হাওড়া, ২৮ নভেম্বর- রাজনীতিতে এক পার্টির সভার পর পাল্টা সমাবেশ করে শক্তি প্রদর্শনের রেওয়াজ রয়েছে। তা বলে একই মঞ্চে, একই মাইক্রোফোনে পাল্টা বোধ হয় আগে দেখেনি বাংলার মানুষ। এবার সেই কাজটাই করে ফেলল তৃণমূল কংগ্রেস। হাওড়ার উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ায় বিজেপির সভার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই একই মঞ্চে সভা করে তৃণমূল দেখিয়ে দিল কার পালে কত হাওয়া। কুলগাছিয়ায় মুকুল রায় সভা করে যাওয়ার পর হাওড়া জেলা তৃণমূল গ্রামীণ সভাপতি পুলক রায় ঘোষণা করেছিলেন, ওই জায়গাতেই সভা করে তিনি দেখিয়ে দেবেন মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন। সেই কারণে দ্বিগুণ জমায়েত করার ডাক দেন তিনি। সোমবার কুলগাছিয়ার তৃণমূলের জনসভা দেখাল দ্বিগুণ নয়, বিজেপির সভার তিনগুণ জমায়েত হয়েছে। ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত হাওড়া তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। সভার প্রাক্কালে কিঞ্চিৎ বিতর্ক হয়েছিল তৃণমূলের এই সভা নিয়ে। বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, তৃণমূল কংগ্রেস তাঁদের মঞ্চ ও মাইক দখল করে নিয়েছে। উল্লেখ্য, বিজেপির সভার পরই ওই মঞ্চ থেকে একই মাইক্রোফোনে ডাক দেওয়া হয় তৃণমূলের সভার। তাতেই বিতর্ক দানা বাঁধে। যদিও জেলা গ্রামীণ সভাপতি পুলক রায় রায় সাফ জানিয়ে দেন, আমরা কোনও মঞ্চ দখল করিনি। একই জায়গায় সভা করব, তাই মাইকম্যান ও ডেকরেটারকে ভাড়া করে নেওয়া হয় মঞ্চ। শুধু মঞ্চের রং বদলে যায় এদিন। বিজেপির মঞ্চে তৃণমূলের সভা! টেক্কা মুকুলকে পুলক রায় মতপ্রকাশ করেছিলেন, বিজেপি দলের শীর্ষনেতৃত্বকে হাজির করে যে জমায়েত করেছে, আমরা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ছাড়াই শুধু জেলা নেতৃত্বকে এনে তাঁর দ্বিগুণ জমায়েত করব। সেইমতোই একদিনের ভিতরে প্রস্তুতি নেয় দল। হাওড়ার দুই মন্ত্রী অরূপ রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলির মন্ত্রী অসীমা পাত্র ও দুই জেলার সাংসদ ও বিধায়কদের নিয়েও বিপুল জনসমাবেশ করে দেখিয়ে দেয় হাওড়া জেলা গ্রামীণ তৃণমূল। তৃণমূল নেতৃত্বের কথায়, ছায়-ছিটকে কজন কর্মীকে দলে নিয়ে একটু ভিড় দেখিয়েই বিজেপি মনে করছে হাতে চাঁদ পেয়ে গিয়েছে, কিন্তু আসলে জনসভায় কত লোক হতে পারে সেই অভিজ্ঞতা তো নেই ওঁদের, তাই সামান্য ভিড় দেখেই মনে করছে, অনেক মানুষ তাঁদের সঙ্গে এসে গিয়েছে। তা যে নিতান্তই নগন্য, সেটা বুঝিয়ে দিতেই এই জনসভা। বিজেপির মঞ্চে তৃণমূলের সভা! টেক্কা মুকুলকে শনিবার তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে একদল কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। বেশ কিছুদিন ধরেই উলুবেড়িয়ার কাঁটাবেড়িয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সত্যপীরতলায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। বেশ কিছু বাড়িঘর ভাঙচুর হয়, জখম হয় অনেকেই, অনেকে এখনও ঘরছাড়া। তারই জেরে একটা অংশ দল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখায়। উলুবেড়িয়া তৃণমূলে এই ভাঙন ও ওইদিন মুকুল রায়ের জনসভায় ভিড় দেখে উৎফুল্ল ছিল বিজেপি, ততটাই দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় তৃণমূল। সেই কারণেই জরুরি ভিত্তিতে এই জনসভার আয়োজন করে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করল তৃণমূল। বিজেপি বছর খানেক আগেও উলুবেড়িয়াতে জনসভা করার মতো লোক পেত না, আজ হঠাৎ এই বাড়বাড়ন্তে মানুষের মনে অন্য ধারণা তৈরি হবে। সেই কারণেই তৃণমূলও তাঁদের জনসমর্থন দেখিয়ে দিল। আসল পরীক্ষা তুলে রাখা হল নির্বাচনের জন্য। পঞ্চায়েতের আগেই উলুবেড়িয়া উপনির্বাচনে হবে তৃণমূল ও বিজেপির শক্তি পরীক্ষা। এমএ/ ০৪:১৫/ ২৮ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2Bw9Qlg
November 28, 2017 at 10:18PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন