কলকাতা, ১৭ ফেব্রুয়ারি- নদী কারো একার নয়। কোনো রাজ্য নদীর পানির অধিকার একা নিতে পারে না। দক্ষিণ ভারতের কাবেরী নদীর পানিবণ্টন মামলায় এমনই রায় দিয়েছেন দিল্লিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ ওই রায় দেন। এর ফলে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তি আর খুব একটা ধোপে টিকবে না বলে মনে করা হচ্ছে। তাই ঢাকার সঙ্গে তিস্তা চুক্তির করতে মমতা ব্যানার্জির কথা আর কানে না তুললেও চলবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ফলে দিল্লি চাইলেই মমতাকে ডিঙিয়ে এককভাবে ঢাকার সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে। স্বভাবতই জাতীয় নির্বাচনের বছরে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের এই রায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যও স্বস্তির বলে মনে করছেন অনেকে। ভারতীয় সংবিধানের অজুহাত দেখিয়ে ঢাকা-দিল্লির মধ্যে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি আটকে দেন মমতা। তার দাবি ছিল, যুক্তরাজ্য কাঠামোয় কৃষকদের স্বার্থে তিস্তার পানি ইস্যুতে রাজ্যের অধিকার ও বক্তব্যই গুরুত্ব দিতে হবে। ফলে প্রথমে মনমোহন সিং ও পরে মোদী-দুজনই সংবিধানের শর্ত মেনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার আপত্তিকেই গুরুত্ব দেন। তাই ইচ্ছা থাকলেও ঢাকার সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করতে পারছিল না দিল্লি। গেলো বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরেও তাকে তিস্তা নিয়ে আশা বাণী শুনিয়েছিলেন মোদী। আরও পড়ুন: মমতার স্বাস্থ্য দফতরকে নিশানা, মুকুলের ছায়ায় অরাজনৈতিক সংগঠনের কর্মশালা কিন্তু মমতা বেঁকে বসায় সেই চুক্তি করার জন্য দিল্লি অনেকটাই এগিয়ে গেলেও চুক্তি সম্পন্ন করতে পারছিল না। তবে শুক্রবার কাবেরী নদী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তাৎপর্যপূর্ণ এই রায়ে প্রধানমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় সরকারের হাত আরও মজবুত হল। সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ে তামিলনাড়ু রাজ্যের জন্য কাবেরী নদীর পানির ভাগ কমিয়ে দিয়ে বাড়ানো হয় কর্ণাটকের পরিমাণ। বেঙ্গালুরুতে বেশি সংখ্যক বাসিন্দা বসবাস করেন যুক্তি দেখিয়ে পানির চাহিদা বাড়ায় ১৪ দশমিক ৭৫ হাজার মিলিয়ন কিউবিক ফিট (টিএমসিএফটি) কাবেরীর অতিরিক্ত পানি পেতে চলেছে কর্ণাটক। কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আদালত তার রায়ে বলেন, নদী কোনো নির্দিষ্ট রাজ্যের হয় না। নদী দেশের সম্পদ। কোনো রাজ্য তাকে নিজের বলে দাবি করতে পারে না। যেখানে ঘাটতি রয়েছে সেখানে পানি শুধু প্রয়োজনের জন্য ব্যবহার করা উচিত। এই রায়ের পর কেন্দ্রীয় সরকার মমতাকে পথে আনতে পারবে। আর যদি সম্ভব নাও হয় তাহলেও পশ্চিমবঙ্গের দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে ঢাকার সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়িত করতে পারবে দিল্লি। আর যদি আপত্তি তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন মমতা সেক্ষেত্রে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দোহাই দিয়ে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সম্পন্ন করতে পারে ভারত সরকার। সূত্র: আরটিভি অনলাইন আর/১৭:১৪/১৭ ফেব্রুয়ারি



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2ECk4WA
February 18, 2018 at 12:48AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top