অনিশ্চয়তা! জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে


বিশেষ প্রতিবেদন :: চলতি বছরের গত ১৬ অক্টোবর বিকেলে টিলাগড়ে প্রতিপক্ষের হাতে ছাত্রলীগ কর্মী ওমর মিয়াদ খুন হয়। এ ঘটনার পর হত্যা মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরীসহ একাধিক নেতা অভিযুক্ত হওয়ার পর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সংসদ।

একই সাথে নতুন কমিটি গঠনের জন্য পদপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হয়। সবমিলিয়ে নতুন কমিটির জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে ৩০০টি জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়েছে। কিন্তু, আড়াই মাস হয়ে গেলেও কেন্দ্র থেকে আসছে না নতুন কমিটি। ফলে নেতাকর্মীদের মাঝে কমিটি নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছেনা। একই ভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রমেও সৃষ্টি হচ্ছে স্থবিরতা।

জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শাহরিয়ার সামাদকে সভাপতি এবং এম রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০ সদস্যের জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। ২০১৫ সালের ৪ ডিসেম্বর আরও ১৩১ সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে গঠিত ১৪১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে চলছিল সাংগঠনিক কার্যক্রম। এ কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এলাকাভিত্তিক ‘গ্রুপ’ সৃষ্টি হয়। কার্যত ছয় টুকরা ছিল জেলা ছাত্রলীগ।

এই অবস্থায় গত ১৬ অক্টোবর টিলাগড় এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরীর পক্ষের কর্মীদের হাতে প্রতিপক্ষের (জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কিরণ মাহমুদের) কর্মী ওমর মিয়াদ (২২) নিহত হন বলে অভিযোগ ওঠে। হত্যা মামলায় রায়হান চৌধুরী অভিযুক্ত হওয়ার পর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ১৮ অক্টোবর বিলুপ্ত করা হয়। নতুন কমিটির জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে আগ্রহীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলেছে কেন্দ্র। ছাত্র-অছাত্র মিলিয়ে ৩০০টি জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়েছে। অন্যদিকে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ চার সদস্যের কমিটি কেন্দ্র থেকে ২০১৫ সালের ২০ জুলাই ঘোষণা করা হয়। প্রায় দুই বছর গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি আজও হয়নি।

ছাত্রলীগের এই অবস্থাকে নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের সংকট বলে মনে করেন নব্বইয়ের দশকে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা নাসির উদ্দিন খান। নব্বইয়ের দশকটি ছাত্রলীগের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দল তখন ক্ষমতায় ছিল না। সেই কঠিন সময়কে আমরা সাংগঠনিক তৎপরতা দিয়ে জয় করেছিলাম বলে সিলেটে ছাত্রলীগ এখনো আছে। তখন ছাত্রলীগের হাল ধরবে কে—এমন পরিস্থিতিতে মূল দল তথা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা পর্যন্ত বিচলিত ছিলেন। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের পর্যবেক্ষণ ও স্থানীয় নেতাদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ নতুন নেতৃত্ব পেয়েছিল।’

সিলেট ছাত্রলীগের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদউদ্দিন আহমদও। সিলেটের মদন মোহন কলেজ ছাত্র সংসদে ছাত্রলীগের জিএস ও ভিপি ছিলেন তিনি। সাবেক এই ছাত্রনেতা মনে করেন, বর্তমানে কেন্দ্র গণহারে জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে নেতৃত্ব বাছাই করে, যা সঠিক পন্থা নয়।

তিনি বলেন, ‘জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়ে নেতা নির্বাচিত হবে কেন? নেতা নির্বাচিত হবে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসভিত্তিক সাংগঠনিক তৎপরতা দেখে। এটা না হওয়ায় নেতৃত্ব টেকসই হচ্ছে না।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2EfpC4t

January 06, 2018 at 02:13PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top