সুরমা টাইমস ডেস্কঃ জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘মন্ত্রিত্ব নেওয়া আমাদের ঠিক হয়নি। অচিরেই আমরা মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করব। কারণ মন্ত্রিত্ব নিয়ে আমরা সমালোচনার মুখে পড়েছি। দেশের মানুষের কাছে আমাদের দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।’
তিনদিনের সফরে শুক্রবার ঢাকা থেকে রংপুরে এসে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এরশাদ বলেন, ‘আমরা বিরোধী দলে রয়েছি। আমাদেরকে তিনজন মন্ত্রীও দেওয়া হয়েছে। এ মন্ত্রিত্ব নেওয়া আমাদের ঠিক হয়নি। মন্ত্রিত্ব নেওয়ার পর দেশবাসীর কাছে আমাদের নানা সমালোচনায় পড়তে হয়েছে। দেশের মানুষের কাছে আমাদের সুনাম নষ্ট হয়েছে। তাই এমন মন্ত্রিত্ব আর চাই না। অচিরেই আমরা মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকদিন বিরোধীদলে থেকেছি। আর বিরোধী দলে থাকতে চাই না। আগামী নির্বাচন করব বিরোধীদলে থাকার জন্য নয়। সরকার গঠনের জন্য। আমাদের নেতাকর্মীরাও সে লক্ষ্য নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের মানুষ আমাদের আবার ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমরা ৯ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলাম। সে সময় দেশের মানুষ শান্তিতে ছিল। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি ছিল না। এখন মানুষ বাড়ি থেকে নিরাপদে বের হতে পারে না। এসব কারণেই দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চায়। আগামী নির্বাচনের জন্য আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী ঠিক করে রেখেছি। ইনশাল্লাহ আগামী নির্বাচনে আমরা অনেক ভালো করব। আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এখন জেলে। তাদের দল এখন নেতৃত্বশূন্য। তারা আগামী নির্বাচনে আসবে কি-না এটা তাদের ব্যাপার। তকে তারা নির্বাচনে গেলে ভালো হয়।’
আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,’দেশের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বিদেশিরা কোনো প্রভাব খাটাবে না। বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে। আর এ দুটি দল নির্বাচনে অংশ নিলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। আগামী নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। কোনো দল নির্বাচনে আসুক আর না-ই আসুক সেটা দেখার বিষয় নয়।’
বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টি জোট করবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জোট করার তো প্রশ্নই ওঠে না। এ বিষয়ে আমি আর এখন কিছু বলতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মহাসমাবেশ করব ঢাকায়। এ মহাসমাবেশে জাতীয় পার্টির শক্তি আছে কি-না তা আমরা দেখিয়ে দেব। স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে এটা।’
খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে বিএনপি নেতাদের ‘হইচই’ প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, ‘আমি ৬ বছর ২ মাস কারাগারে ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে সব মামলাই ছিল জামিন যোগ্য। তার পরেও আমি জামিন পাইনি। হাইকোর্ট আদেশ দেওয়ার পরও আমাকে সংসদে আসতে দেওয়া হয়নি। পৃথিবীর কোনো দেশে কোনো নেতাই আমার মতো নির্যাতন ভোগ করেনি। আমার প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে তার কোন নজির নেই।’
জাপা চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, জাপা নেতা জিয়াউদ্দিন বাবলু, জিএম কাদের, রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, মহানগর জাপা সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াছির প্রমুখ।
এর আগে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে মোটর শোভাযাত্রাসহ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রংপুর সার্কিট হাউসে পৌঁছলে নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
রংপুরে অবস্থানকালে শনিবার এরশাদ তিনতারা একটি হোটেল উদ্বোধন করবেন। এছাড়া পরদিন অত্যাধুনিক একটি ফিড মিলের উদ্বোধনের কথা রয়েছে তার।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2CR2DLT
March 02, 2018 at 10:31PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন