নিজস্ব প্রতিনিধি:: দীর্ঘ ২৩ বছরেও শেষ হয়নি তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের কাজ। এলজিইডি একাধিকবার সড়কটি যানচলাচলে উপযোগী করার লক্ষ্যে টেন্ডার দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বছরে বছরে শুধু গচ্ছা গেছে সরকারের কোটি কোটি টাকা।
তাহিরপুর উপজেলা সদরের সঙ্গে তিনটি ইউনিয়ন ও ৩টি শুল্ক বন্দরের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘ ২৩ বছরেও যান চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় এলাকার দেড় লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছে।
জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে বাদাঘাট পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে বাদাঘাট, উত্তর বড়দল, উত্তরশ্রীপুর সহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন প্রতিদিন উপজেলা সদরের সাথে একমাত্র সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে প্রথম এলজিইডি তাহিরপুর বাদাঘটা সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১১-১২ অর্থ বছর পর্যন্ত সড়কে ৬ কিলোমিটার পাকাকরণ করা হয়। সে সময় থেকে অদ্যাবধি সদর ইউনিয়নে বৌলাই নদীর ব্রীজ থেকে পূর্ব দিকে সূর্য্যরেগাঁও গ্রাম পর্যন্ত আধা কিলোমটার, টাকাটুকিয়া ব্রীজের দু’দিকের এপ্রোচে আরও আধা কিলোমিটার এবং বাদাঘাট ইউনিয়নে হোন্ডার ঘাট থেকে পাতারগাঁও এলাকা পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক এখনো কাঁচা রয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, বৌলাই নদীর ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক থেকে পূর্ব দিকে আধা কিলোমিটার সড়ক বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গা। এই ভাঙ্গা সড়ক পথ পেরিয়ে একট উত্তর দিকে এগুলো চোখে পড়ে কাকাতোয়া সেতু। সেতুর উত্তরপাশে এপ্রোচে মাটি নেই, বাঁশের ছোট একটি ছাঁটাই দিয়ে কোন রকম সংযোগ স্থাপন করা হরেয়ছে।
আর একটু উত্তর দিক থেকে আবারো ভাঙ্গা শুরু এ সড়ক পথ পাতারগাঁও পর্যন্ত এক কিলোমিটার। কোথাও সামন্য ভাঙ্গা কোথাও বড় বড় গর্ত। হেমন্তে কোন রকম মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হলেও বর্ষায় সড়ক পথটি বন্ধ হয়েই যায়। আর সদরের সাথে যোগাযোগ করতে ভোগান্তিতে পরে ৩ ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ।
ঘাঘটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মন্টু সরকার বলেন, অফিসিয়াল কাজে আমাদের প্রায়ই সদরে আসতে হয়। সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় আমরা যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই চরম বিপাকে পরি।
তাহিরপুর জয়নাল আবেদীন কলেজের অধ্যক্ষ ফনি ভূষন সরকার বলেন, সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় কলেজের শিক্ষার্থীসহ শতাধিক গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছেন।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, সডকটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে তিনটি ইউনিয়রে দেড় লক্ষাধিক মানুষ সহজে তাহিরপুর উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারবে।
উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, সড়কটি চলাচলের উপযোগী না থাকায় বিশেষ করে বর্ষাকালে আমাদের এলাকার লোকজন মারাত্মক কষ্ট করে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, বাস্তব ভিত্তিক পরিকল্পনা না থাকায় সড়কটি এখনো জন চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি সড়কটি চলাচলের উপযোগী করার জন্য।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানির থোরে পাতারগাঁও অংশটি বছরে বছরে ভেঙ্গে যায়। এখানে একাধিক ব্রিজ দিয়েও এ সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। আমরা আশা করছি চলতি বছর এ সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2kxab2Z
December 07, 2017 at 10:48PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন