সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসীরা দেশটির পূর্ব গৌটাকে তাদের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়ে গনহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে দমন করতে প্রেসিডেন্ট আসাদ শেষ লড়াই লড়ছেন। আর দিশেহারা হয়ে সন্ত্রাসীরা এখন নানা কুৎসা রটানোর কূট-চাল অবলম্বন করছে। এতে আসাদের কি দোষ? নিজ দেশকে রক্ষা করা কি ঈমানী কাজ নয়? আরব বসন্তের ধমকা হাওয়ায় মিশরের মুরসির আজ কি অবস্থা? কিষ্ট ইহুদি সৌদি রাজাধিরাজ, জায়নবাদী ইহুদি ইসরাইল এবং সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার মস্তিষ্ক প্রসূত তথা কথিত “আরব বসন্তের” কাল ছায়ার ছোয়া লেগে আজ ইরাকের কি দৈন্যদশা? ছাদ্দাম পরবর্তী ইরাকে কি শান্তি ফিরেছে? এছাড়া, অভিশপ্ত এই “আরব বসন্তের” ঝড় হাওয়া লিবিয়ার গাদ্দাফিকে খুনিদের হাতে ঠেলে দিয়েছে; তবে গাদ্দাফির পর দেশটিতে কি এখন স্বর্গীয় গনতন্ত্রের পুষ্প বৃষ্টি হচ্ছে? জেনে রাখুন, কুখ্যাত এই আরব বসন্তের হ্যারিকেন উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে সিরিয়ায় আঘাত হানতে চাইলে সুমতি আসাদ আল্লাহর কৃপায় এবং বুদ্ধিমত্তার জুরে ‘কাটা দিয়ে কাটা তোলা’ নীতি গ্রহণ করেন ও এফ এস এ দিয়ে “আরব বসন্তের” ধ্বজাধারী আই এস আই এস-কে সিরিয়া থেকে নির্মূল করেন। এখন এই এফ এস এ এবং অন্যান্য কিছু উগ্র সংগঠন যেমন ওয়াই পি জে, ওয়াই পি জী, আল-নুসরা প্রভৃতি নিজেরাই চাইছে গনহত্যা চালিয়ে আসাদকে বিপদে ফেলে তারা সিরিয়াকে টুকরো টুকরো করে ভাগ করে নিতে। আর হ্যা, তারা তাদের নিজস্ব ভূখণ্ড তৈরী করতে আমেরিকার সহায় নিতে পর্যন্ত দ্বিধা বোধ করেনি। বর্তমানে সিরিয়ায় আমেরিকার দুই হাজারের চেয়ে বেশী সেনা মোতায়েন রয়েছে। এখানে একটি অতি স্বাভাবিক প্রশ্ন আসে, সিরিয়ায় আমেরিকার কি কাজ? উত্তরটা ও অতি সহজ, সিরিয়ার আসাদ আমেরিকার পা চাটা গোলাম নহে। তাইতো, আমেরিকা ও তাদের ধূসরদের সিরিয়া থেকে দমন করতে আসাদ সুকৌশলে রাশিয়ার পুতিনের শরনাপন্ন হয়েছেন। এখন সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি হ’ল, “ষাড়ে ষাড়ে ঘেষ, মধ্যখানে সরিওকুটির পরাণ শেষ”–এই বলা চলে। তবে হ্যা, একথা ও আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সিরিয়ায় এখন আর লিবিয়া, ইরাক কিংবা মিশরে সৃষ্ট পরিবেশের প্রেক্ষাপট আর নেই; আসাদের নৈপুন্যতার জন্যে আরব বসন্ত এখানে মুখ থুবড়ে পড়ছে। যদিও কিছু সংখ্যক নিরীহ জনতা সিরিয়ায় অপ্রীতিকর অবস্থার সম্মুখীন হ’তে হয়েছে, তাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, যারা তাদেরকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে তাদের সে প্রতিকূল অবস্থার জন্যে এসব আরব বসন্তের দালালরাই দায়ী। পরিশেষে বলি, আপসোস লাগে আমাদের সমাজের স্বনামধন্য এক-চোখা আলেমদের কথা ভেবে, যখন তারা ফতোয়া দেয় “শিয়াদের ২২টি ফিরকাকে একত্রে ‘কাফের’ বলে। অথচ ইয়েমেনের গনহত্যা, নাইজেরিয়ায় স্কুল ছাত্রী অপহরণ ও লিবিয়ার বর্তমান আই এস আই এস-র দপদপানি নিয়ে তারা কিন্তু নির্বিকার। আর হ্যা, আসাদের বিরুদ্ধে ভাওতাবাজির আশ্রয় নিয়ে জীবিত মানুষকে কাপন পরিয়ে মৃত সাজিয়ে ভিডিও তৈরী; এমনকি শিশুদেরকে আবির মাখিয়ে বোমা আঘাত প্রাপ্ত বানিয়ে জনমত আদায়ের মত দ্রিষ্টতার জন্য ওরা ঠিকটাক ফতোয়া দিয়েই যাচ্ছেন। বিশ্বের মানুষ এখন এসব ছল-চাতুরী বুঝে গেছেন। গতিকে, সিরিয়ায় শান্তি স্থাপনের জন্য সকল আগ্রাসী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নিঃশর্তে আসাদ বাহিনীর কাছে অস্ত্রসমর্পন করে রাজনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের পথ বেছে নেওয়া ছাড়া আর কোন গত্যন্তর নেই।
from মধ্যপ্রাচ্য ও দূরপ্রাচ্য – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2GStQR3
March 01, 2018 at 01:31AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন