সুরমা টাইমস ডেস্ক:: গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেওয়া বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্ষমা তো বিএনপিকে চাইতে হবে। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ক্ষমা চাওয়ার কোনো দৃষ্টান্ত নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য–প্রমাণ ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসনের দুর্নীতির বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।
আজ শনিবার (০৯ই ডিসেম্বর)দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিদেশে সম্পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে জন্য ক্ষমা না চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ ওবায়দুল কাদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুরের আদালতে বিএনপির দুর্নীতির বিষয় প্রমাণিত হয়েছে, তারপরও তারা কোনো দিন জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি। এগুলো কী করে অস্বীকার করবে বিএনপি? তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব, আপনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যে বিষয়টি এনেছেন, সেটা কখনো কখনো মনে হয় শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা। আবার কখনো কখনো মনে হয় সত্যকে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছেন। অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার চেষ্টা করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, সত্য বলার সৎ সাহস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আছে। তথ্য–প্রমাণ ছাড়া শেখ হাসিনা কোনো কথা বলেননি। তিনি যা বলেছেন, জেনেশুনেই বলেছেন এবং এর তথ্য–প্রমাণ আছে বলেই বলেছেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জিয়া পরিবার বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে যে অর্থ সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ পাচার করেছে, এগুলোর তদন্ত হবে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নিতে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সত্য যতই অপ্রিয় হোক, যতই কঠিন হোক—সত্যের বন্যা অপ্রতিরোধ্য। যে সত্য দিবালোকের মতো পরিষ্কার, তা চাপা দিয়ে কারও কোনো লাভ নেই। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা বাংলাদেশে সর্বজন স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের বাইরেও তাঁর সততা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সর্বশেষ ১৭৩টি দেশের মধ্যে সেরা সৎ ব্যক্তির মধ্যে শেখ হাসিনার নাম আসার পর থেকে বাংলাদেশে বিএনপির নেতৃত্বে একটি মহলের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। তারা তাদের মিথ্যাচারের ভাঙা রেকর্ড নতুনভাবে বাজানো শুরু করেছে।
সড়ক ও সেতুমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘আমি বিএনপির মহাসচিবকে বলব, আপনি যেভাবে শেখ হাসিনার বক্তব্যকে খণ্ডন করতে গিয়ে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন, এটাই আপনাদের আসল চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।’ তিনি আরও বলেন, এখন তো তারা বুঝে ফেলেছে ইতিমধ্যে দুর্নীতির মামলা ঝুলছে, আরও দুর্নীতির মামলা আসছে। নির্বাচন সামনে থাকায় তারা এখন হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। তাই এখন আবোলতাবোল বলা শুরু করেছে। পাপ কখনো বাপকে ছাড়ে না। অপরাধ করলে তার বিচার হবেই।
পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল দুর্নীতির প্রমাণ চান কাদের:-
পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলে দুর্নীতি হয়েছে, বিএনপির এমন অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যদি প্রমাণ করতে না পারেন যে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলে দুর্নীতি হয়েছে, তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।’ তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকার আজ সারা দুনিয়ায় একটি প্রতিষ্ঠিত সরকার। এই সরকারের প্রকল্পগুলো দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে আজকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংক সরে গিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংক আজ পদ্মা সেতু নিয়ে বলছে যে শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পদ্মা সেতু হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই পদ্মা সেতু আর মেট্রোরেল নিয়ে যারা এসব কথা (দুর্নীতির অভিযোগ) বলছে, তাদেরই বলি প্রমাণ করুন যে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে। তা না হলে আপনাদের মামলার মুখোমুখি হতে হবে। এর জন্য আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আর প্রমাণ করতে পারলে আমরা আদালত ফেস করব।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুরর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2iJrJER
December 09, 2017 at 10:08PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন