তোছিগি, ০৬ মার্চ- পিঠা বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধান কাটা উৎসবে কৃষকের ঘরে যখন নতুন ধান ওঠে, সেই ধান ঢেঁকিতে ভেঙে তৈরি হয় নানারকম পিঠা। অগ্রহায়ণের নতুন চালের পিঠার স্বাদ সত্যিই বর্ণনাতীত। পিঠা খেতে ভালোবাসেন না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। প্রবাসের কর্মময় জীবনে পিঠা খাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না। প্রবাসীদের পিঠা খাওয়ার এই অতৃপ্তি কিছুটা দূর করতে ৪ মার্চ রোববার জাপানের আশিকাগা সিটিতে সুইয়ামা লুবনার উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এক বর্ণাঢ্য পিঠা উৎসবের। তাঁকে সার্বিক সহযোগিতা করেন নোমান সৈয়দ, নার্গিস আইরিন ও শফিকুল আলম। পিঠা উৎসবের স্পনসর ছিলেন মাইনুল ইসলাম, যিনি দিদার কচি নামেই বেশি পরিচিত। বিভিন্ন শহরের ৬০ পরিবারের প্রায় ২৫০ জন সদস্য এই পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। পিঠা উৎসবটি জাপানের কানতো অঞ্চলের বাঙালির এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। নারীদের পরনে ছিল বসন্তের শাড়ি ও পুরুষদের পরনে ছিল বাঙালির প্রিয় পোশাক পাঞ্জাবি। মধ্যাহ্ন ভোজনে ছিল হাতে তৈরি মজাদার ভর্তার সমাহার। উল্লেখযোগ্য ভর্তার মধ্যে ছিল খুরি ভর্তা, নিরা ভর্তা, আলু ভর্তা, ধনিয়া পাতার ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, বেগুন ভর্তা, মিষ্টি কুমড়া ভর্তা, মাছ ভর্তা, ক্যাপসিকাম ভর্তা, ব্রকলি ভর্তা, তিল ভর্তা, চাপা শুঁটকির ভর্তা, ডাল ভর্তা। সঙ্গে আরও ছিল চিংড়ি শুঁটকি রান্না, চপ, চিকেন কোর্মা ও গরুর মাংসের ভুনা। মধ্যাহ্ন ভোজের পরে ছিল নোমান সৈয়দ ও শফিকুল আলমের পরিচালনায় দ্বিতীয় পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন কাপলস গেমস। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল নিত্য শিল্পী পুজার নাচ। পুজার মন মাতানো নাচ সবার মন জয় করে নেয়। অন্যান্যের মধ্যে নার্গিস-শফি জুটি, সুমনা-সোহাগ জুটি, নাইম-ঊষা জুটি, সোমা-শাহিন জুটি, মাচিইয়ামা-ইব্রাহিম মুনা ও শাম্মি-বাবলির গান দর্শকেরা দারুণ উপভোগ করেন। কাপলস গেমসে বউদের টিপ পরানো খেলায় আকর্ষণীয় পুরস্কার তিনটি জিতে নেন রাখী দম্পতি, শাম্মি দম্পতি ও মুন দম্পতি। উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ পিঠা প্রতিযোগিতায় বিচারকদের রায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন জেসমিন সুলতানা কাকলি। তিনি তৈরি করেন বিবিখানা পিঠা কেক। প্রথম রানারআপ ও দ্বিতীয় রানারআপ নির্বাচিত হন সুইয়ামা লুবনা ও ইওয়াতা রুমি। তাঁরা তৈরি করেন যথাক্রমে হৃদয়হরণ পিঠা ও বিন্ধানি পিঠা। বিচারক প্যানেল ছিলেন জাপানের সবার পরিচিত মুখ দিদার কচি, সর্বজন শ্রদ্ধেয় রেণু আজাদ, লেখক-সাংবাদিক কাজী ইনসানুল হক ও ড্যাফোডিল একাডেমির পরিচালক মাচিইয়ামা ইব্রাহিম মুনা। পিঠা প্রতিযোগিতার বিশেষ তিনটি পুরস্কার জিতে নেন নার্গিস আইরিন, তানজিনা সেবু ও রুমানা সুহান সোমা। বিকেলে শুরু হয় ৪০ রকমের পিঠা উৎসবের মূল আকর্ষণ পিঠা ভোজন। উল্লেখযোগ্য পিঠার মধ্যে ছিল ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, হৃদয়হরণ পিঠা, পানতোয়া পিঠা, বিবিখানা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, মুগপাকন নকশি পিঠা, পিঠা, বিন্ধানি পিঠা, দুধ চিতই পিঠা, ফুলঝুড়ি পিঠা, নুনাস পিঠা, চাপা পিঠা, তেলের পিঠা, ক্ষীর পিঠা, কিমা ফুলি পিঠা, নারিকেলের পাকন পিঠা, সেমাই পিঠা, দোল্লা পিঠা ও লস্করা পিঠা। মিষ্টান্নর মধ্যে ছিল সাদা চমচম, ফ্রুট ডেজার্ট ও মিষ্টি দই। ঝাল আইটেমের মধ্যে ছিল ডালপুরি ও হালিম। অনুষ্ঠানে কাজী ইনসানুল হকের নতুন বই দূর পরবাস জাপান উপস্থিত সকলের কাছে তুলে ধরেন সানি ভাই। উৎসবে সবার পক্ষ হতে এত চমৎকার একটি আয়োজনের জন্য সুইয়ামা লুবনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং ভবিষ্যতেও এই ধরনের আয়োজনের অনুরোধ করেন পরম শ্রদ্ধেয় মুনশি আজাদ। সূত্র: প্রথম আলো আর/০৭:১৪/০৬ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2D2vRaY
March 06, 2018 at 01:49PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন