চলন্ত গাড়িতে তরুণীকে গণধর্ষণ

সুরমা টাইমস ডেস্ক::

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছে আবারও চলন্ত গাড়িতে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এবার পাশবিকতার বলি হয়েছেন ২২ বছর বয়সী এক তরুণী। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় তাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়ার পর তার ওপর দু ঘণ্টা ধরে পাশবিকতা চালায় তিন যুবক। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গতবছর মে মাসে হরিয়ানার রোহটাক জেলায় ২৩ বছর বয়সী এক যুবতীকে এমন নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছিল যা বছর পাঁচেক আগের ‘নির্ভয়া’র ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতাকেও হার মানিয়েছে। ওই মেয়েটিকে অপহরণ করে প্রথমে ড্রাগ খাইয়ে অচেতন করে ফেলা হয়। তারপর একাধিক ব্যক্তি মিলে তাকে গণধর্ষণ করে। পরে ইঁট দিয়ে তার মাথা ও মুখ থেঁতলে দেওয়া হযয়েছিল যাতে মৃতদেহটি কেউ শনাক্ত করতে না-পারে।

আজ সোমবার পুলিশের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, শনিবার স্থানীয় কাজ শেষে ফিরছিলেন ওই নারী। এ সময় দিল্লির নিকটবর্তী হরিয়ানার ফরিদাবাদ এলাকা থেকে তাকে জোর করে একটি স্পোর্টস কারে তুলে নেয় ওই যুবকরা। এরপর দীর্ঘ ২ ঘণ্টা ধরে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় ধর্ষকরা। পরে তাকে সিকরি গ্রামের নিকটবর্তী এক পেট্রোল পাম্পের কাছে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। যেখানে তাকে ফেলে যাওয়া হয়, তার ২০ কিলোমিটার দূর থেকে অপহরণ করা হয়েছিল মেয়েটিকে।

পুলিশ বলছে, গত শনিবার সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই তরুণীকে অপহরণ করা হয়েছিল। তার গোটা শরীরে রয়েছে আঘাতের চিহ্ণ। মেডিকেল টেস্টে তার ওপর ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে স্পেশাল তদন্ত টিম। তবে তারা এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণ কোনো নতুন ঘটনা নয়। তবে সে দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ গণধর্ষণের ঘটনাটি হয়েছিল ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর, দিল্লির মুনিরকা এলাকায়। একটি চলন্ত বাসে এই নির্মমতার শিকার হয়েছিলেন ২৩ বছর বয়সী প্যারা মেডিকেলের ছাত্রী জ্যোতি সিংহ পাণ্ডে, যিনি নির্ভয়া নামেই বেশি পরিচিত। রাতে সিনেমা দেখে বাড়ি ফেরছিলেন জ্যোতি ও তার এক ছেলেবন্ধু। তারা একটা বাসে ওঠার পর বাসচালকসহ আরো ৬ জন মিলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। হামলার ১৩ দিন পর জরুরী চিকিৎসার জন্য মেয়েটিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু দুই দিন পর চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান জ্যোতি।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল দিল্লির হাইকোর্ট। গতবছর হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।

ভারত এবং ভারতের বাইরে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল দিল্লির এই গণধর্ষণের ঘটনাটি। তখন ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের শাস্তি দাবি করে প্রচুর সভা সমাবেশ ও প্রতিবাদ হতে দেখা যায়। তাই বলে থেমে থাকেনি ধর্ষণ বা গণধর্ষন। রোববার হরিয়ানার চলন্ত গাড়িতে গণধর্ষণের ঘটনাটিই তার জলন্ত প্রমাণ।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2DcxhVd

January 15, 2018 at 07:18PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top