সুরমা টাইমস ডেস্কঃ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য তমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। শুক্রবার বান্দরবানের ঘুনধুম ক্যাম্পে সীমান্তে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) সঙ্গে পতাকা বৈঠকে এ কথা জানায় তারা।
শুক্রবার (২ মার্চ) বিকাল তিনটায় ঘুনধুম পয়েন্টে বিজিবি-বিজিপি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক শেষ হয় সাড়ে চারটায়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান। আর মিয়ানমারের পক্ষে সাত ৭ সদস্যে নেতৃত্ব দেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সুচায়ে হু।
তার আগে বৈঠকে অংশ নিতে ঘুমধুম বিজিবি ক্যাম্প থেকে হেঁটে বিজিবির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সংযোগ সড়কের মৈত্রী লালব্রিজ এলাকায় যায়। অপরপ্রান্ত থেকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীর একটি প্রতিনিধিদলটিও হেঁটে দু’দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছায়। মধ্যবর্তী স্থানে তাঁবুর নিচে পতাকা বৈঠকে অংশ নেয় বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে বিকাল সাড়ে চারটায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলটি ঘুমধুম ক্যাম্পে ফিরে আসে।
বৈঠক শেষে ফিরে বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান সাংবাদিকদের বলেন, শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ফের আশ্বস্ত করেছে মিয়ানমার। তবে সীমান্তে জিরোলাইনে ফাঁকা গুলি ছোড়ার ঘটনাটি অস্বীকার করেছে তারা।
বৈঠকে মিয়ানমার দাবি করে, মিয়ানমারের নিরাপত্তায় সীমান্ত অঞ্চলের প্রায় সময় সেনা-বিজিপি মোতায়েন করা হয়। বাড়ানো ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল নিয়ে বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিয়ানমারের নিজস্ব বিষয়। ফাঁকা গুলিও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ছোড়া হয়েছে। বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্তে ফাঁকা গুলি ছোড়ার বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো হয় এবং আগামীতে ফাঁকা গুলি ছোড়ার আগে বিজিবিকে অবহিত করার জন্য দাবি জানানো হয়। মিয়ানমার বিষয়টিতে একমত হয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে তমব্রু সীমান্তে অতিরিক্ত সৈন্য ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করে মিয়ানমার। এ ঘটনার কারণ জানতে বিজিবি পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানালেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো সাড়া দেয়নি দেশটি। পরে দেশটির ঢাকাস্থ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে বাংলাদেশ কড়া প্রতিবাদ জানায়।
এদিকে বাংলাদেশ সীমান্তে জোরদার করা হয় বিজিবির অবস্থান। এরপর মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভারী অস্ত্র-শস্ত্র সরিয়ে নেয়।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রাখাইন থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা আনুমানিক সাত হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশের তমব্রু সীমান্তের শূন্য রেখায় আটকে রয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই মিয়ানমারের বিজিপি তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার সামরিক পিকআপ, ট্রাক ও ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্য শূন্য রেখা থেকে প্রায় ১৫০ গজ ভেতরে অবস্থান নেয়। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শূন্যরেখায় আটক রোহিঙ্গাদের মধ্যে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2H0e46K
March 02, 2018 at 10:29PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.