সুরমা টাইমস্ ডেস্ক ঃঃ রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আওয়ামী লীগের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করছেন বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, গণতন্ত্র সুরক্ষায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা দুঃখজনক। রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সংবিধানের অভিভাবক। আমরা সবসময় সংবিধান এবং রাষ্ট্রপতিকে সম্মান দিয়েছি। তবে এখন সেই সংবিধান নেই। ইসি গঠনের পূর্বে এবং পরে আমরা আমাদের মতামত রাষ্ট্রপতির কাছে অবহিত করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্রপতি একটি রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। আমরা ব্যথিত, ওনার (রাষ্ট্রপতি) কাছ থেকে আশানুরূপ কোনো কিছু দেখতে পারছি না। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। : বছর শুরু থেকেই ব্যাপক ধড়পাকড়ের অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, নিশ্চয় লক্ষ্য করছেন যে, গত কয়েকদিনে অন্যায়ভাবে বেআইনিভাবে গ্রেফতারের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। যেদিন আমাদের দেশনেত্রী কোর্টে যান, সেদিনই কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ আমাদের ১০০/১৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করছে। গ্রেফতার করে আসামি দেয়া হচ্ছে কাদেরকে? আসামি দেয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বারের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারিকে যারা প্রতিদিন ম্যাডামের সাথে কোর্টে থাকেন ওই সময়ে, আসামি দেয়া হয়েছে সাবেক ক্যাবিনেট সেক্রেটারি আবদুল হালিম সাহেবকে। এই পরিস্থিতিতে আমরা এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো আলামত দেখতে পারছি না। : সরকারের প্রতি ফের আহবান রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, এরপরও বলছি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হওয়া উচিত। অতিদ্রুত পদত্যাগ করে একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে নির্বাচনকালীন ক্ষমতা দিয়ে সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য। এটাই একমাত্র উপায়। জনগণের ভোটের চার বছর অতিক্রম করছিÑ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন কী হয়েছে সেটা তো আপনারা পত্র-পত্রিকায়, টেলিভিশনে-মিডিয়াতে দেখিয়েছেন। এখন নামও হয়ে গেছে যে, কুর্তা-মার্কা নির্বাচন। কেননা কুকুর ছাড়া আর কেউ ছিল না কেন্দ্রের মধ্যে এবং কেন কেন্দ্রে ৫% এর বেশি লোক যায়নি। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় সমস্ত কেন্দ্রে ভোটার ছিল না। এই অবস্থায় উনি (শেখ হাসিনা) যদি বলেন যে, তাকে ভোট দিয়েছে। ভোট দিয়েছে বলেই উনি নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী আছেন। প্রধানমন্ত্রী আছেন শুধুমাত্র জোর করে, দখলদারিত্বে। রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্রকে ব্যবহার করে, জনগণের সমস্ত আশা-আকাক্সক্ষাকে চূর্ণ করে দিয়ে একেবারে জবরদস্তি জোর ক্ষমতা দখল করে আছেন। তার (শেখ হাসিনা) যদি এতটুকু গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থাকতো, তাহলে তিনি পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের কাছে দায়িত্ব দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দিতেন। : গত কয়েকদিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপি সম্পর্কে ‘রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত’ বক্তব্য রাখছেন মন্তব্য করে নিন্দা জানিয়ে এরকম বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব। : সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন সংসদে। এর নিয়মটা হচ্ছেÑপ্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে তৈরি করে দেবে, সেটা উনি পাঠ করবেন। ঠিক আছে। কিন্তু ন্যূনতম কতগুলো জিনিস তো আছে। দেশে যে গণতন্ত্র নেই- এটা তো সত্যিকথা। দেশের মানুষ যে, এখানে লাঞ্ছিত হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে, নিপীড়িত হচ্ছেÑ এটাও সত্যি কথা। একই সঙ্গে এখানে মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছেÑএটাও সত্যি কথা। এসব তার (রাষ্ট্রপতি) বক্তব্যে আসেনি। আমরা নাগরিক হিসেবে অত্যন্ত ব্যথিত যে, আমাদের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে সঠিক ভূমিকা নিতে পারছেন নাÑএটাতে আমরা ব্যথিত হচ্ছি। : উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করব এটা দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা সবাই আমরা জানিয়ে দিয়েছি। তবে এখনো প্রার্থী আমাদের চূড়ান্ত করা হয়নি। চূড়ান্ত হলে আপনাদের জানিয়ে দেয়া হবে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2mnQMiX
January 10, 2018 at 10:32PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন