ঢাকা, ০৬ মে- বাংলাদেশের শতাধিক প্রেক্ষাগৃহে ২৭ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্র চালবাজ। ভারতীয় পরিচালক জয়দীপ মুখার্জির এই ছবিটি আমদানি করেছে বাংলাদেশের এন ইউ ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আমদানি প্রতিষ্ঠানের দাবি, দ্বিতীয় সপ্তাহে চালবাজ ছবির প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা বেড়েছে। ছবিটির প্রতি দর্শক আগ্রহ বেড়ে যাওয়ার কারণেই এমনটা হয়েছে। এই ছবি আর অন্যান্য প্রসঙ্গে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেছেন শাকিব খান। চালবাজ বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে। কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি দেখার জন্য লম্বা লাইন আর কালোবাজারে টিকিট বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম, চালবাজ দেখতে দর্শক আগ্রহী হবেন। কিন্তু প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের উপচে পড়া ভিড়ের ছবি, টিকিটের জন্য হাহাকার, কালোবাজারে টিকিট বিক্রিএগুলো দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি। ছবিটি নিয়ে কোনো প্রচারণা চালাতে পারেনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। মুক্তির তিন দিন আগে ছবিটি ছাড়পত্র পায়। শুনেছি তাড়াহুড়োর কারণে সারা দেশে ঠিকমতো পোস্টারও লাগাতে পারেনি। এরপরও দর্শক যেভাবে প্রেক্ষাগৃহে ছুটে গেছেন, তা দেখে আমি বিস্মিত। দেশের চলচ্চিত্রপ্রেমী দর্শকের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তাঁরা আছেন বলেই ছবিতে অভিনয় করি। তাঁরাই আমাকে সব সময় সাহস আর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। চালবাজ ছবির আগে আমদানি নীতিমালায় আরও কয়েকটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। চলচ্চিত্রের সেন্সর বোর্ডে সেসব ছবির ছাড়পত্র নিয়ে এত জটিলতা দেখা যায়নি। কিন্তু আপনার ছবির ক্ষেত্রে এমনটা কেন হয়েছে? আমারও তা-ই মনে হয়েছে। খুব ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন, শুরুর দিকে ছবিটি বাংলা নববর্ষে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সূত্রে জেনেছি, কেউ কেউ নাকি ছবিটি ওই সময় মুক্তির ব্যাপারে আপত্তি জানায়। মুক্তির আগে ছবিটির ছাড়পত্র পাওয়ার ব্যাপারে বাঁধা তৈরি করা হয়। চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনেছি, শাকিব খানের ছবি মুক্তি পেলে নাকি কে বা কারা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আরও কত কাহিনি! শেষ দুই বছর চলচ্চিত্রের গুটি কয়েক মানুষের কার্যক্রম দেখে আমার মনে হয়, আমার ছবি মুক্তিতে তাদের যত অ্যালার্জি। দেখে মনে হয়, আমাকে এ দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে! তা না হলে আমার কোনো ছবি মুক্তি পাওয়ার সময় কেন এত প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হবে? কিন্তু দেশের বাইরে আপনার দাপুটে বিচরণে চলচ্চিত্রের অনেকেই গর্বিত। আমি তো সবার কথা বলিনি, বললাম গুটি কয়েক মানুষের কথা। চলচ্চিত্রপ্রেমীরা কখনোই আমার কাজ নিয়ে বাধা তৈরি করছে না। আমার কাজ দর্শক লুফে নিচ্ছেন, এটি কারও মাথাব্যথার কারণ হয়ে থাকলে আমার কী করার আছে। এখন কেউ যদি ভাবে, তারা ব্যস্ত না, আমি কেন এত ব্যস্ত থাকবএটা ভুল। দেশের মানুষের তিল তিল ভালোবাসা আমাকে শাকিব খান বানিয়েছে। আমি এখন বাংলাদেশের শুভেচ্ছাদূত হয়ে দেশের বাইরে কাজ করছি। কোথায় আমাকে সমর্থন করবে, তা না, উল্টো আমার যত কাজ তাতে বাধা দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। আমার বিরুদ্ধে আগেও নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে, দর্শক আমাকে সমর্থন করে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দিয়েছেন। দর্শকদের সমর্থন নিয়ে সামনের দিনগুলোতেও সব বাধা অতিক্রম করব। আশা করি, আমার পথচলায় দেশের চলচ্চিত্রপ্রেমী সব প্রযোজক, পরিচালক, নায়ক-নায়িকা আর কলাকুশলীরা পাশে থাকবেন। আমাকে যত ঈর্ষা করা হোক না কেন, দর্শক কিন্তু বরাবরই আমার কাজের স্বীকৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। চালবাজ ছবির প্রতি দর্শকের আগ্রহ তা আবারও প্রমাণ করেছে। আপনার সম্মানী নিয়ে ইদানীং কথা হচ্ছে। তাঁদের মতে, আপনার সম্মানী অনেক বেড়ে গেছে? ভালো মানের ছবি বানাতে গেলে ভালো বাজেট অবশ্যই লাগবে। আমি তো তার বাইরের কেউ না। আমাকে নিয়ে ছবি তৈরি করতে হলে ভালো বাজেট লাগবে। ছবি বানানোর জন্য অনেক প্রযোজক-পরিচালক যোগাযোগ করেন, কিন্তু পেশাদার প্রযোজক তেমন পাই না। নাম কামানোর জন্য ছবিতে সাইন করার দিন এখন নেই। অপেশাদার প্রযোজকেরা ভালো কাজের ব্যাপারে তেমন আন্তরিক হন না। এখন ভালো ভালো ছবিতে কাজ করতে চাই, যেখানে বেশি বাজেট থাকবে, ভালো গল্প আর চরিত্র থাকবে, সেসব ছবি করতে চাই। এমনকি যেসব ছবিতে কাজ করছি, চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি, প্রতিটি ছবির বাজেট কয়েক কোটি টাকা। পারিশ্রমিকও সম্মানজনক। প্রতি ছবিতে এখন কত পারিশ্রমিক নিচ্ছেন? শুনলাম ৬০ লাখ, আবার শুনছি ৭০ লাখ টাকা? পারিশ্রমিকের বিষয়টা বলা খুব জরুরি? থাক না কিছু বিষয় গোপন। তবে সবাইকে বলে রাখি, গল্প পছন্দ হলে এবং ভালো প্রোডাকশন পেলে পারিশ্রমিক গুরুত্বপূর্ণ হবে না। তা ছাড়া আমি কিন্তু এখন ছবির সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি। আগের মতো বছরে ১০-১২টা ছবি করার পক্ষপাতী নই। আমি চাই, নতুন নায়ক-নায়িকাদের ব্যস্ততা বাড়ুক। সামনে ঈদ। এবার আপনার কয়টা ছবি মুক্তি পাবে? আমার কাজ ছিল ছবির শুটিং শেষ করতে হবে। তা আমি করেছি এবং করছি। এর মধ্যে শুনেছি, তিনটি ছবি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন প্রযোজক আর পরিচালকেরা। ছবিগুলো হলো চিটাগাংইয়া পোয়া নোয়াখাইল্লা মাইয়া, সুপার হিরো ও ভাইজান এল রে। গত সপ্তাহে কলকাতায় কেন গিয়েছিলেন? শুটিং নয়, ভাইজান এল রে ছবির ডাবিং করতে গিয়েছিলাম। পুরো কাজ শেষ। এ সপ্তাহে আবার কলকাতায় যেতে হবে। এবার কোন ছবির কাজ করবেন? ছবির নাম মাস্ক। এই ছবির শুটিংয়ের জন্য ৭ মে কলকাতায় যেতে হবে। টানা ১০ দিন অথবা তারও বেশি দিন শুটিং করতে হবে। দেশে কোন ছবির শুটিং করছেন? ক্যাপ্টেন খান আর সুপার হিরো ছবির কিছু কাজ ছিল। ১ মে ঢাকায় ফিরে সেগুলোর কাজ করছি। আগামী অক্টোবরে তো আমার নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় ছবি প্রিয়তমার কাজ শুরুর ইচ্ছা আছে। ছবিটি পরের বছরের শুরুতে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এর মধ্যে আরেকটা ছবির পরিকল্পনাও চলছে। সূত্র: প্রথম আলো আর/০৭:১৪/০৬ মে



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/2HXyL3Y
May 06, 2018 at 02:33PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top