১৫ লাখ টাকাসহ ধরা পড়ল পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষার জালিয়াত চক্রের ৮ সদস্য

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশের কন্সটেবল নিয়োগ পরীায় অন্যের হয়ে পরীক্ষা দিতে আসা ৬ ‘প্রক্সি পরীক্ষার্থী’ আটকের পর এবার ধরা পড়ল পরীক্ষার জালিয়াত চক্রের হোতাসহ ৮জন। জালিয়াত চক্রের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রক্সি পরীক্ষার্থীর সাহায্যে লিখিত পরীক্ষায় দু’ পরীক্ষার্থীর অস্বাভাবিক নম্বর পাওয়াকে ঘিরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে এই জালিয়াত চক্র। পুলিশের দাবি জালিয়াত চক্রের মুল হোতাও আটক হয়েছে তাদের অভিযানে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিং এ জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে গেল ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ কন্সটেবল নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় উর্ত্তিণদের মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয় গত ৩ মার্চ। লিখিত পরীক্ষায় মেধানুসারে তৃতীয় স্থান অধিকারী চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের চৌকা গ্রামের শ্রী পবণ সিংহর ছেলে শ্রী ফুলচান সিংহ এবং সপ্তম স্থান অধিকারী একই উপজেলার ভুটিটোলার গাজরুল ইসলামের ছেলে আমিন আলীর অস্বভাবিক নম্বর পাওয়া এবং আশানরূপ উত্তর দিনে পা পারায় পুলিশের সন্দেহ হয়।
তিনি জানান সন্দেহের কারণে পুলিশ কৌশলে তাদের হাতের লেখা সংগ্রহ করে লিখিত পরীক্ষার খাতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে গিয়ে ধরা পরে যে তারা লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেনি। তাদের হয়ে অন্যজন পরীক্ষায় অংশ নেন।
প্রেক্ষিতে ফুলচান ও আমিনকে আটকের মধ্যমে সন্ধান পায় জালিয়াত চক্রের এবং বেরিয়ে আসে জালিয়াতি কার্যক্রমের চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফুলচানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ প্রথমে আটক করে জালিয়াত চক্রের সদস্য চৌকা গ্রামের আবু বাক্কার সিদ্দিকের ছেলে আবদুস সালাম ও তার ভাই মনিরুল ইসলাম। সালাম ও মনিরুলের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ধরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার মসজিদ পাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য তাজেরুল বেগম।
তিনি জানান লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগের ব্যবস্থার করার কথা বলে তাজেরুল ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পুলিশ তাজেরুলকে আটকের সময় তার বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকা জব্দ করে।
এদিকে এঘটনায় তাজেরুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ধরা পড়ে জালিয়াত চক্রের আরেক সদস্য পুকুরিয়া গ্রামের মৃত তছির উদ্ধীনের ছেলে আনোয়ার হোসেন মাষ্টার এবং চক্রের মুলহোতা রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সাহাপুরের সেতু ম-ল ও তার সহযোগি শেরপুরের নকলা উপজেলার পাঠাকাটা গ্রামের মোকারম হোসেন। আনোয়ার মাস্টারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
পুলিশ জানায় আনোয়ার মাস্টার চক্রের মুলহোতা সেতু মন্ডলকে দিয়ে জালিয়াতি কার্যক্রম করতো।
পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বগুড়ার শহরের জয়পুরপাড়ার মাটিডালি বাজার এলাকার একটি বাড়ি থেকে সেতু ও মোকারমকে আটক করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান ৬ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য বগুড়ার কন্সটেবল নিয়োগ পরীক্ষাতেও জালিয়াতির তারা প্রস্ততি নিচ্ছিল।  চক্রটি টাকার বিনিময়ে চাকরি প্রার্থীর পরিবর্তে মেধাবী অন্য কাউকে লিখিত পরীায় অংশ গ্রহণ করিয়ে আসছিল।
এঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পুলিশের নিয়োগের লিখিত পরীায় অন্যের হয়ে অংশ নেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ ৬ জনকে আটক করে পুলিশ। রাতে আটককৃতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপার্দ করা হলে আদালতের বিচারক প্রত্যেককে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ০৫-০৩-১৮


from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2FUXzsZ

March 05, 2018 at 10:38PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top