বিশ্বনাথে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রীকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা

0310বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: মারামারির ঘটনায় বিশ্বনাথে উপজেলা সদরস্থ ‘হাজী মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ’র ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী লাভলী আক্তার খাদিজা ওরফে লাভলী বেগম’কে বয়স বৃদ্ধি করে মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। একই ঘটনায় সোমবার দিবাগত গভীর রাতে (আনুমানিক ৩টার দিকে) নারী পুলিশ ছাড়াই বিশ্বনাথ থানার এসআই নবী হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ স্কুল ছাত্রীর মা নিলুফা বেগমকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, মামলা রেকর্ড করার পূর্বেই নিলুফাকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। রাতের আধাঁরে নিলুফাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসার পর বাদী পক্ষের লোকজন আসামী পক্ষের বসতঘরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাংচুর করেছে। পূর্ব তদন্ত ছাড়াই মামলা রেকর্ড করার কারণে ২০০৩ সালের ৫ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করা (১৬ বছরে পা দেওয়া) লাভলী আক্তার খাদিজা’র বয়স বাদীর লিখিত অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে ২০ বছর ও থানা পুলিশের প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে লেখা হয়েছে ২১ বছর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শিমুলতলা (মোড়াবাজার) গ্রামের ছোরাব আলী গং ও আকবর মিয়া গংদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পূর্ব হইতে বিরুধ চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৫ মার্চ সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ছোরাব আলী, তার পুত্র মিলাদ হোসেন ও ভাতিজা দেলোয়ার হোসেন রক্তাক্ত জখম’সহ গুরুত্বর আহত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হইয়া চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
এঘটনায় ছোরাব আলী বাদী হয়ে আকবর মিয়ার পুত্র সুমন মিয়া (২২)’কে প্রধান অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ০২ (তাং ২.০৪.২০১৮ইং)। মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- আকবর মিয়া, তার কন্যা লাভলী বেগম ওরফে লাভলী আক্তার খাদিজা ও স্ত্রী নিলুফা বেগম।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ২৫ মার্চ সকালে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযুক্তরা বাদী (ছোরাব)’কে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে তার (ছোরাব) উপর হামলা করেছে। বাদীর আর্ত-চিৎকারে তার (ছুরাব) পুত্র মিলাদ হোসেন ও ভাতিজা দেলোয়ার হোসেন তাকে বাঁচাতে ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা তাদের উপরও হামলা করে। অভিযুক্তদের হামলায় ৩ জনই গুরুত্বর আহত হন।
আকবর মিয়ার পুত্র হুসাইন আহমদ বলেন, মহিলা পুলিশ ছাড়াই গভীর রাতে আমার মাকে (নিলুফা) গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। সাথে আমার ছোট (মোস্তাকিম) ভাইও ছিল। পুলিশ যাওয়ার পর তারা (বাদী পক্ষ) আমাদের ঘরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও বসতঘর ভাংচুর করেছে।
ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও বসতঘর ভাংচুরের কথা অস্বীকার করে ছোরাব আলীর পুত্রবধু শাহীনা বেগম বলেন, আমরা আমাদের রোগীদের চিকিৎসা করানো হয়ে ব্যস্থ। হামলা করেছে তারা, এখন আমাদেরকে দোষী করতেই আমাদের উপর একর পর এক মিথ্যা অভিযোগ করছে।
বিশ্বনাথ থানার এসআই নবী হোসেন বলেন, নারী পুলিশ সাথে নিয়েই অভিযুক্ত নিলুফা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্কুলে গিয়ে লাভলীর বয়স যাছাই করে ও তদন্ত সাপেক্ষে বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারী পুলিশের স্বল্পতা থাকায়, প্রয়োজন বোধে নারী পুলিশ ছাড়াই সালিনতার সাথে যেকোন নারী অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার বিধি রয়েছে দাবি করেন বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, তাকেও (নিলুফা) সালিনতার সাথেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় তার সাথে একটি শিশু বাচ্চাও ছিল। স্কুল ছাত্রী লাভলীর ব্যাপারে তিনি বলেন, তদন্তে যদি প্রমান হয় সে অপরাধের সাথে জড়িত আছে তবে বিধি অনুসারে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে আর যদি প্রমান হয় সে নির্দোষ তবে চার্জশীটে তার (নিলুফা) নাম বাদ দেওয়া হবে।
এব্যাপারে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, কোন নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে, তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে। তবে নারীকে গ্রেপ্তারের সময় নারী পুলিশ থাকাটা সমিচিন। কোন শিশু বা অপ্রাপ্ত বয়সের কেউ মামলায় অভিযুক্ত হলে ও তদন্তে যদি অপরাধ প্রমানিত হয় তবে শিশু আইনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ https://ift.tt/2Jn3BnF

April 05, 2018 at 12:52PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top