বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে ফাঁসাতেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করা হয়েছে।
এই মামলায় জাল নথিপত্র তৈরী করেছে তদন্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ। এর স্বপক্ষে হারুনুর রশদিসহ পাঁচজন স্বাক্ষী আদালতে মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিয়েছে। দুদকের আইন অনুযায়ী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্য শেষ করার কথা। এই সময়ের মধ্যে শেষ না হলে আরো ১৫ দিন সময় বধিৃত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ৬০ দিনের তদন্ত কাজ শেষ হয়েছে ২৯৫ দিনে।
কেন এর কম করা হয়েছে? জাল নথিপত্র তৈরী করার জন্য এতো সময় নেয়া হয়েছে। বুধবার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসায় স্থাপিত বিশেষ আদালতে মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এতিম তহবিলের নথি দেখার কোন ক্ষমতা স্বাক্ষী জগলুল পাশার নেই। তিনি কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী (সাবেক মুখ্য সচিব)’র পিএস ছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, আইনের বিধান অনুযায়ী যেভাবে নথি তৈরী করার কথা সেভাবে তা করা হয় নি। নথির গতিবিধি সংক্রান্ত বিধানও এখানে অনুসরণ করা হয় নি। জাল নথি তৈরী করে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার জন্য এ কাজ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
শুনানি শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুনানিতে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে নথি দেখিয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে সেটি জাল। এখানে কারও কোনো সাক্ষর নেই।’
আবার ‘যখন এই ঘটনার কথা বলা হয়েছে, তখন দেশ ছিল মন্ত্রিপরিষদ শাসিত, কিন্তু নথিতে লেখা আছে রাষ্ট্রপতির ত্রাণ তহবিল। আবার এই নথিতে ঘষামাজা আছে’।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা এই দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জাল নথি তৈরি করেছেন বলেও অভিযোগ করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। বলেন, এই জাল নথির সপক্ষে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্যও দিয়েছেন পাঁচ জন।
মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘যারা এই মামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমার আদালতে দরখাস্ত দাখিল করব।’
মওদুদ আহমদ বলেন, যেসব নথিপত্র দেয়া হয়েছে সেগুলা বানোয়াট, এগুলো দিয়ে মামলা হতে পারে না। যারা এই জালিয়াতি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা প্রয়োজন। আমরা একটি দরখাস্ত জমা দেবো আদালতে।
তবে বিএনপি নেতাদের দাবিকে কৌশল হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। তিনি সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘ওনারা একটা কৌশল অবলম্বন করে এই কথাগুলো বলছেন। ওনারা আগে বলতেন কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই, নথি নেই, এখন বলছেন নথি আছে, তবে এগুলো সৃজন করা হয়েছে।’
‘তবে আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ দিয়ে মামলা করেছি। আর নথিগুলা পুরোপুরি সঠিক।’
বৃহস্পতিবার সপ্তম দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটির শুনানি শেষ হওয়ার কথা। এরপর রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ রাখা হতে পারে।
এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। খালেদা জিয়া ছাড়াও এই মামলায় তার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদকে আসামি করা হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে ওই মামলাতেও একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলাটির বিচারও প্রায় শেষ পর্যায়ে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2lQe8gp
January 04, 2018 at 07:04AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন