সুরমা টাইমস ডেস্ক,::বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনোই রাজনীতির ভদ্রতার নিয়ম-কানুন মানেনি। প্রধানমন্ত্রীর অবিরাম ডাহা মিথ্যা কথার প্রতিক্রিয়ায় জনমনে আওয়ামী লীগ মিথ্যাবাদী সরকার বলেই সুপ্রতিষ্ঠিত।
রাজধানীর নয়া পল্টনে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের সর্বত্র নির্বাচনের আওয়াজ দিচ্ছেন, অন্যদিকে বিষাক্ত-প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য দিয়ে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক নির্বাচনী পরিবেশকে করছেন কলুষিত। বাংলাদেশের মানুষের আগামী দিনের স্বচ্ছ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশাকে তিনি দু:স্বপ্নে পরিণত করছেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ভ্রান্ত-অবাঞ্ছিত তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে কোনটাই বিশ্বাস করাতে পারবেন না। অতি ক্ষমতালিপ্সু হওয়ার জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন মানুষের বিবেককে অবশ করে দিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে ক্রমাগত মিথ্যার ধারাবর্ষণ করে ক্ষমতাসীনরা বাংলাদেশে এক বিধ্বংসী বিপজ্জনক অভিযানে নেমেছেন।
বিএনপি এ নেতা বলেন, অনাচারমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার জন্য জবাবদিহিতার সকল প্রতিষ্ঠানকে ভেঙ্গে দিয়েছে এই সরকার। জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে মিথ্যা ও অপপ্রচারকে কায়েমী ও দৃঢ়মূল করতে ভ্রান্ত নীতি প্রয়োগ করছেন ক্ষমতাসীনরা। মিথ্যাকে কখনোই সত্য বলে চালানো যাবে না। আওয়ামী লীগ কখনোই রাজনীতির ভদ্রতার নিয়ম-কানুন মানেনি। আর এই অবিরাম ডাহা মিথ্যা কথার প্রতিক্রিয়ায় জনমনে আওয়ামী সরকার মিথ্যাবাদী সরকার বলেই সুপ্রতিষ্ঠিত।
বিএনপির এই মহাসচিব, গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যেন গণতন্ত্রের ওপর বিষাক্ত তীর নিক্ষেপ মন্তব্য করে বলেন, এই মুহুর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে তীর্যক ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তা শুধু অনভিপ্রেত বা দু:খজনকই নয়, বরং এটি রাজনৈতিক পরিবেশ এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ ও সংশয় দানা বাঁধবে। প্রধানমন্ত্রীর কুৎসামূলক অপপ্রচারের এই বক্তব্য রাজনৈতিক বিভেদ-বিভাজনকে আরো প্রসারিত করবে ও গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাকে দানবীয় শক্তি প্রয়োগে বাধা দেয়ার সামিল বলে গণ্য হবে।
বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের কারণ উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ কেন এখন বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে এতো তীব্র মিথ্যাচারে লিপ্ত হলেন, তার প্রধান কারণ হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের অনাচার-অপকর্মের বিরুদ্ধে বেগম জিয়া এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। খালেদা-ভীতির কারণেই ক্ষমতাসীনদের মস্তিস্কে গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
হাজারো মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র এবং অরুচিকর বক্তব্য দিয়েও বেগম খালেদা জিয়াকে জনগণের কাছে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করতে পারেনি সরকার। বরং গণতন্ত্রহারা জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার আকুতিতে বেগম জিয়া এখন একক ও অনন্য প্রাসঙ্গিক ব্যক্তি। দিনকে দিন অজস্র উস্কানি সত্বেও বেগম জিয়া ধৈর্য, সংযম ও সম্ভ্রমের সঙ্গে সবকিছু মোকাবেলা করছেন। হিংসামূলক কুৎসা রটানোর জবাবেও বেগম জিয়া নিজেকে সংযত রেখেছেন। এটাই হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা, বিএনপি’র সাফল্যের চাবিকাঠি। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ের হাওয়া তুলতে বেগম জিয়া সফল হয়েছেন বলেই প্রধানমন্ত্রী অসংযত, অসংসদীয় কথাবার্তা বলছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের চেয়ারের তলা থেকে জনসমর্থন সরে গেছে, সেজন্যই জনগণের বদলে বন্দুকের ওপর ভরসার পাশাপাশি কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অশ্রাব্য, হিতাহিত কাণ্ডজ্ঞানহীন-বিবেচনাহীন, সভ্যতা-ভব্যতা ও সুরুচির ওপর হিংস্র আগ্রাসন। আমি গতকাল মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম জিয়াকে নিয়ে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2D3Xd5p
January 12, 2018 at 12:13AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন