হবিগঞ্জে গৃহবধূর পেটে তোয়ালে রেখেই সেলাই!

নিজস্ব প্রতিনিধি:: দেশের প্রায় সব জেলা-উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে কথিত প্রাইভেট হাসপাতাল আর ক্লিনিক। এসব হাসপাতাল আর ক্লিনিকে রোগীদের কাছ থেকে যেমন বাড়তি অর্থ আদায় করা হচ্ছে, তেমনি অপচিকিৎসার শিকার হয়ে প্রাণও হারিয়েছেন অনেক রোগী। এনিয়ে প্রায়ই হামলা-ভাঙচুর ও মারামারির ঘটনাও ঘটছে।

হবিগঞ্জ শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালে এ ধরনের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে এখন মৃত্যুপথযাত্রী এক গৃহবধূ। মল্লিকা দাস (৩৮) নামে ওই গৃহবধূর সিজার করানোর সময় পেটে তোয়ালে রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসকরা। ঘটনার ৩ মাস পর ফের অপারেশন করে সেটি বের করা হয়েছে। গৃহবধূ মল্লিকা আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামের সঞ্জিব সরকারের স্ত্রী। তারা বর্তমানে শহরের শায়েস্তানগর এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, গত ৩ মাস আগে হবিগঞ্জ শহরের চাঁদের হাসি হাসপাতালে সিজার করা হয় মল্লিাকার। কিন্তু সিজারের পর থেকে কোনো মতেই সুস্থ হচ্ছিলেন না মল্লিকা দাস। যতই দিন যাচ্ছিল তার অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। তিন মাসেও তিনি সুস্থ না হওয়ায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শুক্রবার রাতে ফের অপারেশন করা হয় তার। এসময় তার পেট থেকে বের করা হয় তোয়ালেটি। বর্তমানে ওই গৃহবধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মল্লিকা দাসের স্বামী সঞ্জিব সরকার জানান, ৩ মাস আগে চাঁদের হাসি হাসপাতালের চিকিৎসক এস কে ঘোষকে দিয়ে তার স্ত্রীর সিজার করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সিজারের কয়েকদিন পর থেকেই পেটে ব্যথা অনুভব করতে থাকে সে। দিন যত গড়ায়, ব্যথা ততো বাড়তে থাকে।

তিনি আরো জানান, প্রচণ্ড ব্যথা অুনভব করায় বেশ কয়েকদিন পর আবারও চাঁদের হাসি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এসময় ডাক্তার মল্লিকাকে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা দেয়। পরীক্ষায় তার পেটের ভেতরে কিছু রয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়। পরে আবারো অভিজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শুক্রবার রাতে ডা. আবুল কালামের তত্ত্বাবধানে ফের শহরের সিনেমা হল এলাকার হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে মল্লিকার অপারেশন করানো হয়। এসময় চিকিৎসকরা তার পেটের ভেতর থেকে একটি তোয়ালে বের করেন।

এ ব্যাপারে ডা. আবুল কালাম জানান, ওই গৃহবধূর পেটে কাপড় থাকার ফলে ইনফেকশন হয়েছে।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত চিকিৎসক এস কে ঘোষ বলেন, ‘এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। তবে ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ চাঁদের হাসি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. সুচিন্ত চৌধুরী জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2BpA4FW

November 27, 2017 at 01:10AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top