কলকাতা, ১৩ ফেব্রুয়ারি- রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বস্তরে বড়োসড়ো রদবদল আনতে চলেছেন অমিত শাহ। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই যাতে সাংগঠনিকস্তরে জোয়ার আনা সম্ভব হয় সেদিকে তাকিয়েই এই পদক্ষেপ। এতদিন পর্যন্ত সংগঠনের মূল দায়িত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। কিন্তু অমিত শাহ তাঁকে মধ্যপ্রদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে খবর। তাঁর জায়গায় দুজন পর্যবেক্ষককে এ রাজ্যের দায়িত্বে নিয়ে আসা হচ্ছে, তাঁরা হলেন, অরবিন্দ মেনন ও দেবেন্দ্র সিং। অরবিন্দ মেনন মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ সভাপতি ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ২০০৮ ও ২০১৩-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিজয়ী হয়। সাংগঠনিক দক্ষতাই শুধু নয়, তাঁর মতো ক্ষুরধার বুদ্ধি ও অনুমান ক্ষমতাও বিজেপিতে বিরল। দেবেন্দ্র সিং কানপুর থেকে একসময় সাংসদ হয়েছিলেন। তিনি একেবারেই আরএসএসের ঘরের লোক। মূলত সাংগঠনিক স্তরে আরএসএসের মতাদর্শ কতটা কার্যকর হচ্ছে সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্যই তাঁকে আনা হচ্ছে। রাজ্য বিজেপিতে আপাতত তিনটি গোষ্ঠী। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বর্তমান সভাপতি দিলীপ ঘোষ, এ ছাড়া প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহারও বড় গোষ্ঠী রয়েছে। তৃতীয় আর একটি গোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে মুকুল রায়ের হাত ধরে। গোড়ায় মনে করা হয়েছিল মুকুলবাবু তৃণমূল থেকে যে সব লোকজন নিয়ে আসবেন তাঁরা দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বেই কাজ করবেন। কিন্তু সুর কেটে যায় একেবারে গোড়াতেই। তিনি দলে এসেই ঘোষণা করেন, নিজেই জেলায় জেলায় পরিবর্তন যাত্রা শুরু করবেন। নেতৃত্বর ওপর প্রশ্নচিহ্ন এসে যেতে পারে এই ভাবনা থেকেই দিলীপ ঘোষ সরাসরি রুখে দাঁড়ান। পরের দিনই সাংবাদিকদের ডেকে বলে দেন, কোনও পরিবর্তন যাত্রা হবে না। জেলায় জেলায় কর্মসূচি হবে বটে, তবে তাঁর পরিকল্পনা তিনি নিজে স্থির করবেন। মুকুল রায় বুঝে যান, দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে পথ চলা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই মুরলীধর সেন লেনেরই একটি ঘরে তিনি নিজের মতো করে চলার চেষ্টা করছেন। রাহুল সিনহার সঙ্গে দিলীপ ঘোষের বিরোধেরও পঙ্কিল ইতিহাস রয়েছে। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে দিলীপবাবু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সুস্থ হয়েই সাংবাদিকদের ডেকে বলেন, তাঁকে নেতৃত্ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছিল। তিনি অশক্ত, আর কখনও চলতে পারবেন না বলে প্রচার চলছিল। মুখে না বললেও বিজেপি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহল স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিল এই আক্রমণের মূল লক্ষ্য অবশ্যই রাহুলবাবু। তিনি নাকি সমান্তরাল ভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করেন। প্রশ্ন উঠছে, কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এ রাজ্যে ভাল কাজ করলেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন? আসলে তিনি একটু নরম প্রকৃতির মানুষ। কড়া হাতে দিলীপ-রাহুল বিরোধে লাগাম টানা তাঁর পক্ষে সহজ নয়। তবে মুকুল রায়কে তিনিই দলে এনেছেন। ভেবেছিলেন মুকুল দলে নতুন একটা উদ্যম আনতে পারবেন। কিন্তু তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না দেখে কৈলাশ নিজেই সরে যেতে চেয়েছেন। আরও পড়ুন: কলকাতায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পথ চলা শুরু পুজোর আগেই অরবিন্দ মেনন অত্যন্ত কড়া প্রশাসক। দিলীপ ঘোষ বা রাহুল সিনহার পক্ষে তাঁকে অগ্রাহ্য করে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া একেবারেই সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে তিনি এবং দেবেন্দ্র দুবার এ রাজ্যে এসে বৈঠক করে গিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে আগামী এক পক্ষকালের মধ্যেই পাকাপাকিভাবে অমিত শাহ দিল্লি থেকে ঘোষণা করে এই দুজনকে দায়িত্ব দেবেন। তথ্যসূত্র: খবর অনলাইন এআর/১০:২৩/১৩ ফেব্রুয়ারি
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2EYn8Ji
February 13, 2018 at 04:23PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন