সুরমা টাইমস ডেস্ক:: মোট তিনটি ধারায় দায়ের করা হয়েছিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা। এই তিনটি ধারা অনুযায়ীই আজ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।
অভিযোগ সত্য প্রমাণ না হলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে খালাস দেওয়া হবে। উল্টো দিকে অপরাধ প্রমাণ হলে তাঁকে সাজা ঘোষণা করবেন আদালত। রায়ের ক্ষেত্রে বিচারক তিনটি ধারা অনুযায়ী বিচার করবেন।
এসব ধারায় কী শাস্তি রয়েছে, তা জানতে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় খালেদা জিয়ার দুই আইনজীবী ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীর সঙ্গে।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসনে কাজল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আদালতে তিনটি ধারার ওপর নথি উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এতে করে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা প্রমাণিত হলে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে পারেন।’
অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, দুদক এই মামলায় খালেদা জিয়াসহ মোট ছয় আসামির বিরুদ্ধে তিনটি ধারায় অভিযোগ এনেছে। এগুলো হলো—৪০৯, ১০৯, ও দুনীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ২-এর ৫(২)। তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। ফলে আশা করেন, খালেদা জিয়াসহ মামলার অন্য আনামিরা খালাস পাবেন।
তবে এ আইনের ৪০৯ সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন এবং দুদক আইনে সাত বছরের কথা বলা হয়েছে বলেও জানান এই আইনজীবী।।
দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি সরকারি কর্মচারী হিসেবে তার পদমর্যাদাবলে অথবা ব্যাংকার, ব্যবসায়, ফ্যাক্টর, দালাল, অ্যাটর্নি বা প্রতিনিধি হিসেবে ব্যবসায় সূত্রে কোনোভাবে কোনো সম্পত্তির জিম্মদার হয়ে বা উক্ত সম্পত্তির পরিচালনের ভারপ্রাপ্ত হয়ে সে সম্পত্তি সম্পর্কে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করে, তবে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডে ও দণ্ডনীয় হবেন।
১০৯ ধারা অনুযায়ী সাধারণত অপরাধ সংগঠনে সহায়তা করা হয়েছে। সহায়তার দরুন যদি সে অপরাধ অনুষ্ঠিত হয় এবং এ আইনে অনুরূপ সহায়তার দণ্ডদানের জন্য যদি কোনো স্পষ্ট বিধান না করা হয়ে থাকে, তবে অনুরূপ সহায়তাকারী যে অপরাধটি সংঘটনে সহায়তা করেছে, সে অপরাধের জন্য যে দণ্ডের বিধান করা হচ্ছে, অপরাধটি সংগঠনে সহায়তার জন্য তাঁকেও সে দণ্ডেই দণ্ডিত করা হবে।
এ ছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ ২ নম্বর আইনের ৫(২) ধারা অপরাধ হিসেবে আমলে নেওয়া হয়েছে। এ আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সাজা যদি এক বছরের বেশি হয়, তবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হবে। কিন্তু যদি সাজা এক বছরের নিচে হয়, তবে আদালত জামিন দিতে পারেন।
একনজরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা
- রমনা থানায় ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই মামলা দায়ের করা হয়।
- মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশিদ।
- এজাহারে টাকা আত্মসাতের (ঘটনার) সময়কাল হিসেবে ১৩ই নভেম্বর ১৯৯৩ হতে ২৮শে মার্চ ২০০৭ সালকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
- ২০১০ সালের ৫ই আগস্ট অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
- মামলার কার্যদিবস ২৬১ দিন ।
- খালেদা জিয়া হাজিরা দেন ৪৩ দিন।
- খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আট দিন।
- গত ২৫শে জানুয়ারি ২০১৮ রায়ের দিন ধার্য করেন বিশেষ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান।
- রায়ের দিন ধার্য ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2EcdXbj
February 08, 2018 at 02:03PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন