সুরমা টাইমস ডেস্ক ::
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট সফরকে ঘিরে শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংসদ ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সিলেটে নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্যের জানান দিতে তারা এখন থেকেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। আগামী ৩০শে জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সিলেট আসার আগের দিন পর্যন্ত তারা সিলেটে শো-ডাউন দেবেন। শুধু সিলেট জেলা ও মহানগরেই নয়, গোটা বিভাগেই শোডাউন দেবেন সম্ভাব্য এমপি ও মেয়র প্রার্থীরা। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে সিলেটে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে দাপ্তরিক সব প্রস্তুতি চললেও রাজনৈতিক প্রস্তুতি আওয়ামী লীগ জোরেশোরেই চালাচ্ছে।
ইতিমধ্যে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সভা করেছে। ওই সব সভা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রচার চালাতে সকল স্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে সিলেটের জেলা পরিষদে সভা করেছে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ। আর শনিবার রাতে সভা করে মহানগর আওয়ামী লীগ। ওইদিন বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে সিলেট আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সফরের প্রস্তুতি দেখভাল করতে এ সপ্তাহেই সিলেটে আসার কথা রয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের। এছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে সিলেট বিভাগের যে সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটির নেতারাও প্রধানমন্ত্রীর সফরে সিলেট সফরের কথা রয়েছে। তারাও সিলেটের চার জেলায় পৃথক সমাবেশ করতে পারেন বলে জানিয়েছেন নেতারা। গেল সপ্তাহে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির যে সভা হয়েছে সেই সভায় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে সফরের কথা জানান। তার এই ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম সফর হচ্ছে সিলেটে। আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে। তফসিল ঘোষণা হয়ে গেলে আর প্রধানমন্ত্রী সিলেট সফরে আসতে পারবেন না। এ কারণে তিনি সিটি নির্বাচনের আগে সিলেট সফর করবেন। তার এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ৩০শে জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণের পর সিলেটে এ নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রস্তুতি হিসেবে প্রায় প্রতিদিনই সিলেট জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রস্তুতি সভা করা হচ্ছে। ৯ বছর ধরে দেশ শাসনের দায়িত্বে রয়েছে আওয়ামী লীগ। সুতরাং আওয়ামী লীগে এখন নেতাকর্মীর অভাব নেই। প্রধানমন্ত্রী সিলেট সফরে এসে যে সমাবেশ করবেন সেখানে লোকে লোকারণ্য হবে বলে মনে করেন নেতারা। এরপরও প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগের প্রতিটি এলাকায় উন্নয়নের দাওয়াত পৌঁছে দিতে চান নেতারা। গত শনিবার রাতে সিলেটের দলের সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদও জানিয়েছেন- প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে তার উন্নয়নের দাওয়াতও ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সিলেট অঞ্চলে যে উন্নয়ন করেছে সেটি আর কোনো সরকার করতে পারেনি। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী আসার দাওয়াত দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়নের দাওয়াতও পৌঁছাতে হবে। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আসার আগে সিলেটকে আমরা প্রধানমন্ত্রীময় করে গড়ে তুলবো। সিলেট আওয়ামী লীগের শক্তিশালী ঘাঁটি। দলের কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সফরের দাওয়াত গোটা জেলার পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছে দেবেন। নির্বাচনকে ঘিরেই সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর সফর। দুটি নির্বাচন সামনে। একটি হচ্ছে সিটি, অন্যটি জাতীয় সংসদ। বছরের শুরু থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের। এ কারণে সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা প্রধানমন্ত্রী সফরে সিলেটে শোডাউন দেবেন। সেই প্রস্তুতি চলছে। বিশেষ করে এমপি প্রার্থীদের তোড়জোড় বেশি। নিজেদের শক্তি জানান দিতে এই শোডাউন করা হবে। সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, শফিকুর রহমান চৌধুরী ছাড়াও ৬টি নির্বাচনী আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। লন্ডন, আমেরিকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সিলেটে ছুটে আসছেন। তারা এসে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে শোডাউন করবেন। এই শোডাউনকে ঘিরে পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা থাকতে পারে সিলেটে। কারণ ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে নেতাদের মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে। এই দূরত্ব কর্মীদের মধ্যে রয়েছে। এ কারণে অঘটন যাতে না ঘটে সে বিষয়টিও দলের সিনিয়র নেতারা পর্যবেক্ষণ করছেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভা: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেছেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী সুসংগঠিতভাবে কাজ করে ৩০শে জানুয়ারি সিলেট মহানগরকে মিছিলের নগরীতে পরিণত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী যেন জেনে যেতে পারেন সিলেটের জনগণ আওয়ামী লীগের পক্ষে, শেখ হাসিনার পক্ষে এবং নৌকার পক্ষে সোচ্চার আছে। সিলেট নগরীর তালতলাস্থ গুলশান সেন্টারে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ারের পরিচালনায় বর্ধিত সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আবদুল মোমেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিরাজ বক্স, তুহিন কুমার দাস সিবান, হাজী সিরাজুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, অ্যাডভোকেট রাজ উদ্দিন, কয়েছ গাজী, আবদুল খালিক, বিজিত চৌধুরী, অধ্যাপক জামিল, আজাদুর রহমান আজাদ, আজহার উদ্দিন জাহাঙ্গীর, জুবের খান, তপন মিত্র, দিবাকর ধর রাম, প্রিন্স সদরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী দ্বীপন, আবদুল গফফার উনু, হানিফ সালেক, অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ সেলিম, অ্যাডভোকেট বেলাল আহমদ, মহি উদ্দিন লোকমান, অ্যাডভোকেট জুনেল আহমদ, আজম খান, জামাল চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম, আবদুস সোবহান, সালাই বক্স, সাহানারা বেগম, আছমা কামরান, শাহরিয়ার কবির সেলিম, নাজমুল আলম রোমেন, আসাদুজ্জামান আসাদ। এছাড়াও ২৭টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য রাখেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2Dj5O3l
January 15, 2018 at 06:13PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন