ঢাকা, ০৯ মার্চ- কবরী, শাবানা, ববিতাদের সময়েই বর্তমান ছিলেন মেধাবী অভিনেত্রী রোজী আফসারী। টানা চার দশক তিনি দাপটের সঙ্গেই অভিনয় করেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রে। বেছে বেছে ছবিতে অভিনয় করতেন। তারপরেও তার ছবির সংখ্যা তিন শতাধিক। তার অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে আলোচিত ছবিগুলো হচ্ছে আলোর মিছিল, জাগো হুয়া সাবেরা, সূর্য সংগ্রাম, জীবন থেকে নেয়া, তিতাস একটি নদীর নাম। এছাড়াও লাঠিয়াল, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, অশিক্ষিত, প্রতিকার এই ছবিগুলোও ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ সাড়া ফেলে। ৯ মার্চ এই তুখোড় অভিনেত্রীর মৃত্যু দিন। আর এই দিনে তাকে নিয়ে এখনো স্মৃতিকাতর স্বামী ও নির্মাতা মালেক আফসারী। রোজীর মৃত্যুর ১১ বছর। এরপর বিয়েও করেছেন মালেক আফসারী। আছে সন্তানও। কিন্তু কোনোভাবেই ভুলতে পারেন না রোজীকে। প্রায় সময়ই ফেসবুকে রোজীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া স্মৃতি শেয়ার করেন তিনি। আর স্ত্রীর মৃত্যুদিনে যেনো এই নির্মাতা আরো বেশি স্মৃতি কাতর হয়ে আছেন। বিশেষ করে রোজী আফসারীর মৃত্যুর সময়কার অনুভূতির নিজের ফেসবুকে গল্পের মতো করে শেয়ার করেছেন তিনি। যা হুবুহু তুলে ধরা হলো: তখন দিনের ৩ টা। রোজী ফিসফিস করে বললো আফসারী চকলেট খেতে ইচ্ছে করছে। আমি ডাক্তারের দিকে তাকাই। ডাক্তার ইশারায় বুঝালেন, দেন। বুলুকে (রোজীর পার্সোনাল আয়া) বললাম নিয়ে আসো। বুলু ছুটে বেরিয়ে গেলো আই সি ইউ থেকে। এখানে রোজী এসেছে মার্চের ৩ তারিখে আজ ৯ তারিখ। বারডেম হাসপাতালের নিচেই পান সিগারেটের দোকান থেকে একটি চকলেট নিয়ে আসে বুলু। আমি কাগজ ছিঁড়ে রোজীকে দেই। রোজী পুরাটা খেতে চায় না। আমি দাঁত দিয়ে কামড়ে একটু দেই। ও বাচ্চাদের মতো মুখে নিয়ে চুষতে থাকে। তারপর ইশারায় আমাকে ডাকে। আমি আমার কান ওর মুখের কাছে নেই। আস্তে করে বলেআফসারী, ডাক্তার আমাকে ভালো করতে পারবে না। তুমি তোমার যাদু দিয়ে আমাকে ভালো করে দিতে পারো না? আমি হেসে ওর হাত ধরে বসে পড়ি পাশে নার্সের রাখা বেঞ্চিতে। ভাবতে থাকি ওর এখনো মনে পরছে সেই প্রথম দিনের কথা। বিনি সুতার মালা (১৯৮০) ছবির শুটিংয়ের কোনো এক ফাঁকে আমি রোজী ম্যাডামকে যাদু দেখিয়েছিলাম। তখন আমি ৬০০ টাকা বেতনের প্রধান সহকারী পরিচালক। উনাকে ম্যাডাম ডাকি। উনি শুধু আমার শুধু বয়সে না। সব দিক থেকেই অনেক বড়। উনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য আমি চালাকিতে আট আনার একটি আধলি দুইটা করে দেখিয়েছিলাম। আবার দুইটা আধুলি এক সাথে গায়েব করে দিয়ে উনাকে আরো অবাক করে দিয়েছিলাম উনি অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। বিশ্বাস করেছিলেন আমি জাদুকর। আরও পড়ুন: ওমর সানীর মৃত্যু গুজব, ছেলের প্রতিবাদ সেই থেকে রোজী প্রতিদিন আমার কাছে জানতে চাইতো আসলে এইটা যাদু না হাতের কারসাজি? আমি মিথ্যা কসম কেটে বলতাম সত্যি যাদু! বিশ্বাস করতো। আবার করতো না হয়তো। একদিন বললো, আমাকে শিখাবে? আমি বললাম, শিখাবো। জাদু শেখাবার বাহানায় হাত ধরলাম। আমি সত্যিই উনার হাত ধরলাম! হঠাৎ টুন টুন শব্দ করে উঠে রোজীর গায়ে লাগানো মেশিনগুলো। আমি চমকে উঠে ওর হাত ছেড়ে দিয়ে দেখি রোজী ঘুমাচ্ছে। কিন্তু নার্স ডাক্তার সবাই ছুটাছুটি করছে। আমি ওর কপালে হাত দিলাম। হালকা গরম। মনে হলো সব ঠিক আছে। ও ঘুমাচ্ছে। পরে ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা দেখি ৪ টা ৪৫মি.। ০৯.৩.২০০৭। ২৭ বছরের জার্নি এন্ড সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন আর/১০:১৪/০৯ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2DeXJbI
March 10, 2018 at 04:45AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন