ঢাকা, ০৭ জানুয়ারি- হৃদয়ের কথা ছবির একটি গানে প্রথমবার আমার সঙ্গে তিনা পারফর্ম করেছিল। নাচের একটা দৃশ্য ছিল এমন, তিনা ঘুরে বসেছে এবং তার হাতটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে; আমি তাকে হাত ধরে টেনে তুলি। টেনে তোলার সময় আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি। বলে রাখা ভালো, ওটা ছিল লাইভ পারফর্মেন্স। অনেক শ্রোতা দেখছিলেন। তখন তিনার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। ওই সময়ে তিনাকে দেখে কেন জানি আমার মনের ভায়োলিন বেজে উঠেছিল। এরপর আমরা পারফর্মেন্সটা শেষ করি। পরে বাসায় ফিরে মনে মনে তিনাকে খুঁজছিলাম। যারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, তাদের আমি বলি- কী ব্যাপার? যে মেয়েটা আমার সাথে নাচল, সে তো পরে আমাকে আর কিছুই বলল না। পরে তিনা আমাকে ফোন করে বলেছিল, ভাইয়া কেমন হয়েছে আমাদের পারফর্মেন্স? আমি তখন বলি, খুব ভালো হয়েছে। আমি তখন ইচ্ছে করে ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন রেখে দেই। এরপর একটা কাজের জন্য তিনা আমাকে ফোন করে একদিন। আমি তাকে বলি, কাজটা করো না। না করাই তোমার জন্য ভালো হবে। এভাবে দু-দিন, একদিন করতে করতে তিনার সঙ্গে আমার পরিচয় মজবুত হতে থাকে। তিনার সঙ্গে প্রচুর ফোনে কথা বলতাম। সারাদিন শুটিং শেষে রাতে বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে, খেয়ে ফোনে কথা বলতাম তিনার সঙ্গে। ওর নিজস্ব ফোন ছিলনা তখন। ওদের বাসার ল্যান্ডফোনে কথা হতো। রাত ১২ টায় ফোনে কথা বলা শুরু করতাম কখন যে রাত গড়িয়ে আযান দিত, টেরই পেতাম না। সারাদিন শুটিংয়ের পর তিনার সঙ্গে কথা বলার সময় এত এনার্জি কোথা থেকে আসত আমি নিজেই বুঝতাম না। আযান যখন দিত, তখন ফোন রেখে দিতে চাইতাম। তখন একটা মজার ঘটনা ঘটত। কে ফোন আগে রেখে দেবে এটা নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি লাগতো। আমি নাকি তিনা, কে ফোন রাখবে এটা ঠিক করতেই আরো এক ঘণ্টা চলে যেত। মাঝে মধ্যে আমি আগে ফোন করতাম। তিনার মা ফোন ধরতো। আমি বলতাম, আন্টি তিনার সঙ্গে কাজের ব্যাপারে কথা ছিল। তখন ওর মা তাকে ডেকে দিত। তখনও আমরা কেউ কাউকে লাভ ইউ কথাটা কিন্তু বলিনি। আরও পড়ুন: তার হাত ধরেই আমি আজকের চম্পা একবার একটি শোতে অংশ নিতে তিনা চীনে যাচ্ছিল। বেশ লম্বা ট্যুর ছিল, ২০-২২ দিনের ট্যুর। এই ট্যুরে যেতে আমি তাকে সায় দিলাম বটে, কিন্তু ওই সময়টায় আবার আমি ভাবলাম, তিনা চীনে যাচ্ছে; ওর সাথে কথা হবে না ২০ দিন! এটা ভাবতেই আমি ওকে কেন জানি মিস করতে শুরু করলাম। সত্যি কথা বলতে যেটা এর আগে কাউকে করিনি। ওই সময় আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনা তখন জানায়, সে এয়ারপোর্টে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চীনে উড়াল দেবে। ওই সময়টা আমি তাকে বলে ফেলি, তিনা আমি তোমাকে খুব মিস করছি। আমি মনে হয় তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি, অ্যান্ড আই লাভ ইউ। পরে তিনার কাছ থেকে শুনেছি, এটা শুনে নাকি সে এয়ারপোর্টে হা করে দাঁড়িয়েছিল। একেবারে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েছিল! সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি তাকে ভালোবাসি এটা বলার পরে সে হ্যাঁ, না কিছুই বলেনি। চীন থেকে ফিরে সে আমাকে হ্যাঁ বলেছিল। এরমধ্যে ২০ দিন তিনার সঙ্গে কথা হয়নি। আমি তখন খুব চিন্তায় থাকতাম। তিনা ওখানে ভাল আছে কিনা, কিভাবে ঘুরছে, কি খাচ্ছে। এসব কথা সবসময় মনে পড়তো। এরপর তিনা ঢাকায় ফিরে এয়ারপোর্টে নেমে ওর বাবাকে ফোন করার আগেই আমাকে ফোন করেছিল। ওই সময়টা তিনার খুব ঠাণ্ডা, জ্বর ছিল। দেশে ফিরার পরে তিনার সঙ্গে ওইদিন বিকেলে দেখা করি। ওইদিন আমার শুটিং ছিল। শরীর খারাপের ছুতো দেখিয়ে শুটিং ক্যানসেল করি(হাহাহা)। তিনা আমার জন্য চীন থেকে একটা গোল্ডেন ব্যাংক নিয়ে এসেছে। ওটাই ছিল তিনার থেকে পাওয়া আমার প্রথম উপহার। আমার হাতে উপহারটি দিয়ে তিনা বলেছিল, এটা আমার ব্যাংক রাজকুমারের জন্য উপহার। সেদিন তিশা লাভ ইউ ঠু বলেছিল। এরপর অনেক কিছু ম্যানেজ করে তিনার সঙ্গে দেখা করতাম। তিনাকে দেখার জন্য ধানমন্ডিতে অফিস নেই। ওর বাসার বিপরীত পাশে অফিস নেয়া হয়েছিল। জানালা দিয়ে তিনার বাসা দেখা যেত না বলে আমি বাথরুমে উঁকি দিয়ে ওকে দেখতাম। ফোন করে বলতাম তুমি বারান্দায় আসো। এছাড়া বাইরে দেখা করা খুব টাফ ছিল। কারণ মানুষ দেখলে ভিড় করত। সিনেমার গল্পেও এমনটা কম দেখা যায়। এরপর তিনার বাসায় বিয়ের জন্য প্রস্তাব পাঠাই। প্রথমেই তারা নাখোশ। কোনোভাবেই আমার সঙ্গে তিনাকে বিয়ে দেবেনা। এই শর্ত ওই শর্ত জুড়ে দিচ্ছিল। তখন মনে হয়েছিল গুলি মারি প্রেমের, হাহাহা। এরপর পরিবার অমত বলেই ছয় মাস আমাদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। ছয় মাস পরে তিনা একদিন ফোন করে আমার সাথে দেখা করতে চাইল। আমি ঢাকায় ছিলাম না। উড়ে চলে আসি। তারপর আবার আমাদের প্রেম জোড়া লাগে। প্রায় দেড় বছর অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দুই পরিবারের সম্মতিতে ২০০৭ সালে ১৮ ডিসেম্বর আমরা বিয়ে করি। বিয়ের পর তিনার প্রতি আমার ভালোবাসাটা আরো বেড়ে গেছে। এটা কেন হয়েছে আমার জানা নেই। আমরা দুজনেই যখন একসঙ্গে থাকি, আমরা দুজনেই সময়টাকে এনজয় করি। মাঝেমধ্যে ঝগড়া লাগলে আমরা ভাববাচ্যে কথা বলি। যেমন, কারো কিছু লাগলে বলুক, বাসায় ফেরার সময় নিয়ে আসবো। কিংবা তিনা আমাকে বলেন, কারো খিদে লাগলে খেয়ে নিক! আমাদের খুব সিলি বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। কিন্তু ২৪ ঘন্টার বেশি স্থায়ী হয়না। যার দোষ বেশি থাকে, সে আগে এসে সরি বলে। তখন আবার সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন আর/১০:১৪/০৭ জানুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2m7jogA
January 08, 2018 at 04:57AM
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
তুর্কি সিরিজ আরতুগ্রুলে মজেছেন ভারতের মুসলিমরা
07 Oct 20200টিমুসলিম বিশ্বে দারুণভাবে সাড়া ফেলে তুরস্কের টিভি সিরিজ দিরিলিস: আরতুগ্রুল। এখন কাশ্মীরসহ ভারতের মুসলি...আরও পড়ুন »
আবারো ভাইরাল শাহরুখকন্যার ছবি
07 Oct 20200টিমুম্বাই, ৭ অক্টোবর- উষ্ণতায় ভরা চোখ ঝলসানো ছবি শেয়ার করে ফের ভাইরাল হলেন বলিউড বাদশাহর কন্যা সুহানা ...আরও পড়ুন »
এবার সুশান্ত-ভক্তের আত্মহত্যার হুমকি
07 Oct 20200টিমুম্বাই, ০৭ অক্টোবর- বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর প্রায় চারমাস পার হলেও এখন পর্যন্ত তা...আরও পড়ুন »
প্রায় একমাস পর জামিন পেলেন রিয়া চক্রবর্তী
07 Oct 20200টিমুম্বাই, ০৭ অক্টোবর- ৯ দিন জেলে কাটিয়ে অবশেষে জামিন পেলেন সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্...আরও পড়ুন »
কাজলের বাগদান সম্পন্ন, বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন ৩০ অক্টোবর
07 Oct 20200টিমুম্বাই, ৭ অক্টোবর- তামিল, তেলেগু ও হিন্দি ছবির জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়ালের বিয়ের গুঞ্জন শোনা ...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.