কলকাতা, ১৬ মার্চ- রাত পোহালেই মেয়ের চার হাত এক হওয়ার কথা ছিল৷ একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা৷ সাধ্যের বাইরে গিয়ে তাই চড়া সুদে টাকা ধার করে বিয়ের তত্ত্ব থেকে শুরু করে সোনার গহনা, শাড়ি- আরও কত কি কিনেছিলেন গরিব মা৷ আত্মীয় সজ্জন থেকে পাড়া প্রতিবেশীদেরও নিমন্ত্রণ করা হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু এক লহমায় সব পুড়ে ছাড়খাড়৷ মেয়ের বিয়ে তো দূরস্ত, ভয়াবহ আগুন যে কেড়ে নিয়েছে মাথার ওপরের ছাদটাও৷ সানাইয়ের সুরের বদলে এখন বাড়ি জুড়ে শুধুই পোড়া গন্ধ৷ অগত্যা অঝোরে কেঁদে চলেছে মা, মেয়ে৷ হবে নাই বা কেন৷ সব স্বপ্ন যে শেষ হতে বসেছে৷ কি করে মেয়ের বিয়ে দেবেন, ভেবে কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না অসহায় জননী৷ ঘটনাস্থল, কলকাতার আর্মেনিয়ান ঘাট৷ পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে রেললাইন৷ সেখানকার বস্তিতেই মা-মেয়ের বাস৷ বাড়ির অদূরেই কেমিক্যাল গোডাউন৷ বৃহস্পতিবার সকাল ১১-৪৫৷ আচমকায় গোডাউনে আগুন লাগল। দাবানলের মতো সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ল লাগোয়া বস্তিতে। ৭০ টি পরিবার বসবাস৷ ঘরগুলিতে নিমিষের মধ্যেই আগুন লেগে গেল৷ কিছু বোঝার আগেই সব শেষ৷ ঘরগুলোর মতোই নিমেষে অথৈজলে পড়ল আয়েশার জীবন৷ রাত পোহালেই যে তার নিকাহ৷ বিয়ের জন্য আত্নীয়স্বজনরা একে একে বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন। বিকেল গায়ে হলুদ হবে, হাতে লাগবে মেহেন্দি। আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের পাশে মমতা ব্যানার্জী, পশ্চিমবঙ্গের আশ্রয় নিচ্ছে রোহিঙ্গারা কিন্ত বিধাতা যে এমন কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছেন তা ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারেননি আয়েশার মা সাবিনা বিবি৷ আগুনের মাঝেই চেষ্টা করেছিলেন বাড়ি থেকে মেয়ের বিয়ের তত্ত্ব, গহনা, শাড়ি বার করতে৷ কিন্তু অগ্নি দেবতা সে সুযোগ দেননি৷ ফলে মা-মেয়ে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে দেখল কিভাবে তাদের ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে গেল৷ অগত্যা, ছাউনিহীন পোড়া ঘরের মধ্যে অঝোরে কেঁদে চলেছে মা-মেয়ে। সব হারিয়ে কান্নায় যে তাঁদের সম্বল৷ কি হবে, কোথায় যাবে ? এই বিপদে কে তাদের পাশে দাঁড়াবে? এই সব ভেবে কুল পাচ্ছেন না আয়েশার মা। নতুন জীবন শুরু করার আগেই আগুনে যে শেষ করে দিল একমাত্র মেয়ের জীবন৷ তথ্যসূত্র: কলকাতা২৪৭ এআর/১১:৩০/১৬ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2GBYZJD
March 16, 2018 at 05:29PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন