সুরমা টাইমস ডেস্ক ::
কানাইঘাট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে এক ছেলেকে গুলি করে হত্যা ও আরেক ছেলেকে নিখোঁজ করার অভিযোগ করেছেন ৮০ বছর বয়স্ক এক মা। তিনি হলেন কানাইঘাট উপজেলার সাতবাক ইউনিয়নের চড়িপাড়া গ্রামের মৃত আবু ছিদ্দেকের স্ত্রী সায়বান বিবি।
লিখিত বক্তব্যে সায়বান বিবি বলেন, গত ২১শে ডিসেম্বর রাতে তিনিসহ পরিবারের সবাই এক সাথে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ কয়েকজন অপরিচিত লোক বন্দুক নিয়ে তাদের বসতঘরে প্রবেশ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে জানতে চায় হাবিবুর রহমান কোথায়। এসময় পরিচয় জানতে চাইলে তাকে ও তার ছেলের বউকে বন্দুকের নালা দিয়ে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেয়। তার ছেলে হাবিবুর রহমানকেও লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এসময় তার ছেলে ফয়জুর রহমান ও হাবিবুর রহমান বন্দুকদারীদের পরিচয় জানতে চায়। তারা পরিচয় জানতে চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বন্দুক দিয়ে তার ছেলেদের আঘাত করতে থাকে।
এসময় পরিবারের সবাই আর্তচিৎকার করলে বন্দুকধারীরা নিজেদেরকে কানাইঘাট থানার এসআই আবু কাওছার, কনস্টেবল পারভেজ, বশির আহমদ, রাজ্জাক নূর নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয় এবং তাদের সাথে থাকা অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে তাদের নিজস্ব লোক বলে জানায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই এসআই আবু কাওছার ও কনস্টেবল পারভেজ এলোপাতাড়ি ভাবে গুলি করতে থাকে। হাবিবুর রহমানের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ফয়জুর রহমানকেও গুলি করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
সায়বান বিবি আরো অভিযোগ করে বলেন, গোলাগুলির শব্দ শুনে প্রতিবেশি কামরুল ইসলাম এগিয়ে আসলে তাকেও গুলি করা হয় এবং তিনিও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ফয়জুর রহমান ও হাবিবুর রহমানের নিথর দেহ সিএনজি অটোরিক্সা করে নিয়ে যায় পুলিশ। এর কিছু সময় পর তিনি ছেলের বউকে নিয়ে কানাইঘাট থানায় গিয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আহাদের নিকট বিষয়টি অবগত করে জীবিত ছেলেকে ফেরত এবং নিহত ছেলের লাশ ফেরত চান। কিন্তু ওসি আব্দুল আহাদ ক্ষিপ্ত হয়ে ধমক দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে সবাইকে মামলা দিয়ে জেলে ঢুকানো হবে। অসহায়ের মত বাড়িতে ফিরে আসলে ওইদিন রাত সাড়ে তিনটার দিকে আবারো একদল পুলিশ তাদের বাড়িতে এসে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটতরাজ চালায়। এসময় তারা বসতঘরে থাকা বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র, ছাড়াও জরুরি কাগজপত্র নিয়ে যায় বলে সায়বান বিবি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, পরদিন ২২শে ডিসেম্বর রাত ১০ টায় পুলিশ তার ছেলে হাবিবুর রহমানের লাশ নিয়ে বাড়িতে এসে তাড়াহুড়া করে জোরপূর্বক ভাবে লাশ দাফন করতে চাইলে আশপাশের লোকজন বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে লোকজনের চাপের মুখে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। তখন পুলিশ সদস্যদের কাছে তার অপর ছেলে ফয়জুর রহমানের সন্ধান জানতে চাইলে এসআই আবু কাওছার বলেন, আছে হয়তো কোন নদীর পানির নিচে।
ঘটনার ৪দিন পর আদালতে তার ছেলের বউ ফরহানা আক্তার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সিআর মামলা নং ৩৭১/১৭। মামলায় কানাইঘাট থানার এসআই আবু কাওছার, ওসি আব্দুল আহাদ, কনস্টেবল পারভেজসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের আসামি করা হয়েছে। এক ছেলেকে গুলি করে হত্যা এবং আরেক ছেলেকে নিখোঁজ করে রাখার পরও উল্টো পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করেছে। এমনকি এ মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সায়বান বিবি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, ডিআইজি ও পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2r6OjhI
January 15, 2018 at 06:06PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন