ইয়াবা পাচার রোধ কিভাবে সম্ভব,যেখানে আমরা নিজেরাই জড়িত……..!

সুরমা টাইমস ডেস্ক::   মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশে সীমান্তবর্তী এলাকায় দায়িত্বে থাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একশ্রেণির সদস্য সরাসরি ইয়াবা পাচারে জড়িত। শুধু তাই নয়, তারা ইয়াবায় আসক্তও। এমন তথ্য পুলিশের হাইকমান্ডের কাছে এসেছে। সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা নিজেরা খাই, নিজেরা পাচারে জড়িত, তাহলে ইয়াবা পাচার রোধ কিভাবে সম্ভব? আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঠিক থাকলে ইয়াবাসহ ৮০ ভাগ মাদক পাচার রোধ সম্ভব বলেও পুলিশের ওই শীর্ষ কর্মকর্তা অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ইয়াবা পাচারে জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একজন সদস্যকে ইতোমধ্যে আমি গ্রেফতার করেছি। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো ওই আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় তুলে ধরেন তিনি।

জানা গেছে, বৈঠকে ইয়াবা পাচার রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হলেও বাস্তবে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। কোনো সিদ্ধান্তই কাজে আসছে না। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় যেসব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করেন তার সবগুলোতে একটি শ্রেণি তৈরি হয়েছে, যারা সরাসরি ইয়াবা পাচারে জড়িত। তাদের কেউ ছুটিতে গেলেও নিজের পকেটে করে ইয়াবা নিয়ে যায়। কেউ কেউ ছুটিতে বড় বড় ইয়াবার চালান নিয়েও যাচ্ছে। সম্প্রতি কক্সবাজার সীমান্তের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন সদস্য ছুটিতে জয়পুরহাট যান। সেখানে ১২শ’ ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে পুলিশের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন। গ্রেফতারকৃত ওই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সীমান্তে কিভাবে ইয়াবা আসে, কোন কোন রুট ব্যবহার হয়, কারা খায় এসব ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা (আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক শ্রেণির সদস্য) যেহেতু জড়িত তাই ইয়াবা পাচার বন্ধ করা সম্ভব না। আমরাই যদি ঠিক না থাকি রোধ হবে কিভাবে?

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীসহ তাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীই ইয়াবা পাচারে দীর্ঘদিন ধরে সরাসরি জড়িত। দমনপীড়ন ও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা ও প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আসা অনেক রোহিঙ্গার নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাদের হাতে ইয়াবা দিয়ে মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলে দিয়েছিল, ‘ওপারে গিয়ে বিক্রি করে খাবি।’ তবে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ইয়াবা পাচারে জড়িত থাকার তথ্য বের হয়ে আসায় পুলিশের হাইকমান্ডকে ভাবিয়ে তুলেছে। সদর দপ্তর থেকে ইয়াবাসহ মাদক পাচারে কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়। এই নির্দেশনা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে থানা পর্যান্ত পৌঁছানোই শেষ। এ নির্দেশনা কার্যকর হয় না। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটাও মনিটর করা হয় না। একশ্রেণির কর্মকর্তা মনিটর করেন ঠিক মতো মাসিক মাসোহারা আসছে কিনা।

জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের সব জেলা-উপজেলায় কারা ইয়াবা পাচারে জড়িত তার তালিকা পুলিশ সদর দপ্তরে জমা আছে। ৯৫ ভাগ জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কোনো কোনো পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে সব থানার একশ্রেণির কর্মকর্তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ইয়াবা পাচার হচ্ছে। ৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত মাসে থানায় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা উেকাচ দেয়। পুলিশের ভিতরে এমনভাবে ইয়াবা পাচারের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে এটা ভাঙতে না পারলে ইয়াবার পাচার রোধ কোনোভাবেই সম্ভব না।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2EtE7TJ

February 01, 2018 at 01:05PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top