সুরমা টাইমস ডেস্ক :: ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতির দাবিতে ঢাকায় ছাত্র-জনতার উপর নারকীয় হামলায় হতহতের ঘটনায় সারা পূর্ব বাংলা প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। সাধের পাকিস্তানে শাসক গোষ্ঠির এমন আচরণে বাংলার মানুষ হতভম্ব হয়ে পড়েন।
সিলেটে ৭দিন ব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। এরমধ্যে প্রথম ৪দিন টানা হরতাল। সিলেটে ঐ ৪দিন কোন যানবাহন চলেনি। রিকশার প্যাডেলে পা দেননি চরম দরিদ্র রিকশা শ্রমিক। খাবার জোগাড়ে ঠেলাগাড়ি ঠেলতে রাস্তায় নামেন নি কোন ঠেলাওয়ালা। দোকান খুলেন নি কোন ব্যবসায়ী। ধনী-গরীব সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারের তাজা রক্ত আর প্রাণহানীর প্রতিবাদে পাক শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আর ঘৃণা প্রকাশ করেছিলেন।
হরতালের পাশাপাশি প্রতিদিন শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেসব শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ শেষে গোবিন্দ পার্কে গিয়ে মিলিত হয়েছে প্রতিবাদ সমাবেশে। অবশ্য শোভাযাত্রা-সমাবেশ অব্যাহত ছিল ৫ মার্চ পর্যন্ত। ২২ ফেব্রুয়ারি গোবিন্দ পার্কে (হাসান মার্কেট) একাধিক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরমধ্যে একটি সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন উকিল মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। ২৩ ফেব্রুয়ারিও কয়েকটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে একটি সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক আব্দুল মালিক।
২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন মোক্তার দবির উদ্দিন চৌধুরী ও ২৫ ফেব্রুয়ারির প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন মনির উদ্দিন অ্যাডভোকেট। প্রতিটি সভায় প্রচুর লোক অংশগ্রহন করে নিজেদের ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন। দেখিয়ে ছিলেন মায়ের ভাষার প্রতি নিখাদ ভালোবাসা। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিলেটের রাজপথ ছিল উত্তপ্ত।
৫ মার্চ পর্যন্ত মিছিল প্রতিবাদ অব্যাহত হয়েছিল। এ পর্যায়ে সবশেষ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৫ মার্চ। সেটিও ছিল স্মরণকালের বৃহত্তম সমাবেশ। এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেছিলেন বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের পিতা আবু আহমদ আব্দুল হাফিজ। যারা বক্তব্য রেখেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বর্তমান অর্থমন্ত্রী।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2C563Px
February 17, 2018 at 02:04PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন