ক্রীড়াবিদের জীবন মানেই যাযাবরের জীবন। আজ রাত এখানে তো কাল ওখানে! খুব কম সময়ই পরিবারের সঙ্গ মেলে। আর তারকা হলে তো কথাই নেই! যেখানেই যাবেন, সেখানেই সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। এমন দ্যুতিময় জীবন কিন্তু যে কাউকে বিপথগামী করার জন্য যথেষ্ট। ক্রীড়াবিদদের জীবনে যৌন কেলেঙ্কারি তাই নতুন কিছু নয়। ক্রীড়াঙ্গনের বড় রুই-কাতলাদের মধ্যে কাকে ঘিরে এই অভিযোগ ওঠেনি? জন টেরি থেকে কোবি ব্রায়ান্ট কিংবা টাইগার উডস থেকে শেন ওয়ার্নপ্রায় সবাই এ অভিযোগে দুষ্ট। অবিবাহিত হলে একাধিক সম্পর্কে জড়ানোর ব্যাপারটি এখন আর কেউ তেমন গুরুতর ব্যাপার হিসেবে দেখে না। কিন্তু ঘরে বউ রেখে বাইরে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে নিস্তার নেই। বিশ্বাস হচ্ছে না? জিজ্ঞেস করুন, টাইগার উডস কিংবা হালের মোহাম্মদ শামিকে। স্ত্রীর গুরুতর অভিযোগে ভারতীয় পেসারের সংসার এখন টালমাটাল। শামির নাকি বিবাহবহির্ভূত একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক! এমন ঘটনা নতুন নয়। আসুন জেনে নিই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন যেসব ক্রীড়াবিদ: টাইগার উডস যুক্তরাষ্ট্রের সুপার মার্কেট ট্যাবলয়েড ন্যাশনাল এনকুয়ারার ২০০৯ সালে অভিযোগ তোলে, নিউইয়র্কের এক নৈশক্লাব মালিকের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে সর্বকালের অন্যতম সেরা এ গলফারের। টাইগার শুরুতে এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও ওই বছরের ২৭ নভেম্বর গাড়ি দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে গিয়ে একে একে বেরিয়ে আসে পর্নো স্টার থেকে নৈশক্লাব মালিকসহ বেশ কয়েকজন নারীর সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্কের তথ্য। পরিণামে স্ত্রী এলিন নর্দেগ্রেনের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে টাইগারের। একপর্যায়ে ২০১০ সালে তাঁদের দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ঘটে। টাইগারের কিন্তু এরপরও সুমতি ফেরেনি। যৌনতা যে তাঁর নেশা, তা স্বীকার করেছেন নিজেই। হলিউড অভিনেত্রী মিশেল ব্রাউন থেকে সাবেক এক নম্বর নারী গলফার লিন্ডসে ভনকেও পটিয়েছেন টাইগার। এরপর তো গলফার বন্ধু ডাফনারের সাবেক স্ত্রী আর্মান্ডা বয়েডের সঙ্গেও মজেছেন টাইগার। মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন কবজির মোচড়ে তাঁর ব্যাট যেমন তুলি হয়ে উঠেছে, তেমনি মনের মোচড়ে আজহারউদ্দিনের প্রেমিকরূপও পাল্টেছে। ভারতের সাবেক এ অধিনায়ক ২৪ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন ১৬ বছর বয়সী নৌরিনকে। তত দিনে খ্যাতিমান আজহারউদ্দিনের চরিত্রের ছিদ্রপথ দিয়ে একদিন কেউটে ঢুকল তাঁদের সংসারে। ১৯৯৪ সালে এক বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে আজহারের পরিচয় ঘটে মিস ইন্ডিয়া ও বলিউড অভিনেত্রী সংগীতা বিজলানির সঙ্গে। সেই পরিচয় ধীরে ধীরে রূপ নেয় পরকীয়ায় এবং তার ঢেউ আছড়ে পড়ে আজহারের সংসারে। ১৯৯৬ সালে ভেঙে যায় আজহার-নৌরিনের নয় বছরের দাম্পত্য জীবন। ওই বছরই সংগীতাকে বিয়ে করেন আজহার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গুজব রটেছিল, অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার কারণেই নাকি আজহারকে বিয়ের জন্য চাপ দিয়েছিলেন সংগীতা। ১৪ বছর পর ভেঙে যায় আজহারের এই দ্বিতীয় সংসারও। সংবাদমাধ্যমের মতে, এবারও তার কারণ এক নারী, ভারতের ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় জোয়ালা গাট্টা। বিবাহিতা এই খেলোয়াড়ের সঙ্গে আজহার নাকি প্রমোদভ্রমণেও গিয়েছেন বিদেশে। ২০১০ সালে বিচ্ছেদ ঘটে আজহার-সংগীতার দাম্পত্যের। জন টেরি থ্রি লায়ন্সদের জার্সিতে যত দিন খেলেছেন, তত দিন ছিলেন রক্ষণভাগের দেয়াল হয়ে। কিন্তু জন টেরির নিজের চরিত্রেই ফুটো ছিল। সেই ছিদ্রপথ দিয়ে টেরি পরকীয়ার সম্পর্ক ফেঁদেছিলেন ক্লাব ও জাতীয় দলের সাবেক সতীর্থ ওয়েন ব্রিজের সাবেক বান্ধবী ভ্যানেসা পেরোনসেলের সঙ্গে। প্রায় চার মাস টিকেছে দুজনের সম্পর্ক। এই অল্প সময়েই তাঁদের সম্পর্ক বেশ রসের জোগাড় করেছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে। দুই সন্তানের পিতা টেরিকে এ জন্য ইংল্যান্ড ফুটবল দলের নেতৃত্বও খোয়াতে হয়েছিল। কোবে ব্রায়ান্ট নিঃসন্দেহে সর্বকালের অন্যতম সেরা বাস্কেটবল খেলোয়াড়। আবার মেয়ে পটানোর ক্ষেত্রে ভীষণ প্রতিভাবানও। তাঁর স্ত্রী ভ্যানেসা ব্রায়ান্ট একাধিকবার স্বামীকে হাতেনাতে ধরেছেন। ২০১১ সালে তাঁকে সর্বশেষ বার হাতেনাতে ধরার পর বিবাহবিচ্ছেদের কাগজপত্রও জমা দিয়েছিলেন ভ্যানেসা। টাইগার উডসের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ফাঁস করে দেওয়া ট্যাবলয়েড ন্যাশনাল এনকুয়ারার তখন জানিয়েছিল, গত ১০ বছরে প্রায় ১০০ মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন ব্রায়ান্ট। কিন্তু ১৮ বার অল স্টার তালিকায় জায়গা করে নেওয়া এ বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের সংসার এরপরও ভাঙেনি। ২০১৩ সালে ভ্যানেসা জানান, বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি সরে এসেছেন। দুজনে একসঙ্গে নতুন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন। এরপর অবশ্য ব্রায়ান্টের রমণীমোহন স্বভাবের অগ্রগতি নিয়ে আর কিছু জানা যায়নি। রায়ান গিগস তাঁর প্রজন্মের অন্যতম সেরা ফুটবলার। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তি। রায়ান গিগসনামটা শুনলেই ফুটবলপ্রেমীদের মনে শ্রদ্ধা জাগাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাঁর ভাই রদ্রির মনে গিগসকে নিয়ে কোনো শ্রদ্ধা ছিল না। স্ত্রীর সঙ্গে ভাই পরকীয়ায় জড়ালে শ্রদ্ধা কি থাকে? রদ্রি ঠিক এই আগুনেই পুড়েছেন দীর্ঘ আট বছর। তাঁর বউ নাতাশার সঙ্গে দীর্ঘদিন পরকীয়া ছিল গিগসের। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার চার বছর পর ভাইয়ের কাছে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন গিগস। অথচ পরকীয়ায় মত্ত থাকাকালীন গিগসের ঘরে বউ ছিল। দীর্ঘদিনের বান্ধবী স্ট্যাসি কোকেকে ২০০৭ সালে বিয়ে করেছিলেন সাবেক এ মিডফিল্ডার। কিছুদিন আগে তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটেছে। সূত্র: প্রথম আলো আর/১০:১৪/০৯ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2p0qGTM
March 10, 2018 at 04:36AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন