ক্যারিবীয় ঝড়ের প্রত্যাশায় ছিল ইডেন গার্ডেন। প্রত্যাশা মিটলেও তাতে কলকাতার দর্শকদের খুশি হওয়ার কিছু নেই। ঝড়টা যে তাঁদের ওপর দিয়েই গেছে! আন্দ্রে রাসেল নন, ঝড় তুলেছেন ক্রিস গেইল, কলকাতারই সাবেক খেলোয়াড়। লোকেশ রাহুলের নীরব ঝড়টা বুঝি গেইলের জন্যই তাঁরা সেভাবে টের পাননি? টেকনিক-নির্ভর ব্যাটসম্যান হওয়ায় রাহুলের চার-ছক্কায় গেইলের মতো নির্মমতা নেই। তবে সৌন্দর্য আছে। কলকাতার ৭ উইকেটে ১৯১ রান তাড়া করতে নেমে শুরু করেছিলেন ইনিংসের প্রথম দুই বলেই চার মেরে। পরের ওভারের প্রথম দুই বলেও ফলাফল একই। সে তুলনায় গেইলের শুরুটা ছিল ঘুমন্ত। প্রথম ওভারে ৩ বল খেলে রান পাননি। ৩ ওভারে শেষে দলীয় স্কোর যখন ৩৯, রাহুল তখন ৮ বলে ২৫ আর গেইল ১০ বলে ১৩! আন্দ্রে রাসেলের পরের ওভারে একাই ১৭ রান নিয়ে গেইল ঝড়ের পূর্বাভাস দিলেও বাধ সেদে বসে বৃষ্টি। ইডেনের আকাশ থেকে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামার আগে ৮.২ ওভারে পাঞ্জাবের স্কোর ৯৬। বেরসিক বৃষ্টি হানা দিয়ে না বসলে মোহালির পর আজও হয়তো গেইল-ঝড় রূপ নিত সাইক্লোন-এ। বৃষ্টির জন্য ছোট হয়ে আসে ম্যাচের দৈর্ঘ্য। জয়ের জন্য ১৩ ওভারে ১২৫ রানের লক্ষ্য পায় পাঞ্জাব। অর্থাৎ ২৮ বলে ২৯ রান দরকার ছিল দলটির। গেইল ও রাহুল এই লক্ষ্যকে মামুলি বানিয়ে ছেড়েছেন। ১০ম ওভারের চতুর্থ বলে রাহুল যখন আউট হন, জয়ের জন্য পাঞ্জাব তখন ১৯ বলে মাত্র ১০ রানের দূরত্বে। তার আগে গেইল শুরু করেন বৃষ্টির নামার সময় ঠিক যেখানে থেমেছিলেন। বৃষ্টি নামার আগে নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরেছিলেন গেইল। বৃষ্টি থামার পর শুরু করেন সেই ছক্কা মেরেই! ১২তম ওভারের প্রথম বলে ম্যাচটা শেষও করেছেন ছক্কা মেরে। ডি/এল নিয়মে ১১ বল হাতে রেখেই ৯ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাঞ্জাব। আইপিএলে এ পর্যন্ত তিন ম্যাচে গেইলের স্কোর ৬৩, ১০৪* ও ৬২*। এর মধ্যে শেষ ইনিংসটা খেলেছেন ৩৮ বলে, ৬ ছক্কা ও ৫ চারে। ২৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেছেন রাহুল। ২ ছক্কা ও ৯ চারে সাজিয়েছেন ইনিংসটি। গেইল-রাহুল জুটি প্রথম ৮ ওভারের মধ্যে শুধু ৩টি ওভারে দশের নিচে রান নিয়েছেন। বাকি ৫ ওভারেই তাণ্ডব চলেছে। গেইল যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরি ইডেনেও অনূদিত হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকত না। কিন্তু বৃষ্টি সেই আশায় জল ঢেলে দিলেও পাঞ্জাবের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠা কেউ ঠেকাতে পারেনি। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা কলকাতার আক্ষেপ হতে পারে দুই শ রানের কোটা ছুঁতে না পারা। দ্বিতীয় ওভারে সুনীল নারাইনকে হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে ৪১ বলে ৭২ রানের জুটি গড়ে রবিন উথাপ্পা-ক্রিস লিন জুটি। অধিনায়ক দিনেশ কার্তিকের সঙ্গেও চতুর্থ উইকেটে ৩৪ বলে ৬২ রানের জুটি গড়েন লিন। ৪১ বলে ৭৪ রান করেন অস্ট্রেলিয়ার এ ব্যাটসম্যান। আরও পড়ুন:এবার কলকাতায় গেইল ঝড় ১৫ ওভার শেষেও কলকাতার স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৪৬। কিন্তু শেষ ৩০ বলে মাত্র ৪৫ রান নিতে পেরেছে দলটি। পাঞ্জাবের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন অ্যান্ড্রু টাই ও বারিন্দর স্রান। শেষ দিকে তাঁদের অাঁটসাঁট বোলিংয়ে কলকাতার দুই শ ছোঁয়া হয়নি। অবশ্য বৃষ্টি নামার আগে গেইল-রাহুল মিলে নাইটদের দুই শ ছুঁইছুঁই স্কোরকেই নামিয়ে আনছিলেন সাধারণের কাতারে। বৃষ্টি তাঁদের বারুদ ভিজিয়ে দেয়। তবে এবারের আইপিএলে গেইল বুড়িয়ে গেছেন বলে যে রব উঠেছিল, মোহালির সেঞ্চুরিতে তা থামলেও ইডেনেও মারমুখী দেখায় কথাটা এখন উঠতেই পারেকে বলেছিল ঘুমন্ত গেইলকে জাগাতে! সূত্র: প্রথম আলো এমএ/ ১১:০০/ ২২ এপ্রিল



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2F71PUm
April 22, 2018 at 05:11PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top