থ আসরে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি গেইল। ২০১৫ সালে তৃতীয়বার বিপিএল খেলতে এসে ১৬৩.৫২ স্ট্রাইক রেটে চার ম্যাচে করেন ১৩৯ রান। সেবারই প্রথম তিন অংকে পৌঁছাতে পারেননি। পঞ্চাশের ঘরে পৌঁছান মাত্র একবার। সর্বোচ্চ ছিল ৯২। আর গত বছর, মানে ২০১৬ সালের বিপিএলে দেখা মিলেছে অন্য গেইলের। চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে পাঁচ ম্যাচে একবারের জন্যও জ্বলে ওঠেনি তার ব্যাট। সাকুল্যে করেছেন মোটে ১০৯ রান। একবারের জন্য পঞ্চাশের ঘরেও পা রাখা সম্ভব হয়নি। সর্বোচ্চ ৪৪। ২১.০০ গড়। স্ট্রাইকরেটও (১২৩.৮৬) ছিল আগের যে কোন বারের তুলনায় কম। তারপরও প্রথম চার আসরে মোট (২৬+১২+১০+১২) = ৬০ ছক্কা হাঁকিয়েছেন গেইল। বিপিএলে সর্বাধিক ছক্কার মালিক এখনো গেইল। সবার জানা, আগে কখনো বিপিএল খেলতে না আসা ম্যাককালাম আজই প্রথম মাঠে নামবেন। বিপিএলে না খেললেও বাংলাদেশে বা শেরে বাংলায় কিন্তু এটাই প্রথম মাঠে নামা নয় এ কিউই ক্রিকেটারের। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বাংলাদেশের মাটিতে এর আগে ১৩টি ওয়ানডে (২০০৪ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত) খেলেছেন এ কিউই ব্যাটসম্যান। পাশাপাশি চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন বাংলাদেশের মাটিতে। কিন্তু তার ব্যাটের যে চিরায়ত আক্রমনাত্মক ধারা, তার দেখা মেলেনি একবারও। বাংলাদেশের মাটিতে ১৪ ওয়ানডেতে ১২বার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাওয়া ম্যাককালাম রান করেছেন সাকুল্যে ১৪৪। সর্বোচ্চ ৬১। গড় বেশ খারাপ। মাত্র ১২.০০। পঞ্চাশ একটি। আর শূন্য রানে আউট হয়েছেন তিনবার। বাংলাদেশের মাটিতে টাইগারদের বিপক্ষে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের শেষ ব্যাট হাতে নামা ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর; এই শেরে বাংলায় বাংলাদেশের সাথে। ওই ওয়ানডেতে খেলতে নেমে ১৮ বলে ১৪রান করে আউট। এর বাইরে ২০১৪ সালে বাংলাদেশে চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলে গেছেন ম্যাককালাম। সেটা বিশ্ব টি-টোয়েন্টি আসরে; কিন্তু তাতেও ব্যর্থতার ঘানি টানা। চার ম্যাচে ১৬+৪+৬৫+০ = ৮৫। সর্বোচ্চ ৬৫। গড় ২৮.৩৩। স্ট্রাইকরেট ১৪১.৬৬। চারটি ম্যাচই ছিল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। বন্দর নগরীর ওই মাঠে শেষবার ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দেখা মিলেছে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ । ওই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই টপ স্কোরার। প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। মজার খবর হলো, ওই আসরে বাংলাদেশ ছিল ভিন্ন গ্রপে। তাই টাইগারদের সাথে খেলা পড়েনি ব্রেন্ডন ম্যাককালামের। তার মানে বাংলাদেশের মাটিতে মাশরাফি, তামিম, সাকিব, মুশফিক কিংবা মাহমুদউল্লাহদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কখনো খেলা হয়নি ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটের সফলতম উইলোবাজ। আজ ম্যাকলাম নামবেন মাশরাফির রংপুরের হয়ে। প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দেখা যাক, পাকিস্তানি হাসান আলী- বাংলাদেশের সাইফউদ্দীনের সাজানো পেস আক্রমণ আর আফগান লেগি রশিদ খান ও পাকিস্তানি শোয়েব মালিকের গড়া স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে কি করেন গেইল-ম্যাককালাম? এমএ/০৫:০০/১৮ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2mEeMBa
November 18, 2017 at 11:09PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন