ঢাকা, ০৪ মার্চ- ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় নষ্ট না করে দৈনিক এক ঘণ্টা সময় ব্যয় করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে পড়াশোনা করতে তরুণ প্রজন্মকে পরামর্শ দিয়েছেন ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধের অজানা ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানবে বলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতি তার এই পরামর্শ। প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করা প্রজেক্ট লন্ডন-১৯৭১ এর আয়োজনে কুইজে একাত্তর শিরোনামের এক অনুষ্ঠানে এসে তিনি মুক্তিযুদ্ধ চর্চায় তরুণদের নানা পরামর্শ দেন মাশরাফি। শনিবার সকালে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে এই আয়োজনে আরও এসেছিলেন শহীদকন্যা নুজহাত চৌধুরী। প্রজেক্ট লন্ডনের চেয়ারম্যান ফজলুল কবির তুহিনের সভাপতিত্বে আয়োজনে স্বাগত ভাষণ রাখেন আয়োজনের সমন্বয়কারী উজ্জ্বল দাশ। অনুষ্ঠানে নুজহাত চৌধুরী ও তুহিনের ভাষণের পর মঞ্চে আসেন মাশরাফি; ক্ষুদে ভক্তদের হাতের সবগুলো মোবাইল তখন ব্যস্ত ভিডিও ধারণে। এ দৃশ্যে হতাশ মাশরাফি বলেন, গোটা বাংলাদেশ এখন মোবাইলে ঢুকে গেছে। আজ আমরা যে আয়োজনে এসেছি, সে আয়োজনে যারা বক্তব্য রাখলেন তাদের বক্তব্য আপনাদের মনে কোনো আবেগ সৃষ্টি করতে পেরেছে বলে মনে হয় না। সবাই এখন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। এখন যদি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে প্রশ্ন করি, আপনারা মোবাইল বের করে উত্তর খুঁজবেন। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না। এটা বড় দুঃখজনক। কুইজের মাধ্যমে কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করার তোলার প্রক্রিয়া সম্পর্কে এই ক্রিকেটার বলেন, কুইজের মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানবে, এটার চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু নেই। মাশরাফি জানান, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখনও বই, পত্রিকা পড়ে ও চলচ্চিত্র দেখে জ্ঞান নিচ্ছেন তিনি। চলচ্চিত্রে হয়ত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত যুদ্ধটা আমরা দেখতে পাই না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের উপর কোনো চলচ্চিত্র দেখতে বসলে আমি শেষ না করে উঠি না। পড়ালেখা, ব্যবসা বা আমার খেলাধুলা, যাই বলি না কেন, প্রতিদিন ১ ঘণ্টা সময় বের করতে পারব না, এটা কিন্তু আমরা বলতে পারব না। ১৫-২০ দিন টানা একটু একটু করে জানুন মুক্তিযুদ্ধকে। ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিন। দেখবেন একদিন সবার মনে একটা আবেগের জায়গা তৈরি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে শিশুটি কিছুই জানে না, তাকে উৎসাহ না দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করা বা ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানান মাশরাফি। এরা কেন মুক্তিযুদ্ধকে জানে না, তা ফাইন্ড আউট করুন। পরিবারকে, স্কুলকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। যারা কিছু জানে না, তাদের নিয়ে এভাবে নিউজ করাও কিন্তু আমাদের জন্য সম্মানজনক কিছু নয়। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে তিনি বলেন, আজকে যাদের কারণে আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি, তাদের সবসময় আলাদা করে সম্মান করা উচিৎ। তারা সব আলোচনার উর্ধ্বে। মাশরাফি তার দুই সন্তানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, আমার সন্তানরা কিন্তু আপনাদের মতো তরুণদের কাছ থেকেই মুক্তিযুদ্ধের কথা জানবে। এমনকি আমিও হয়ত আপনাদের কাছ থেকে নতুন কিছু শিখব। নতুন প্রজন্মকে একাত্তরের বীর সেনাদের সম্পর্কে বলতে, আপনাদের আরো অনেক জানতে হবে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে। অনুষ্ঠানে নুজহাত চৌধুরী শোনান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ক্রিকেটার জুয়েলের গল্প। মারকুটে এই ব্যাটসম্যান কীভাবে ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য হলেন, কীভাবে আশুগঞ্জ ব্রিজে অপারেশনে গেলেন, তা বলেন গল্পছলে। পরে তিনি বলেন, তোমরা নবীনরা যখন উড়বে, তখন মনে রেখ সে উড়ে যাওয়ার রানওয়েতে প্রতিটি ধূলিকণায় প্রতিটি শহীদের রক্ত মিশে আছে। আয়োজকরা জানান, আগামী ৭ মার্চ থেকে কুইজে একাত্তর এর ওয়েবসাইটে (quize71.com) শুরু হবে নিবন্ধন। প্রতিযোগিতাটিও হবে এই সাইটেই। এ ঠিকানায় পাওয়া যাবে নিবন্ধন ফরম। সাতটি ধাপে ৭১টি প্রশ্ন থাকবে প্রতিযোগীদের জন্য। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দুটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হবে এই অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা। চলবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত। সূত্র: বিডিনিউজ২৪ আর/১২:১৪/০৪ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2FbOBL5
March 04, 2018 at 06:23AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন